পোস্টস

বাংলা সাহিত্য

‘রৌজা’ গীতিকবিতা পর্ব (২১)

১৯ জুন ২০২৪

আযাহা সুলতান

মূল লেখক আযাহা সুলতান

১০১ 

কে তুমি হৃদয়বান! 

         স্বর্গ পেতে করছ বান্ধবে আহ্বান?

                  কর্ম তোমার মহান।

ভালো বন্ধু ভালো, 

         গাঁট্টিগাঁঠুরিতে মুসাফির হলে হলো! 

                  বোঝা চাই নিষ্ঠাবান॥

 

তবে বুঝে আসে না কথাটি 

         কোন স্রষ্টার তুমি প্রতিনিধি?

আদেশ করছেন তোমায় বিধি 

                  গুমরাহিকে পথ দেখান॥

 

ঠিক আছে যুক্তি! 

         তুমি কি ভাবছ তুমিই সঠিক পথী?

                  এতই কি সহজ মুক্তি।

জীবনের এ বন্দেগি, 

         বলতে পারে কে পাবে জিন্দেগি!

                  মনে করি-না যতই শুদ্ধি॥

 

আমার কপালকালো এবাদত 

         কর্মদোষে কিবা আমার আপদ! 

হয়তো আমিই পথভ্রষ্টদের অগ্রজ 

                  নরককুণ্ডে আগে স্থান॥

                  ৭ ফাল্গুন, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত 

১০২ 

তোমার ভালোবাসা ছাড়া আছে কী 

         জীবনে 

কিছুই খুঁজে পাই নে মনে মনে। 

তোমার প্রেমের কূলহারা—অকূল 

                  সাগরে 

ভেসে যেতে চায় মন বারেবারে॥ 

 

বন্ধু আমারে ভাসাও তোমার অপার 

         ভালোবাসায় 

এ মন তোমার প্রেমে যাক-না হারায়, 

আমি ডুবতে চাই সীমানা হারিয়ে 

                  অসীমে। 

তোমার প্রেমের কূলহারা—অকূল 

         সাগরে॥ 

 

আমি তো এখন আর আমার মধ্যেই 

         নেই 

একেমন আশেক তুমি বানালে আমে। 

তোমারে কোথায় গেলে পাই—কহনা 

                  কেমনে? 

আমার তো কাটে না দিন তুমি বিনে॥ 

 

তুমি তুমি তুমি জপের জপছি মালা 

         হরদম 

আমার একূল-ওকূল দুকূলের প্রিয়তম, 

আমি কি পাব না তোমাকে চাহার এ 

                  সসীমে? 

তোমার ভালোবাসা ছাড়া আছে কী 

         জীবনে॥ 

                  ২ চৈত্র, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত 

১০৩ 

তোমাকে এমন করে 

         কেন চাহে মন, 

জানি না জানি না 

                  জানে মন। 

আমাকে কেমন করে 

         করলে তুমি পাগল, 

দিওয়ানা দিওয়ানা 

                  পলে পল॥ 

 

আমি কীভাবে বলি 

         চাহাতের এ কথাগুলি, 

বল-না বল-না 

         মনের পাগলামির কথা 

কেমনে করি বর্ণন? 

                  তোমাকে এমন করে 

         কেন চাহে মন॥ 

 

আমার প্রাণের প্রিয়তম 

         কোথায় আছ সখা, 

পাব কি পাব কি 

                  তোমার দেখা? 

যদিওবা আমার চাহনে 

         নেই কোনো ধারা, 

দেবে কি দেবে কি 

                  এ প্রেমে ধরা?। 

 

রবে মনে দুঃখ এ 

         পেলে না বন্ধু তোমারে, 

যাবে না যাবে না 

         না পাওয়ার বিরহব্যথা 

ভুলা যাবে না কখন! 

                  তোমাকে এমন করে 

         কেন চাহে মন॥ 

                  ১৮ চৈত্র, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত 

১০৪ 

এ-জীবনে চাইনি এজন্যে 

         নাম ও সম্পদ, 

ও-জীবনে পাই না যদি 

                  ভালো কোনো পদ। 

এ-জীবন আর ও-জীবনের মাঝে 

জানি না কী তার কত পার্থক্য যে, 

         মনের প্রশান্তি এটাই বলে 

ক্ষণের শান্তি গলদ। 

                  এ-জীবনে চাইনি এজন্যে

         নাম ও সম্পদ॥ 

 

এখানে দিনেরাতে যে বা যারা 

         বেয়েছে অশ্রুবারি, 

ওখানে নিশ্চয় সে ও তারা 

                  পিবে সুপেয় কাউসরি।

এখানে সুখের হাতে যারা প্রতিনিয়ত লুঠ 

ওখানে অবশ্য তাদের উপহার রাজমুকুট, 

         দুঃখকুঁড়ের দুখীরা সেখানে 

সুখে হারাবে হদ। 

                  এ-জীবনে চাইনি এজন্যে

         নাম ও সম্পদ॥ 

                  ২২ চৈত্র, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত 

১০৫ 

চারি দিকে আমার আজ 

         বইছে বিষম বাতাস! 

কি জানি আছি কয় দিন 

                  থাকব পৃথিবীর মাঝ।

 

আপন যাচ্ছে আপনে ছাড়ি 

         সারা বিশ্বে আজ মহামারী, 

কার জন্যে কে কাঁদবে 

                  স্তব্ধ কান্নার আওয়াজ।

চারি দিকে আমার আজ 

         বইছে বিষম বাতাস॥ 

 

চলে যায় যাক-না ছেড়ে 

         বিপদে ফেলে বান্ধবে! 

করব না আমি কখনো 

                  এতটু অবহেলা দায়িত্বে। 

 

এবাদতে আছে যত-না পুণ্য 

         তারচেয়ে প্রাণের সেবা গণ্য,

কার আছে নসিবে করার 

                  ভালো একটুখানি কাজ।

কি জানি আছি কয় দিন 

         থাকব পৃথিবীর মাঝ॥ 

                  ২৪ চৈত্র, ১৪২৬—মানামা, আমিরাত