৯১
আমি জানি না আরাধনা
না জানি কোনো প্রার্থনা
তুমি তো জানো অন্তরের খবর।
আমি বলতে চাই এক
বলে ফেলি আরেক
আমার বয়ানে নেই যেরযবর।
এ জীবনের অর্জন কী
শূন্য ছাড়া পাই নে খুঁজি
আঁকাজোকা দেখছি অকার্যকর॥
তোমার বাণী শুদ্ধ চলনে
নয় শুদ্ধ পাঠ করণে
আমি তো শুদ্ধ পড়েও করি ভুল।
এ আমার এ বন্দেগি
পাই কেমনে জিন্দেগি
তুমি যদি দাও না ছাড় একচুল।
আমার কী হবে—হবে কী
ভাবছি সেদিনের গতি কী
আমার মধ্যে নেই আমার অন্তর॥
২৩ আষাঢ়, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত
৯২
আমার প্রভু দয়াময়
করলে আমায় সৃষ্টি নিশ্চয়
নিশ্চয় তিনি করুণাময়।
ছিলাম আমি বিক্ষিপ্তে
নিয়ে এলে প্রভু অস্তিত্বে
পেলাম আমি বিরাট পরিচয়॥
যদি হই তাতে কৃতঘ্নমনা
আমারে আমি স্বীকার করি না
আমারে আমি করি বঞ্চনা।
না বুঝে—বুঝে কে বেশি
নিজেরে নিজে বানায় দোষী
আমাতে ভালো কম বোঝার হৃদয়॥
১৩ শ্রাবণ, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত
৯৩
মেহেরবান,
তোমার মেহেরবানির শোকরিয়া
আদায় করতে পারি না—পারি না জনম-জনমে।
সুমহান,
তোমার মহানতার গুণবর্ণনা করিয়া
শেষ করা যায় না—যায় না কোনো কালির কলমে॥
আমার জবানে কী প্রশংসা করি আমি
শত-হাজার-কোটি প্রশংসার ঊর্ধ্বে তুমি
গুণবান,
তোমার গুণগান যেতে পারি গাহিয়া
অতটু জ্ঞানের পরিধি বাড়াও—বাড়াও এ মনে॥
জীবনে,
তুমি ছাড়া সবকিছু অর্থহীন ও ধোঁকা
অনর্থের ধোঁকায় ধোঁকায় রেখো না আমাকে।
কেমনে,
কোন সেই সাধনে পাই তোমারি দেখা
আমারে চালাও—চালাও সেই গন্তব্যেরই পথে॥
যেপথে রেখেছ তুমি তোমার সন্ধান
আমার কমিয়ে দাও সেপথের ব্যবধান
রহমান,
তোমার রহমতে নেও আমায় ঢাকিয়া
আমি পথ খুঁজে পাই—পাই যেন অসীম মহাশূন্যে॥
১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত
৯৪
তোমার মহব্বতে এসেছি পৃথিবীতে
আবার চলে যাব তোমার আদেশে,
মাঝখানে কিছু সময় এলোমেলোতে
কেটেছে জানি আমার—বুঝি শেষে॥
সবকিছু চলে—চলছে তোমার ইশারায়
গ্রহ-তারা-নক্ষত্র সবকিছু নিয়মশৃঙ্খলায়,
আমায় অনিয়মে ঘুরায় কে বিপরীতে?
মাঝখানে কিছু সময় এলোমেলোতে॥
আমি চলতে পারি কী দক্ষতার বলে
তুমি যদি দাও না চলনের ক্ষমতা,
চালনের মালিক তুমিই চালাচ্ছ বলে
চলছি আমি মনে করি সঠিক রাস্তা॥
তুমি দিয়ে যাচ্ছ যখন পথের দিশা
আমাকে পথ ভুলায় কোন সর্বনাশা,
কে সে পথভ্রষ্ট চালিত করে বিপথে?
তোমার মহব্বতে এসেছি পৃথিবীতে॥
২৬ অগ্রহায়ণ, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত
৯৫
সৃজক!
আমায় ক্ষুদ্র করেছ দুঃখ নেই
করো না ক্ষুদ্রমনা।
পৃথক!
তোমার থেকে করেছ ভালো
অন্তর থেকে করো না॥
সৃষ্টির যত নীচত্ব দেখালে তুমি
অল্প প্রাণের জন্যে কাঁদি আমি;
আফসোস!
বড় জগতে জন্ম নিয়েই
ছোট দুনিয়ার ভাবনা॥
দেখেছি!
আসমান-জমিনের পার্থক্য কী
তারচে অধিক অন্তর।
পেয়েছি!
যতটু যা সমাধানের মিল
ভাবের ঘোরের ভেতর॥
হৃদয়ে যদি হওয়া যায় বড়
সকল তক্ত তার কাছে ক্ষুদ্র;
মানুষ!
নিবেদিত প্রাণ হতে পারলে
নেই প্রাণের তুলনা॥
৬ পৌষ, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত