🌸 ডায়েরির পাতায় লেখা ভালোবাসা

ভূমিকা:

ভালোবাসা সবসময় মুখে বলা যায় না। কোনো কোনো অনুভূতি থেকে যায় অন্তরের গভীরে, কলমের খোঁচায় উঠে আসে ডায়েরির পাতায়।
এই গল্প ঠিক তেমনই এক প্রেমের, যেটা বলা হয়নি, শোনা হয়নি — কিন্তু লেখা হয়েছিল… হয়তো নিজের কাছেই।

প্রথম অধ্যায়: ডায়েরি খুঁজে পাওয়া

রিমি পুরনো আলমারির কোণে খুঁজছিল কলেজের সনদপত্র। হঠাৎ এক কাপড়ের মোড়ানো ছোট খাতা হাতে এলো। পাতাগুলো হলদে হয়ে গেছে, পাতায় পাতায় কালি ছড়িয়ে আছে — ঠিক যেন সময়ের সাক্ষী।
তোমার লেখা…
তারপর অনেকক্ষণ চুপ করে বসে ছিল রিমি। ধরা গলায় বলল, “তুমি এখনো এখানে আছো…”

দ্বিতীয় অধ্যায়: ডায়েরির প্রথম পৃষ্ঠা

“২৭ শে আগস্ট, ২০১৫
আজ আবার তাকে দেখলাম। সে হেসেছিল, কিন্তু হাসিটা আমার জন্য নয়।
তবুও সেই হাসিতে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলি বারবার।
আমি জানি, সে কখনো জানবে না আমি কতটা ভালোবাসি তাকে।”

রিমির চোখে জল চলে এলো… এত বছর পরেও সেই লেখার শব্দগুলো ঠিক আগের মতো কাঁপিয়ে দেয়।

তৃতীয় অধ্যায়: কলেজের দিনগুলি

রিমি আর নীল।
তারা একই কলেজে পড়তো। নীল ছিল ভদ্র, শান্ত, অল্প কথা বলা একজন ছেলে। রিমি তাকে কখনো কিছু বলেনি, শুধু দূর থেকে দেখেছে — কখনো লাইব্রেরিতে, কখনো করিডোরে।
তারা একসঙ্গে কোনোদিন বসে চা খায়নি, গল্পও হয়নি।
তবুও একটা অদৃশ্য টান ছিল দুজনের মাঝে।
রিমি সব অনুভব লুকিয়ে রেখেছিল নিজের ডায়েরিতে।

চতুর্থ অধ্যায়: তাকে বলা হয়নি

একদিন কলেজ শেষে নীল রিমিকে বলেছিল, “তুমি খুব চুপচাপ… ঠিক যেন একটা গল্পের চরিত্র।”
রিমি শুধু হেসে বলেছিল, “সব গল্প বলার জন্য নয়…”
নীল কিছু বুঝেছিল কি না, কে জানে!
আর কোনোদিন সে কিছু বলেনি।

পঞ্চম অধ্যায়: চলে যাওয়া

পরীক্ষা শেষ, কলেজ শেষ।
কেউ কারও সাথে যোগাযোগ রাখেনি।
রিমি শহর ছেড়ে চলে যায়।
নীল কোথায় গেছে জানে না।

ষষ্ঠ অধ্যায়: ফিরে আসা

১০ বছর পর…
ডায়েরির সেই পাতায় লেখা শেষ লাইন ছিল —
“যদি কোনোদিন এই লেখা তার হাতে পৌঁছায়… তাহলে শুধু একবার চোখ তুলে তাকাক…”

সেদিন বিকেলে, দরজায় কড়া নাড়ল কেউ।
রিমি দরজা খুলে চমকে উঠল…
সে… নীল… হাতে সেই ডায়েরির পুরনো কপি…

“আমি সবই পড়েছি,” — নীল বলল ধীরে।
“তোমার চোখের ভাষা বুঝতে দেরি হয়ে গেছে… এবার আর ভুল করব না।”

শেষ কথা: ভালোবাসা যা সময় পেরিয়ে ফেরে...

সব গল্পের শেষ না থাকলেও, কিছু অনুভবের শেষ হয় না।
ভালোবাসা কখনো হারায় না…
সে ফিরে আসে — ডায়েরির পাতায়, চোখের চাহনিতে, কিংবা অনেক বছর পর হঠাৎ এক সন্ধ্যায় দরজায় কড়া নাড়ায়।