১১১
চাইছি খোদা তোমার
সেই কঠিনদিনে পার,
হে করুণাময় আমার
ওগো করুণার আধার।
ওই বিচারের ময়দানে
তুমি বড় রোষাননে,
হিসাবের কড়া মিজানে
করবে বান্দার বিচার।
চাইছি খোদা তোমার
সেই কঠিনদিনে পার॥
অপরাধ যদিবা হয়েছে
লাঞ্ছিত করো না আমাকে,
জান্নাত দিয়ো না বরঞ্চে
বাঁচায়ো জাহান্নাম থেকে।
পারি না সইতে তপ্ত এই
সইব কেমনে দহন সেই,
অপরাধীর প্রতি সদয়দৃষ্টে
চাইয়ো শুধু একবার।
হে করুণাময় আমার
ওগো করুণার আধার॥
৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত
১১২
‘কুন
ফায়া কুন’ ফায়া কুন
কুন ফায়া কুন।
অতুলুন
আল্লাহ তুমি ও তোমার বানানোন
কত যে অতুলুন।
কুন ফায়া কুন॥
‘লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া
আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’
কি প্রশংসা করি তোমার ধাতা
তুমি যে কী তুলনাহীন প্রতিষ্ঠাতা,
হয়েই হচ্ছে জাহাঁ আজও প্রসারুণ—
কুন ফায়া কুন॥
‘আল্লাহু
লা-ইলাহা ইল্লা হুওয়াল
হাইয়্যুল কাইয়্যূম’
ভঙ্গ্য
ভঙ্গুর শহরে আগামী কাল
ওড়বে পূর্বের ধোঁয়াধূম।
তুমি হাইয়্যুল কাইয়্যূম॥
‘লাকাদ খালাকনাল ইনসানা
ফি-আহসানি তাকওয়িম’
তোমার মেহেরবানির শোকরিয়া
আদায় করতে পারিনি মানবদুনিয়া,
আবার করবে—করো—করতে পারি পুরুণ—
কুন ফায়া কুন॥
২৪ আষাঢ়, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত
১১৩
ঘর থেকে বের হলে তুমি মানুষ
মিলো মানুষের সাথে,
দেখেছ কি মানুষে বিভেদ?
ঘরে এলে ধর্মকেন্দ্রে জাতীয় হুঁশ
পেলে শত সঙ্কেতে,
নিজেকে প্রশ্ন করেছ আবেদ?।
রক্তমাংসে অভিন্ন মানুষ তুমি
কে তোমারে ভিন্ন করল জানো কি?
জাতের কারিগর কে হে তিনি
একঘরে থেকে পৃথকে
প্রতিষ্ঠা করল নানান ভেদ।
নিজেকে প্রশ্ন করেছ আবেদ?।
জন্ম হয়ে পেলে কি দেখা বর্ণর
জন্মেছ কোন লোকালয়ে?
জেনেছ ক্রমান্বয়ে যত যা;
মৃত্যু তোমাকে দিয়ে গেল খবর
চিতা কফিনে শোয়ায়ে,
রাখল খালি বর্ণের চিহ্নটা!।
স্রষ্টা আছে নির্ভেজাল সত্য এটা
সৃষ্টির দুঃসাধ্য স্রষ্টাকে খুঁজে লওয়া,
সত্যের মাঝে থাকে স্রষ্টার ছায়া
সত্যের পথ অবলম্বনে
আসবে বাধা পাহাড়সমেত।
নিজেকে প্রশ্ন করেছ আবেদ?।
১১ ভাদ্র, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত
১১৪
আমি না ভালো পুত্র হতে পারলাম
না কারও ভালো ভাই!
না হতে পারলাম জায়ার ভালো স্বামী
না পিতা ভালো এতটাই!
যারা আমার লাগি নেমেছে হাঁটু পানিতে
আমি তাদের লাগি পারিনি গলা ডুবাতে,
যাদের লাগি ডুবে গেছি একেবারে
তাদের চক্ষুশূল—দুখটাই!।
আমি কী পেলাম জীবন থেকে
হিসাব করিনি কোনো কাজে;
জীবন দিয়ে যাচ্ছে কী পৃথিবীকে
বসি তার হিসাব মিলাতে।
আফসোস রইল যতই দেওয়ার ব্যর্থতায়
বেহিসাবি থাক গে লেনা পাওয়ার খাতায়,
উপকারীর উপকার করতে পারলাম না
দুঃখ মনে একটাই॥
১৩ আশ্বিন, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত
১১৫
কে আছে পৃথিবীতে—দেখি না তো
আমার মায়ের মতো।
কার আছে—ছিল এ বাসনা মহত্ত্ব
দেয় অন্তর প্রসারিত—
আমার মায়ের মতো॥
চেয়েছে দিতে পৃথিবীকে ভরিয়ে
দুহাত বাড়িয়ে সবটুকু উজাড়িয়ে,
এমন হৃদয়ের মালিক যদি সকলে হতো—
আমার মায়ের মতো॥
মিলত না হয়তো খোঁজাখুঁজি—এলান করি
গরিব আর গরিবি।
থাকত না হয়তো জগতীর কষ্ট—টানাটানি
অভাব আর অভাবী—
গরিব আর গরিবি॥
অন্তরে বাদশা অন্তরে ফকির
অন্তরে কার উত্তমের জিকির,
কীসের ফিকির হাতখোলা যার অনবরত—
আমার মায়ের মতো॥
১৮ আশ্বিন, ১৪২৭—মানামা, আমিরাত