পোস্টস

চিন্তা

হিন্দু ধর্ম এবং নিরামিষ আহার

১৬ জুন ২০২৪

রনি কুমার সরকার

মূল লেখক রনি কুমার সরকার

 সব কিছুই জাগতিক, মায়া দ্বারা আচ্ছন্ন।
পড়াশোনা নাই,
মানবতা নাই,
মানুষকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করা, 
তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা,
নিরামিষ খাবার কেই শুধু প্রাধান্য দেয়া। 
প্রাধান্য দেয়া বলাও ভুল, যারা আমরা নিরামিষভোজী না, তারা সবাই অসুর, অশিক্ষিত, অধার্মিক পশু।
পশু সমতুল্যও না, একেবারে সরাসরি পশু!
পৃথিবীতে শুধুমাত্র ভোগ করার জন্যই এসেছি।
এইগুলা হইলো ইসকন সহ কিছু হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনের মূলনীতি।

কিন্তু এসব কি ভয়ংকর উগ্র কথাবার্তা, কেউ চিন্তা করছেন কখনো?
সারাক্ষণ কাজ কাম বাদ দিয়া কৃষ্ণনাম জপ করো, কিন্তু মন্দিরে গিয়ে প্রণামি দাও।
এটাই ধর্ম। 
যেখানে মানবতা নাই, মানুষের প্রতি মমতা নাই, সেখানে ধর্ম কিভাবে আসে? 
হিন্দুদের মাঝে যে কি পরিমাণ বিভক্তি, এটা বাইরে থেকে কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। বিভিন্ন জাত, গোত্র, বর্ণ ছাড়াও বিভিন্ন প্রকারের ভক্ত। 
কেউ বিভিন্ন দেবদেবীর, কেউ একক ঈশ্বরের। 
কেউ কেউ উভয়ই। 
বাড়িতে গেলে আমার মায়ের কর্মকাণ্ড দেখলেই মনে হয় আমি হিন্দু না। মায়ের বাসনকোসন আলাদা, আমাদের তিনজনের আলাদা। 
আমাদের জন্য আলাদা রান্নাবান্না হয়, মায়ের জন্য পুরোপুরি আলাদা। 
কদাচিৎ মায়ের পাত্রে হাত পড়লে,  এই বাবা! কাম সাড়া! মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেল।
এইগুলা আসলে বিরক্তিকর।
খাওয়া দাওয়া কে প্রাধান্য দিয়ে বাকি সব মৌলিক ধর্মীয় গুণাবলিকে একপ্রকার বলি দেয়া হয়। 
গতকাল, মন্দিরে গিয়ে বসে আছি মন্দির প্রাঙ্গণে। 
বিভিন্ন কথাবার্তা হচ্ছে, এমন সময় আমি কেবল বলেছি, নিরামিষ আমার পছন্দ না।
পাশের একজন মহিলা এটা শুনে এতটাই হতবাক হইছে যে আমি সঙ্গে সঙ্গেই আহত হয়েছি। 
কিন্তু এটাতে হতবাক হবার কিছু আছে?
ঐ মন্দিরেই আরেকদিন ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া বার বছর বয়সী এক ছেলেকে একজন জিজ্ঞেস করছে, Do you have girl friends? 
আসলে উনি কি বুঝতে চেয়েছেন, জানি না। 
তোমার মেয়ে বন্ধু নাকি মেয়ে বান্ধবী(বহুবচন) আছে?   
আমিও বুঝি নাই।
যাহোক, 
His reply was that : I don’t like these topics, please, don't ask me these questions! 
প্রেম, ভালোবাসা,  খাবার, দাবার এইগুলাতেই যত সমস্যা। 
আমাদের ধর্ম সনাতন। মানে হচ্ছে যা ছিল, আছে এবং থাকবে। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ এই সনাতন তথা হিন্দু ধর্মের কঠিন কঠোর অমানবিক নিয়মাবলি সমাজ পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন না হোক, অন্তত খাপ খাওয়ানোর মত তো হইতে পারে! 
সততা, মিথ্যা না বলা, চুরি না করা, প্রতারণা না করা, মানবতার সেবা করা, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় নিজেকে সমৃদ্ধ করা ছাড়াও আমাদের  উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়া লক্ষ্য হওয়া উচিত। 
শুধুমাত্র খাওয়া, খাদ্য, ছোঁওয়া ছুঁয়ি নিয়ে নতুন নতুন নিয়ম বের করা সম্ভব এবং এতে হিন্দুরা পিছিয়ে পড়বে পড়া ছাড়া সামনে আগাবে না।