উন্নত বিশ্বের প্রবাসী এক ভাই। সেখানের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। প্রথম স্ত্রী নিয়ে বেশ ভালোই আছেন। এই দাম্পত্যের ফুটফুটে দুটো কন্যা সন্তানও আছে। তার ইচ্ছে ছিলো যেহেতু সামর্থ্য আছে দ্বিতীয় বিয়ে করবেন। এগুলো নিয়ে মাঝেমধ্যে উভয়ের মাঝে খুনসুটি হতো। ওয়াইফ মজা হিসাবেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল।
এক বিধর্মী মেয়ে সেলসম্যান হিসাবে জব নেয় তার শপে। তারপর ঘটতে থাকে পরিবর্তন। দিন দিন কথা বাড়তে থাকে কর্মের খাতিরে। সেখান থেকে তৈরি হয় ভালো সম্পর্ক। এদিকে দূরত্ব তৈরি হয় প্রথম স্ত্রীর সাথে। কিন্তু এই মেয়ে ছিলো দুশ্চরিত্র স্বভাবের। এখানে একজনের মাধ্যমে তার দেশ থেকে এসে ডিভোর্স দিয়েছে। পরকিয়া ও লিভ টুগেদার ঘটনা তার ব্যাপারে ওপেন সিক্রেট। এমন একটা মেয়েকেই হঠাৎ বিয়ে করে ফেলেন প্রবাসী ভাইটি!
এখানেই হয়তো শেষ হতে পারত। উভয় স্ত্রী আলদাভাবে বাস করতে পারত খুব সুন্দরভাবে, স্বাচ্ছন্দ্যে। আমার পেশেন্ট সালমা (ছদ্মনাম) ডিপ্রেশন ঔষধ খেয়েও সেরে নিতে পারত। পারছিলও বটে…। বাঙালি মেয়ে হিসাবে অনেকটাই সফট কর্ণার আছে তার এই বিষয়ে। কিন্তু দ্বিতীয় জনের তো চর্কি ঘুরাতে হবে স্বামীর সংসারে। তাই প্রথম স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক খারাপ করে এক সময় তাদেরকেই দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। খুব অসহায় মুহূর্ত ওই বোনের, স্বামী বাসায় থাকলে কল দিতে পারেন না। দীর্ঘ সময় যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন না। এছাড়াও আরো অনেক সমস্যা…।
তিনি খুঁজে বের করেন আমাদের। আমার সাথে দীর্ঘ সময় কথোপকথন হয়। সিমটমস ডায়গনোসিস করে পাওয়া যায় তার স্বামী ভুলে যাওয়ার সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়া, অস্থিরতাসহ যাবতীয় বশিকরণ লক্ষণ পাওয়া যায়। উনাদের উভয়ের বিচ্ছেদ লক্ষণও দেখা যায়। এছাড়া ওই মহিলা ইসলাম গ্রহণের কথা বললেও এখনো তার ধর্মীয় তাবিজ ব্যবহার করে এবং সে ধর্মের বিভিন্ন নিদর্শন, সুতা জাতীয় জিনিস স্বামীর গাড়ি, বাড়ি ও দোকানে দিয়ে রেখেছে মঙ্গল কামনা ও সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য।
সাংঘাতিক আরোও কিছু জিনিস জেনে জাদু নষ্টের নিয়তে রুকইয়াহ করালাম বোনকে। সেদিন রাতেই পার্সোনাল পেশেন্ট গ্রুপে জানান, আজ অনেক ভালো ঘুম হয়েছে তার। রুকইয়াহ চলাকালে জাদুর অনেক লক্ষণও প্রকাশ পায়। আমল দিলে এক মাস আমল করলেন। স্বামীও তাদের সাথে খুব সুন্দর সম্পর্ক গুছিয়ে চলছেন। এ-তো সেদিন দেশে আসলে হাসবেন্ডকেও কিছু কাজ করাতে দিলাম। করালেন। এখন আবারও স্বামী তাদের সবাইকে নিয়ে বাহিরে যাবেন। আল্লাহ তায়ালা এইসব ঝামেলা থেকে উদ্ধার করে উত্তম ফায়সালা করে দিন। সম্পর্ক নষ্টকারীনী এইসব জাদুকর মহিলা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
—এই লেখা লেখার পর সে কূটকৌশলী নারীর নতুন কর্মযজ্ঞ চলছে শুনলাম। সে উঠেপড়ে লেগেছে এখন আবার৷ খুব কড়াভাবে রুকইয়াহ করা ও সবিশেষ পথ না পেলে কার্স করা ছাড়া উপায় নাই। আল্লাহ তায়ালা এই বোনের জীবন সহজ করুন।
শিক্ষণীয় ও লক্ষণীয়:
-সমাজে দ্বিতীয় বিয়ের অপব্যবহার করে অনেক দুশ্চরিত্র স্বভাবের পুরুষ। অথচ মাসনা, সুলাসা এসব হলো পবিত্র সুন্নাহ। কোরআনের বিধান৷ উভয় স্ত্রীর হক দেয়ার মাধ্যমে ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ের প্রতি সবাইকে উৎসাহ প্রদান করে। তাই এটাকে ছোট করে যেমন দেখা যাবে না, তেমনি অপব্যবহারও করা যাবে না। নিজের ভিতর সামাল দেয়ার যোগ্যতা থাকলে তবেই উচিত দ্বিতীয় বিয়ে করা। নাহয় সমাজে শিরক কুফরের পরিমাণ ও মানসিকভাবে অসুস্থ পরিবার সদস্য বৃদ্ধি পাবে দিন দিন।
-সর্বাবস্থায় উচিত ধৈর্য ধরা ও আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখা৷ আল্লাহ তায়ালা ইনশাআল্লাহ সহজ করবেন। মৃত্যু রোগেও শিরক-কুফর জায়েয নাই৷ এই ব্যাপার সবার বুঝা উচিত।