Posts

বাংলা সাহিত্য

‘রৌজা’ গীতিকবিতা পর্ব (২৮)

June 25, 2024

আযাহা সুলতান

Original Author আযাহা সুলতান

১৩৬ 

অই আসমান তাকে ছুঁতে দাও 

যে মানুষের মন ছুঁতে পারবে, 

         এই জমিনে তাকেই ঐশ্বর্য দাও

যে পৃথিবীর উপকারে আসবে। 

         তুমি তো দিলে দিতে পারো জানি

পলকে কারে রাজ্যের বাদশাহি! 

         ছোট করে বলি—আমি ভালো আছি—

         আমার শোকরিয়ার শেষ নেই। 

এই জমিনে তাকেই ঐশ্বর্য দাও 

         যে পৃথিবীর উপকারে আসবে॥ 

আত্মা বড় দেবে? দাও পুরো তাকে 

নিজের ভুলে যে পরের ভাববে, 

         মর্যাদার মালিক করবে? করো তাকে 

যার অন্তরে অন্যের মান বুঝবে। 

         মানুষের মর্যাদা বুঝে না যে—যারা 

পায় আবার মানুষের মর্যাদা তারা! 

         জোরগলায় বলতে পারি একথা—

         ধনরাজ্যের মালিক বনে কারুনে।

এই জমিনে তাকেই ঐশ্বর্য দাও 

         যে পৃথিবীর উপকারে আসবে॥ 

                  ৩ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৩৭ 

অগায়কে গায়কিগলা দাও 

অশিল্পীকে বানাও মহাশিল্পী, 

         অকবিকে কবিত্ব কী শেখাও 

বোঝা দায় তোমার কারিগরি—

সত্যি বড় কারিগর প্রভু তুমি!। 

         বুদ্ধির সাগরে সাঁতারে কাকে

         বোকার তকমা লাগাও পলকে, 

শিক্ষায় পাণ্ডিত্য মস্তবড় করে 

         একটুতে দেখাও আবার মূর্খ্যামি—

         সত্যি বড় কারিগর প্রভু তুমি!।

অজ্ঞানীকে জ্ঞানী করে কত 

জ্ঞানীকে অজ্ঞানীতে নামাও, 

         অসম্মানীকে সম্মান দিয়ে যত

সম্মানীকে কী যে লাঞ্ছিত করাও—

সাধ্য না তোমায় বোঝার মতো!। 

         কাঙালকে রাজ্যবান করে বড় 

         রাজ্যের মালিকে রাজ্যহারা কর,

অহংকারীকে ডুবায়ে জলে আরও 

         জগতীর জন্যে বানাও নিদর্শনী—

         সত্যি বড় কারিগর প্রভু তুমি!।

                  ৮ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৩৮ 

গাওয়ালে, গাওয়াও আরও গান 

                  হে মহামহিম সুরকার!

মনোবীণা নিচ্ছে জিকিরের টান 

         সচল রেখো হৃৎযন্ত্রের তার!

গানের মধ্যে তোমায় খুঁজি 

         গানের মধ্যে তোমায় পূজি, 

গানে গানে হলাম—হয়ে নি 

         দিওয়ানা ও গাগল আর—

                  হে মহামহিম সুরকার॥

বুঝি না বুঝি না গাই কী মাথামুণ্ডু 

                  তুমি সুর দাও বলে গাই শুধু! 

বলি, গাওয়াও যখন ভালোবেসে বন্ধু 

         গাইতে পারি যেন আমৃত্যু। 

হয়তো রেখেছ তাতে এবাদত 

         নাহলে কেন এত মহব্বত, 

বাদকও তুমি—শ্রোতাও তুমি 

         তুমি বাজালে বাজে বেতার—

                  হে মহামহিম সুরকার॥

                  ১২ চৈত্র, ১৪২৭—         ডি সি রোড, চট্টগ্রাম

১৩৯ 

আল্লাহ আল্লাহ যতই জপি ততই কী ভালো লাগে 

এ নাম জপনে কী যে শান্তি মনে বোঝাব কেমনে! 

         কোকিলের স্বর কী মধুর রে 

                  হয়তো আল্লাহর সেই জিকিরে 

বাগে ফুটে কুসুমকলি আল্লাহ নামেরই অনুরাগে।

এ নাম জপনে কী যে শান্তি মনে বোঝাব কেমনে॥ 

আল্লাহ আল্লাহ আল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ইল্লাল্লাহু 

যতই জপি ততই কিরে প্রশম-প্রশান্তি এই মনে বহু! 

         এ নামের সেই জিকিরগানে 

                  পাড়ি দেবে যে পরজীবনে

থাকবে সে রহমানের রহমতেরই ছায়াময় বাগানে। 

এ নাম জপনে কী যে শান্তি মনে বোঝাব কেমনে॥ 

                  ১৫ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৪০ 

নমস্য নমস্য 

         বিধির সব সৌন্দর্য, 

                  নমস্য নমস্য 

         মাতাপিতা অবশ্য। 

নমস্য নমস্য 

         সৃষ্টি যেসব শ্রেষ্ঠ, 

                  নমস্য নমস্য 

         মানুষ যেসব স্পষ্ট। 

নমস্য নমস্য 

         স্রষ্টা যারা উপহাস্য। 

                  নমস্য নমস্য 

         বিধির সব সৌন্দর্য॥ 

নমস্য নমস্য 

         কষ্টে চলে সহাস্য, 

                  নমস্য নমস্য 

         দুঃখে স্থির মানস্য। 

নমস্য নমস্য 

         কর্মে যারা নিষ্ঠ, 

                  নমস্য নমস্য 

         সৃষ্টে যারা বলিষ্ঠ। 

নমস্য নমস্য 

         জগতে যা প্রশস্য। 

                  নমস্য নমস্য 

         বিধির সব সৌন্দর্য॥ 

                  ১৮ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

Comments

    Please login to post comment. Login