📦━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
🖋️ গল্পের নাম: "অপূর্ণ চিঠি"
🎭 ধরণ: কষ্টের গল্প | ভাষা: বাংলা
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━📦
🍂 পর্ব ১: চিঠির খাম ভাঙার আগেই
রাত্রি তখন গভীর। শহরের কোলাহল থেমে গেছে, শুধু ছাদে টুপটাপ করে বৃষ্টির শব্দ। আনিস বসে আছে জানালার পাশে, হাতে একটা পুরনো চিঠির খাম।
খামের উপরে হালকা মলিন হাতে লেখা —
**"শ্রদ্ধেয় আনিস ভাই, একটিবার চোখ রাখবেন..."**
এই চিঠির লেখা দেখে বুকটা হঠাৎ যেন থেমে গেল।
কত বছর কেটে গেছে!
এই হাতের লেখা সে কোনোদিন ভুলতে পারেনি।
আনিস জানে, এই চিঠি খুললেই পুরনো কষ্টগুলো একে একে ঘুরে আসবে। কিন্তু খোলার আগেই তার নিজের সঙ্গে একটা মানসিক লড়াই শেষ করতে হবে।
📖 ফিরে যাই — ১০ বছর আগের এক বিকেলে।
২০০৭ সালের গ্রীষ্ম। বিকেলের রোদ নরম হয়ে এসেছে। গ্রামের মাঠে বাতাস খেলছে হালকা করে। দীপা তখন মাঠের শেষ মাথায় দাঁড়িয়ে, এক হাতে খাতা, অন্য হাতে কলম।
— “আনিস ভাই!”
— “হুম?”
— “আপনি না কখনো হাসেন না কেন?”
আনিস তাকায় না, শুধু উত্তর দেয়,
— “হাসি ভুলে গেছি।”
দীপা হেসে বলে,
— “তাহলে আমি মনে করিয়ে দেব। প্রতিদিন একবার হলেও হাসাবো আপনাকে!”
সেই শুরু...
প্রতিদিন স্কুলের পর দীপা আনিসের জন্য নিয়ে আসত হাসির কোনো কারণ — ছোট গল্প, ছড়া, নিজের বানানো রিমঝিম রাইম। আনিস বাইরে কিছু না বললেও ভেতরে ভেতরে দীপার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
কিন্তু সমাজ কি তা মানবে?
দীপা ছিল একজন স্কুলশিক্ষকের মেয়ে।
আর আনিস — হেডমাস্টার সাহেবের ছেলে।
এই ব্যবধানটাই ছিল দুই হৃদয়ের মাঝে অদৃশ্য প্রাচীর।
🌸 তবু সময়ের সাথে, বন্ধুত্ব গভীর ভালোবাসায় রূপ নেয়।
চিঠি আদান-প্রদান শুরু হয়। দীপার লেখা কবিতাগুলো আনিস রেখে দিত তার বইয়ের পাতায়।
একদিন দীপা এক চিঠিতে লিখল:
_“আনিস ভাই,
আপনাকে না বললে আমার সন্ধ্যা হয় না।
আপনার নীরবতা আমার ভিতরের সব শব্দকে থামিয়ে দেয়।”_
আনিস সেই চিঠি পড়ে সারারাত ঘুমোতে পারেনি।
তবু সে কিছু বলেনি।
কারণ সে জানত — তার বাবা চাইবে না সে দীপার সঙ্গে জীবন গড়ুক।
📆 এক বছর পর...
হঠাৎই একদিন আনিস শহরে চলে যায় উচ্চশিক্ষার জন্য।
একটি চিঠি রেখে যায় দীপার জন্য —
_“তোমার সব হাসির গল্পগুলো নিয়ে আমি শহরে যাচ্ছি।
যদি কখনো ফিরি — জানবে, আমি তোমাকে ভুলি নাই।”_
দীপার চোখের জল সেইদিন থামেনি।
⏳ সময় চলে যায়...
দশ বছর কেটে গেছে।
আনিস এখন শহরের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক।
প্রতিদিন নতুন ছাত্র, নতুন মুখ, নতুন দায়িত্ব।
তবু পুরনো চিঠিগুলো আজও তার ডেস্কের ড্রয়ারে।
🌧️ আজ হঠাৎ সেই খামটা হাতে পেয়েই তার বুকটা কেঁপে উঠল।
চিঠির ভাঁজ খুলল আনিস...
(চলবে…)
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━📦