পোস্টস

বাংলা সাহিত্য

‘রৌজা’ গীতিকবিতা পর্ব (২২)

২০ জুন ২০২৪

আযাহা সুলতান

মূল লেখক আযাহা সুলতান

১০৬ 

কোথায় তোমার লয়ের মাঝে মাটি 

রোধ-রোধ-রোধ করে দাও রোধী। 

কোথায় তোমার লাঞ্ছিত সেই জাতি 

         ধন-ধন-ধন্য কর তাদের তুমি॥

 

কোথায় কারা হতভাগ্যে 

         অশ্রেু ভাসছে প্রতিনিয়তে, 

কোথায় মানুষ নিরুপায়ে বিপথগামী 

রক্ষ-রক্ষ-রক্ষা কর ওদের তুমি॥ 

 

কোথায় দেশে অবিচারের বিচারালয় 

চুর-চুর-চুরমারে দাও ভেঙেচুরি। 

কোথায় ত্রাসের রাজত্বটা হচ্ছে বড়ই 

         ধ্বং-ধ্বং-ধ্বংস কর ধ্বংসকারী॥

 

কোথায় কোথায় পীড়াদায়ে 

         ওঠছে দাসত্বেরই মহল গড়ে, 

কোথায় হচ্ছে—হবে মজলুমেতে জুলুমি

রুখ-রুখ-রুখে দাও সর্বনাশে তুমি॥ 

                  ২ বৈশাখ, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত 

১০৭ 

তোমার অতি লাভের অই লোভলালসায় 

ঠকি আমি—ঠকতে রাজি আছি গো ভাই।

         আমায় ঠকাও হে নিঃসঙ্কোচে 

তুমি ঠকিও না নিজেরে নিজে 

জিতে নাও জীবন-বাজারের বেচাকেনায়॥ 

 

এখানে যত যাই-ই করে যাও হেরাফেরি 

ওখানে তত তাই-ই নিতে হবে দুহাত ভরি। 

         হিসাবের হেরফেরে লাভবান 

মনে করা ভুল কেউ বুদ্ধিমান 

পুড়ে সে—যে বিশ্বাসের ঘরে আগুন লাগায়॥ 

                  ৫ বৈশাখ, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত 

১০৮ 

একদিন স্বপ্নে দেখছি 

         ভিখারি হয়ে পথে পথে ঘুরছি,

পাওয়ার লালসে মন বেদিশে ছুটছে না! 

                  আরেকদিন স্বপ্নে দেখছি

         পৃথিবীর মালিক হয়ে বসছি, 

পেতে পেতে পাওয়ার সাধ আর মিটছে না!। 

 

         পাহাড়পর্বত এককরে দৌড়ছি 

লোভে যত বাড়ল লাভের কারবার 

         মনের মধ্যে কমলো তত শান্তির হার, 

                  ‘সুখ’ ‘সুখ’ করে কত খুঁজছি 

         সুখ যে গেল আর আর ফিরে এলো না॥ 

 

ঘুম ভেঙে ভাবছি এবার 

         শান্তি যা কমের স্বপ্নে ছিল আমার, 

সুখ তা বড়ের স্বপ্নে হলো যুদ্ধের ময়দান! 

                  এবার পল এসেছে বলার

         কে কী বুঝেছ বন্ধু হে আমার?

সুখের চেয়ে শান্তির কত কত ব্যবধান!। 

 

         কেমনে বোঝাই যা আমি বুঝছি 

পেতে চাইবে যত বেশি সুখ 

         বাড়বে ততই অশান্তির দুখ, 

                  বড় আশা বড় দুঃখ কেন বলছি 

         বড় বিপদে না পরলে কেউ বুঝবে না॥ 

                  ১১ বৈশাখ, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত 

১০৯ 

তোমাদের মাঝে এসেছিল 

         পথিক এক পথহারা, 

পুরো দিন তোমাদের পাশে থেকে 

                  পেল না সাড়া! 

         চলে গেল মুসাফির পথহারা॥ 

 

এসেছিল প্রেমের সওগাত নিয়ে 

         ফিরে গেল গোপনে অশ্রু ঝরিয়ে!

দরদে দরদে নিজের মনে নিজে 

                  পুড়ে হলো সারা—

         চলে গেল মুসাফির পথহারা॥ 

 

এই শহরে আসেনি কিছু পেতে 

         দিতে এসেছিল মগর, 

পাথেয় কি নিতে পারল কি জানি 

                  বহুদূরে আপন ঘর। 

         ছিল বড়ই এক লম্বা সফর॥ 

 

ফিরে গেল পথিক নিজের ঘরে 

         নিতে পারল কি কিছু উপহারে!

আত্মসম্মানে কী যে ব্যাঘাত হবে 

                  শূন্য হাতে ফেরা— 

         চলে গেল মুসাফির পথহারা॥ 

                  ১৪ বৈশাখ, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত 

১১০ 

শোন হে প্রভু 

                  বান্দার এতটু ফরিয়াদ,

         বান্দা তোমার করছে মুনাজাত।

ভুলেও যে কভু 

                  ডাকেনি তোমায়, 

         জানি না সে কেমনে মুক্তি পায়।

গুনাগার আজ 

         তোমার দরবারে তুলেছে হাত। 

শোন হে প্রভু 

                  বান্দার এতটু ফরিয়াদ॥

 

মাওলা ওগো হে 

                  হে মাওলা আমার, 

         করো না আমারে কঠিনে পার। 

আল্লাহ আল্লাহ ওহে 

                  আল্লাহ রাহিম-রহমান,

         ঝোঁকাও না আমার বাঁ-মিজান।

পথহারা আজ 

         তওবায় ফিরে চাইছে নাজাত। 

শোন হে প্রভু 

                  বান্দার এতটু ফরিয়াদ॥

                  ১৭ বৈশাখ, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত