৪১
ব্যস্ত শহরে
আমি কি খুঁজে পাব তাঁরে
আমার প্রাণের বঁধুয়ারে
ব্যস্ত শহরে।
অগণিত মানুষ
কারও নেই হুঁশ
অগণিত মানুষ।
আশঙ্কা—হারিয়ে যাই ভিড়ে—
ব্যস্ত শহরে॥
বন্ধু আমার
পদেপদে ভুল ছিল যার
করুণা কি মিলে তার
বন্ধু আমার॥
এই সেই রৌদ্রপ্রান্তর
বন্ধ হয়েছে খেলাঘর
এই সেই রৌদ্রপ্রান্তর।
ইয়া—ইয়া নাফসি আতঙ্কস্বরে—
ব্যস্ত শহরে॥
২৯ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম
৪২
অপরাধ যদি করে থাকি প্রভু
বলতে পারি নে হয়নি দোষ।
মানুষ হয়ে জন্মেছি বলে কভু
বলতে পারি চলেছি বেহুঁশ॥
প্রায়শ্চিত্তে যখন এলাম ভবে
ভুলে ভুলে যে থাকতে হবে
তবু ভালোমন্দের তুলাদণ্ডে
থাকে যেন মন্দপাল্লা রোষ॥
কী করতে কী যে করি কখন
বুঝতে পারি না মানুষ আমি।
করার পরে হায় হায় জপন
বিধানের বিধান করেছ তুমি॥
আমার দোষে আমিই দোষী
বলি—অপরাধ কপালের বেশি
এক দোষ ঢাকতে দশ করি
দশ ঢাকতে হাজার কোশ॥
৩০ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম
৪৩
দে হে তোরা দে
ছেড়ে এবার দে
ওই যে দাঁড়ায় আছে
আমার যাত্রা নে।
ঢোলঢ্যাঁডড়া পিটিয়ে দিয়ে
জানিয়ে দে খবর প্রিয়ে
শুভাশুভাকাঙ্ক্ষী মিলেমিশে
আসুক-না বিদায়ে॥
এই যে এ রাজপ্রাসাদ
কতক্ষণ আর মায়াকাঁদ
এলাম-গেলাম শূন্য হাত
দেখুক বিশ্ব বিস্ময়ে।
যাচ্ছি কেমন—কীমতে
পারছি কিছু সঙ্গে নিতে
ভেবো আপন গভীর চিতে
আছে চিন্তার খে॥
৩০ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম
৪৪
পাপেপুণ্যে এ অরণ্যে
আছি আমি নির্বাসনি
কী যে সব খুঁজছি হন্যে
আমিও কিবা নাজানি!
পাচ্ছি যা কামনাতে
মলিন তা মলিনেতে
ঘরেপরে এ আঁধারে
তবু কেন কাঁদাকাঁদি॥
চলছে খেলা হট্টগোল
ভুলে আছি সবকিছু
ফুরায় বেলা বুঝি ভুল
তবে কী ফল ছুটি পিছু?
সাধারণ জ্ঞান নেই যার
মানুষ হওয়া দায় তার
জঘন্যতা আছে কার
চিন্তা বড় তার লাগি॥
৩০ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম
৪৫
এত মমতা দিলে কেন দিলে প্রভু
দিলে না যখন অর্থকড়ি সামর্থ্য?
এত দুঃখবাণী কেন শোনাও তবু
করলে যখন কর্ণপাতে অসামর্থ্য?
দেখেশুনে পাই নে উপায়
মানুষ আমি বড় নিরুপায়
তোমার হাতের লাঠি যাদের ঘায়
তারা যে দেখেও দেখে না গর্ত!।
নীরব আজ ধরণি দেখছে তামাশা
ভাষা নেই বোঝানোর—কোনো রাস্তা!
মানুষের দরদে কাঁদে না যে দ্রষ্টা
বুঝে না কাল তার সেই নীরবতা!
আজকে যাদের দুঃখমহা
কালকে হয়তো হবে সুরাহা
কিন্তু তাদের দুর্দশারই কান্নাবাহা
থাকবে না কেউ দেখার মতো॥
৩০ ভাদ্র, ১৪২৪—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম