ঘড়িতে কাঁটায় কাঁটায় ঠিক দশটা। সেকেন্ড আর মিনিটের কাঁটা ষাটের ঘরে আসার সাথে সাথেই ম্যামের হুংকার, ‘স্টপ রাইটিং!’
কিন্তু নূরা তখনও লিখে চলেছে। লিখেই যাচ্ছে। যেন কোনোদিকে খেয়াল নেই। ম্যামের কথাও শুনতে পায়নি খুব সম্ভবত।
-‘এক্সাম টাইম পেরিয়ে গেছে নূরা!’ হাল্কা ধাক্কা দিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো পাশে বসা পিউলি। নূরা তার দিকে তাকাতেই পিউলি অবাক হয়ে গেলো। যেই কিছু বলতে যাবে তক্ষুনি ম্যাম এসে দাঁড়ালেন নূরা’দের বেঞ্চের কাছে।
-‘এইযে, কালো বোরকাওয়ালী, আপনার লেখা শেষ হয়েছে?’ বিদ্রুপের ভঙ্গিতে বলে উঠলেন ম্যাম।
-‘এখনো কিছু বাকি আছে ম্যাম’ ক্ষীনস্বরে বলল নূরা।
-‘রেখে দাও। ও খাতা আর আমি নিচ্ছি না। ৫ মিনিট লেইট। খাতা বরং বাসায় নিয়ে যাও। সেখানে বসে বসে সাহিত্য রচনা করো নাহয়’ কঠিন গলায় কথাটা বলেই গটগট করে হাঁটা ধরলেন ম্যাম।
নূরা স্থির চোখে সবার খাতা নিয়ে ম্যামকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে দেখছে। শুধু ওর খাতাটা বেঞ্চির উপর পরে আছে।
-‘নূরা তুমি কাঁদছো? দেখো পরেরবার এক্সামে তুমি এতো ভাল করবে যে, আজকের এক্সামটা কাভার হয়ে যাবে ’ পিউলি নরমস্বরে নূরাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলো।
নূরা উত্তর না দিয়ে ব্যাগ গোছাতে শুরু করলো। ‘ ম্যাম আমার খাতা নেননি, আমার মার্কস আসবেনা, আমি মোটেই সেজন্য কাঁদছি না!’
বলেই দ্রুতপায়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলো সে।