রাজার অন্দরমহল
১১ জুন ২০২৪
শ্রাবন দেবনাথ
হঠাৎ বিকট আর্তনাদে ঘুম ভেঙ্গে গেল।টেবিলের উপর রাখা ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ২:১৭.অমাবস্যার চাঁদের আর রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোস্টের আলো মিলে রুমে তখন এক ভৌতিক পরিবেশের সঞ্চার করেছে।তবুও ভৌতিকতার দেয়াল ছাপিয়ে কানে ভেসে আসছে শুধুই আর্তনাদ।বিকট আর্তনাদ!!
আমি কাব্য।বাবার চাকরিসূত্রে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। দেখেছি বাস্তব-অতিবাস্তব(আধ্যাত্মিক কিছু)।এখন যেখানে থাকছি তার পাশেই আধভাঙ্গা আর প্রায় ১০০ বছরের পুরাতন, রাজা-মহারাজাদের আমলের একটি অন্দরমহল ধরনের ঘর।সেটা দেখলেই মৃত লাশের কারখানা মনে হয়।ভৌতিক স্থান হিসেবে চালিয়ে দিলেও হয়তো বেশ পয়সা পাওয়া যেত এর থেকে।কিন্তু ভৌতিকতা নয়।সেই ঘরের অন্ধকারের পাশবিক নির্যাতন,বিদেহী লাশের আর্তনাদ, তীব্র ক্রন্দন, আহাজারি, আর্তনাদ আর কঠিন সব বাস্তবতা ঘরটিকে নিকষ অন্ধকারেও জ্বলন্ত পৈশাচিক দাবানলে পরিণত করেছে।এখানে আসার আগে এই বাড়িটি পুরোই পরিত্যক্ত ছিল।মানুষ তো দূরে থাক মশা-মাছিও থাকতো কিনা আমার এতে ঢের সন্দেহ রয়েছে।যখন আমরা এখানে আসি,তখনো সব ঠিকঠাকই ছিল।কিন্তু দিনের প্রবাহে কানে বিভিন্ন লৌকিক কাহিনী আসতে থাকে।দশের যা স্বভাব তাই,ছোট্ট ঘটনাই তাদের বর্ণনায় উপন্যাস।যাই হোক,তাদের কাহিনীগুলো সবই ছিল ভূত নিয়ে।তারা বলতো,ঐ রাজাদের অন্ধকার ঘরে ভূত আছে।রাতে নাকি তারা ছাদে নুপুর পরে হেঁটে যায়।কথিত,মাঝরাতে তাদের পৈশাচিক আর্তনাদে মেতে উঠতে শোনা যায়।আমার বয়স তখন ১৬.স্বভাবতই তাদের কথায় আমি কোনো ভয় অনুভব করিনি।কিন্তু, মাঝরাতে ভাঙ্গা ঘুমে ওসব মনে পড়লেই আবার চোখ টিপে শুয়ে পড়তাম।কিন্তু বারবারই মনে হতো আমার পাশে কেউ শুয়ে আছে।তখন মনে হতো,পাশ ফেরার থেকে ম্যারাথন রেসও সহজ।এর মাঝেই, হঠাৎ একরাতে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি,আমার পায়ের কাছে কেউ বসে আছে।ছায়ামানবী!!আমার ব্লাড ফোবিয়া আছে,তাই রক্ত দেখলেই অজ্ঞান হয়ে যাই।কিন্তু ঐ দিন জানতে পারলাম আমার গোস্ট ফোবিয়াও আছে।পরদিন সকালে আমাকে রুমে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়...।