সকালে ওঠার অভ্যাস আমার কোনো কালেই ছিল না ,কিন্তু আজকে উঠতে হচ্ছে কারণ বেড়াতে যেতে হবে এক জায়গায়,সকালটা অনেক সুন্দর , ঘুমানোর আনন্দ আর ভোর দেখার আনন্দ একসঙ্গে পাওয়া যায় না ।বসন্তে পাতা ঝরে। কোকিল ডাকে। আমের মুকুলের গন্ধে মন মাতে। চোখ রাঙে শিমুলের লাল ফুলে। মন হারিয়ে যায় অন্য কোনোখানে। হারিয়ে যাওয়ার আকুতি যখন আকাশছোঁয়া তখনই আমন্ত্রণ পাই বন্ধু মুশফিকুরের রংপুর মিঠাপুকুর যাওয়ার। সে মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেখানে শালবন আছে ও রাবার বাগান আছে।মিঠাপুকুরের গোপালপুর শালবনটি নাকি অনেক সুন্দর দেখতে ।মর্তুজা ভাইয়ের আয়োজনে আমরা বেরিয়ে পড়লাম রিপোর্টার্স ক্লাবের দশ-বারোজন সদস্যকে নিয়ে ভ্রমণটি ছিল অনেক মজার ও আনন্দের।মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার আতিথেয়তা ছিল অসাধারণ, মিঠাপুকুর উপজেলা পৌঁছার পর সে আমাদের নিয়ে গেল উপজেলা পরিষদের অফিসার্স ক্লাবে সেখানে ফ্রেশ হওয়ার পর আমরা সবাই সেখানে নাস্তা করলাম ,নাস্তার মেনু ছিল অনেক ধরনের পিঠা , পিঠা ছিল ফিরোজের বউ লিমার তৈরি,নাস্তা করার পর সে আমাদেরকে নিয়ে গেল গোপালপুর ইকোপার্ক শালবন , মিঠাপুকুর উপজেলা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ,বন কর্মকর্তার সঙ্গে আগে কথা বলে রেখেছিল আমাদেরকে রিসিভ করার জন্য।প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার জন্য। পাতা ঝরার এই সময়ে শালবন নাকি অন্যরকম।শুকনো পাতায় পা রাখতেই মড়মড় শব্দে শালবনের নীরবতা ভাঙে। গাছগুলোতে অনেক পাখির কলকাকলি। কোকিল, টিয়া, ঘুঘু, ময়না আরও কত কি! সেখানে যেয়ে শুনি উদ্বোধনের পর নাকি তিনটি অজগর সাপ ওখানে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।মনে হচ্ছিল কিছু একটা ধেয়ে আসছে। আমরা ভড়কে যাই। এটি আসলে বাতাসে শালপাতা নড়ার শব্দ। মুনড়বার ভাষায় পাতার মিছিল। প্রাকৃতিক নিয়মে শালবীজ পড়ে বন তৈরি হওয়ার কারণেই নাকি বনটিকে প্রাকৃতিক শালবন বলা হয়। বিট অফিসার মঞ্জুরুল ইসলাম তেমনটিই জানান।শালবনটি প্রায় ২২৬ একর এলাকাজুড়ে। বনের মধ্যে শালগাছ ছাড়াও রয়েছে আমলকী, সর্পগন্ধা, বহেড়া, হরীতকী, চিরতাসহ নানা ধরনের ঔষধি গাছ। একটি ছোট্ট রেস্ট হাউসও রয়েছে এখানে। রেস্ট হাউস ছাড়িয়ে আমরা প্রবেশ করি পাশের শালবনে।বনটিতে একসময় দেখা মিলত বাঘসহ হিংস্র সব জানোয়ারের। এখন মেলে শেয়াল, খরগোশ, বন মোরগ ইত্যাদির। জমিনে বিছিয়ে থাকা শালপাতা কুড়াচ্ছিল নারীরা। এক সময় ঘুরাঘুরি করে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ি তারপর নিউজ করার জন্য,বিট কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলামের সাক্ষাৎকার নিয়ে ওখান থেকে আবার মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের অফিসার্স ক্লাবের উদ্দেশ্যে ,সেখানে আমাদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে,মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দুপুরে খাওয়ার আয়োজন ছিল অসাধারণ, মেনুতে ছিল ছাগলের মাংস, মাছ, ডাল, ভর্তা সহ আরো অনেক কিছু, খাবারের স্বাদ ছিল অসাধারণ,মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার আতিথেয়তা ছিল অসাধারণ তাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই এত কিছু আয়োজন করার জন্য।