পোস্টস

চিন্তা

কে বড়ো?

২৩ জুন ২০২৪

সাজ্জাদুল করিম

কে বড়ো? বংশে যে বড়ো সেই, নাকি যার টাকা বেশি? স্বাস্থ্য যার ভালো সে, নাকি যার জ্ঞান বেশি? ক্ষমতা, নাকি পেশা? সত্যি বলতে কি- কে যে বড়ো আর কে যে ছোট এই হিসাব করাটাই মুশকিল। একেক জন একেকভাবে চিন্তা করেন বা অন্যভাবে বললে- ব্যক্তির ভিন্নতার সাথে এই প্রশ্নের জবাবও ভিন্ন হয়। কেউ বলবে বংশে যে বড়ো সেই বড়ো, আবার কেউবা বলবে টাকা যার বেশি বড়ো সেই। আরেকজন হয়তো বলবে জ্ঞান, ক্ষমতা, পেশা ইত্যাদি হচ্ছে বড়োত্বের পরিমাপক।

ছবি: ইন্টারনেট

আমরা প্রায়শ শুনে থাকবো-‘বড়ো মানুষ’ হওয়ার কথা। কিন্তু ‘বড়ো মানুষ’ হওয়ার আগে ‘বড়ো মানুষ’ কাকে বলে সেটি তো জানতে হবে। আমার কাছে মনে হয়- মানুষ হিসেবে যে যত বেশি যথার্থতা অর্জন করছে সেই তত বড়ো মানুষ। এ প্রসঙ্গে ‘বড় কে’ কবিতায় হরিশচন্দ্র মিত্র বলেছেন -

“বড় হওয়া সংসারেতে    কঠিন ব্যাপার,
সংসারে সে বড় হয়,       বড় গুণ যার।
গুণেতে হইলে বড়,         বড় বলে সবে,
বড় যদি হতে চাও         ছোট হও তবে।”

 

এখন স্বভাবতই প্রশ্ন হবে মানুষ কাকে বলে? মানুষ বলতে শুধু সুন্দর ও সুঠাম দেহ বিশিষ্ট দুপেয়ে প্রাণীকেই বুঝাচ্ছি না। মানুষ বলতে আমি বুঝি স্রষ্টার এমন এক সৃষ্টিকে যার মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ রয়েছে। যেই গুণগুলি (দয়া-মায়া, প্রেম-ভালোবাসা, মহানুভবতা, উদারতা, জ্ঞান-বুদ্ধি, বিবেকবোধ, চিন্তাশীলতা, সভ্যতা, সৌন্দর্য্যবোধ, শৃঙ্খলা-নিয়মানুবর্ততা, পরিচ্ছন্নতা, সহিষ্ণুতা, সহানুভূতি, লজ্জাশীলতা ইত্যাদি) মানুষকে অন্যান্য সকল প্রাণী বা সৃষ্টি থেকে বিশিষ্ট করেছে সেইসকল গুণাবলীর একটি সামষ্টিক রূপকেই আমি মানুষ বলছি। আসলে মানুষ হতে হলে একইসাথে শারীরিক, মানসিক ও আত্মিকভাবে পরিপূর্ণ এক সত্তায় পরিণত হতে হয়। এই তিনটির সামষ্টিক বিকাশ ব্যতিরেকে সত্যিকার অর্থে মানুষ হওয়া যায় না।

 

সুতরাং শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক বিকাশ সাধনের মাধ্যমে মানুষ তথা বড়ো মানুষ হতে আমরা সচেষ্ট হবো এটাই প্রত্যাশা।