একটা স্নিগ্ধ কবিতা লিখতে বসে
শুরুতে গোলাপের প্রসঙ্গ আনতেই
কলম ভেঙে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুতে লাগল।
গোলাপের কথা লিখতেই কেন কলম ভেঙে যাবে,
কলমের ভেতর কোথা থেকে এলো রক্ত
আমি জানি না।
একটা স্বাপ্নিক গল্প লিখতে চেয়েছি।
নির্জন মধ্যদুপুর
একটা একলা পুকুর ঘাট
পাকা কাঁঠালের গন্ধে চারপাশ মো মো করবে
একটা কোকিল একসুরে গেয়ে যাবে গান।
লেখা শেষ করে চোখ বুলাতে গিয়ে দেখি—
খাতাজুড়ে ছড়িয়ে আছে একটা গ্রামের গল্প
যেখানে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন।
কান্না, আহাজারি আর হাহাকার ছাড়া
গল্পে আর কোনো দৃশ্যকল্প নেই।
ভাবনার নির্জন মধ্যদুপুর
একটা একলা পুকুর ঘাট
পাকা কাঁঠালের মো মো গন্ধ
দিনমান গেয়ে যাওয়া কোকিলের গান
কীভাবে যে আগুন হয়ে গেল আমি জানি না।
একটুকরো শান্তির জন্য আমি
হেঁটেছি পৃথিবীর প্রান্তরে প্রান্তরে।
ছায়াবীথি ভেবে যে গাছের তলায় একদিন ঘুমিয়ে পড়েছি,
ঘুম ভাঙতেই দেখি সেটা অজগর হয়ে আছে।
একটা জলাশয়ে এতো টলটলে স্বচ্ছ জল ছিল।
নিদারুণ তৃষ্ণায় আজলা ভরে নিতে গিয়ে দেখি,
জলের মধ্যে হাঁ করে আছে আস্ত কুমির।
আমি গোলাপ লিখতে গেলে রক্ত হয়ে যায়।
আমার স্বাপ্নিক গল্পে লেগে যায় আগুন।
আমাকে ছায়া দেওয়া গাছ অজগর হয়ে উঠে,
আমার তৃষ্ণার জলে হাঁ করে থাকে ক্ষুধার্ত কুমির।
তারপর আমি বুঝেছি—
পৃথিবীতে কোনো স্নিগ্ধ কবিতা নেই
কোনো স্বাপ্নিক গল্প নেই
কোনো ছায়া নেই, তৃষ্ণার জল নেই।
আমি আরও জেনেছি
শান্তির জন্য যুদ্ধ সর্বদা অনিবার্য।
গোলাপের স্পর্শ পেতে হলে
আমাকে গায়ে জড়াতে হবে শিরস্ত্রাণ।
.
( ২০২৫ সালের বইমেলায় প্রকাশিত আমার কাব্যগ্রন্থ ‘কথা বলো যয়তুন বৃক্ষ’ থেকে নেওয়া একটা কবিতা। কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে Sukun Publishing থেকে।)