গল্প: "শেষ চিঠি"
প্রথম সাক্ষাৎ
আদনান ছিল একেবারে সাধারণ একজন মানুষ। সকালে অফিস, রাতে বই আর গান।
ওর জীবন খুব নিয়মের বাঁধনে বাঁধা ছিল— যতক্ষণ না রিমির সাথে দেখা হয়েছিল।
রিমি এসেছিল শহরে নতুন চাকরির জন্য। প্রথম দিনই অফিসের লিফটে দেখা, কেবল একটুখানি হাসি।
কিন্তু সেই হাসিটাই আদনানের নিঃশব্দ জীবনে আলো হয়ে ঢুকে পড়েছিল।
বন্ধুত্ব থেকে প্রেম
প্রথমে দুজনেই কথা বলত কাজের সূত্রে। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
সন্ধ্যায় কফি খাওয়া, ছুটির দিনে সিনেমা দেখা— সবকিছু এত স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু আদনানের ভেতরে কিছু অস্বাভাবিক হচ্ছিল।
ও বুঝতে পারল— রিমির প্রতি ওর অনুভূতি বদলে গেছে, সেটা আর বন্ধুত্ব নেই।
প্রস্তাবের ভয়
আদনান কতবার ভাবল বলে ফেলবে, কিন্তু প্রতিবার গলা শুকিয়ে যায়।
কারণ রিমি প্রায়ই বলত—
"প্রেমে আমি বিশ্বাস করি না আদনান, আমার জীবনে কেবল ক্যারিয়ারই বড়।"
এই কথাটাই আদনানকে পিছিয়ে রাখত।
রিমির চলে যাওয়া
একদিন হঠাৎ রিমি বলল, ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে— অন্য শহরে একজনের সাথে।
আদনান শুধু চুপ করে তাকিয়ে রইল। বলার মতো কিছু ছিল না।
সেদিন রাতে, সে প্রথমবার কাঁদল।
শেষ চিঠি
রিমি চলে যাওয়ার আগে আদনান তাকে একটি চিঠি লিখেছিল—
"তুমি যদি কখনো মনে করো, কেউ ছিল যে তোমার হাসিতে নিজের পৃথিবী খুঁজে পেয়েছিল, মনে রেখো আমি ছিলাম সেই মানুষ। ভালো থেকো রিমি।"
চিঠিটা কখনো দেওয়া হয়নি। ডায়েরির পাতায় রয়ে গেছে, রিমির নামের মতোই চিরকালের জন্য অপ্রাপ্য।
শেষ লাইন
আদনান আজও সেই চিঠি পড়ে। ভালোবাসা পায়নি, কিন্তু ভালোবাসাটা তার ভিতরে এখনও বেঁচে আছে— নিঃশব্দে, অমলিন হয়ে।
---------------------------
--------মোহাম্মদ মিরাজ হোসাইন-----