পোস্টস

বাংলা সাহিত্য

‘রৌজা’ গীতিকবিতা পর্ব (২৯)

২৬ জুন ২০২৪

আযাহা সুলতান

মূল লেখক আযাহা সুলতান

১৪১ 

করেছি যা অপরাধ কদম-কদমে, 

প্রভু ক্ষমা করলে ক্ষমা মিলে অধমে। 

         হে খোদা আমায় মাফ করে দে, 

হে খোদা আমায় মাফ করে দে॥ 

 

         শুনেছি দয়াল তুমি বড় দয়ালু

তোমার দয়ার কাছে বড় না কিছু; 

         ক্ষমা করতে পারো তুমি বড় দোষীকে—

         হে খোদা আমায় মাফ করে দে, 

হে খোদা আমায় মাফ করে দে॥ 

 

ক্ষমা পাওয়ার কী তোমার খাস ভাষা, 

তুমি মনে ওঠিয়ে বলাও এ মুখ দিয়ে তা। 

         মেহেরবান আছে তোমার মতো কাঁহা,

মেহেরবান আছে তোমার মতো কাঁহা॥ 

 

         যত গুনাগারই বান্দা হয়-না কেন

তোমার ক্ষমার কাছে খুবই নগণ্য; 

         বান্দা তো করে না দোষ বুঝেসুজে— 

         হে খোদা আমায় মাফ করে দে, 

হে খোদা আমায় মাফ করে দে॥ 

                  ১৯ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৪২ 

তোমার আদালতে সূক্ষ্ম বিচার হবে যেদিন 

         বিচারের কাঠগড়ায় আমি আসামি সেদিন, 

কী বিচার করবে আমার বিচারক প্রভু তুমি 

পুণ্যের খাতায় তো শূন্য ছাড়া পাবে না খুঁজি!। 

 

যা কিছু করলাম এ সাধন-শোধনে অর্জন 

         কাজে আসবে না হয়তো এ আমার উপার্জন,

দরদভরা ছলছল জলচোখে চেয়ে যদি থাকি—

কী বিচার করবে আমার বিচারক প্রভু তুমি॥ 

 

সইতে পারি না যেখানে এতটু রৌদ্রতাপ 

         সইব কেমনে বল সেই বারো সূর্যের উত্তাপ, 

এত বড় দিলের অধিকারী হয়ে বিভু তুমি 

বান্দারে দিতে পারবে এমন কঠোর শাস্তি!। 

 

মনে তো হয় না এত নির্দয় হতে পারবে 

         বিশ্বাসীবান্দা যাক-না ডুবে যত গুনাগুনাহে, 

মন শুধু বলে একথা—দয়াময় বিরাট দরদি—

কী বিচার করবে আমার বিচারক প্রভু তুমি॥ 

                  ২১ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৪৩ 

আজানের সুর কী সুমধুর 

শোনাচ্ছে মুয়াজ্জিন পাঁচ বেলা আজান, 

এ আজানে আছে জীবন ক্ষয়ের আহ্বান 

         শুনেও বুঝবে না মূঢ়! 

 

প্রতিটি আজানে কম্পন 

যার ভেতরে হবে না সে ইমানে দুর্বল, 

নামাজেই করবে তারে শয়তানে দখল 

         নামাজেরই এটা বিশেষণ॥ 

 

মসজিদে দিলে দৌড় 

হওয়া যায় মসজিদি—খাঁটি নামাজি নই 

বান্দা বনা কঠিন—বন্দেগি হোক-না যতই

         কপালকালো এদ্দূর! 

 

দুহাতে তসবির জপন 

একওয়াক্ত ছুটে গেল হায়—কী আফসোস 

কাল হাশরে জবাব দেবো কী—প্রাণে উশখুশ 

         মুনাফেকের আরেক লক্ষণ॥ 

                  ২২ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৪৪ 

প্রভু 

         কীজন্যে আর? 

         লও বুঝে এবার 

         তোমার এ দায়িত্বভার। 

কভু 

         পাঠালে ধরণিতে 

         শতাব্দি-পর-শতাব্দিতে 

         আমার মতো বেকার?। 

 

         নীরবে ও নিভৃতে 

         চলে গেল অশ্রুতে 

         মনে রাখল না সংসার—

প্রভু 

         কীজন্যে আর?। 

 

যাসব 

         এ করাচ্ছ নিশ্চয় 

         কাজে আসবে না মনে হয়? 

         মানুষ চায় মানুষের ক্ষয়! 

এসব 

         কাজকর্ম আমার 

         হয়তো মনোনিত তোমার? 

         মানুষের কাছে কিছু নয়!। 

 

         এটাই নিয়মধারা 

         মানুষ বলে আমরা 

         মনে রাখি না উপকার—

প্রভু 

         কীজন্যে আর?। 

                  ২৪ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৪৫ 

প্রতিটি মুহূর্তে কাঁদছে মন আমারি 

কেমনে যাই এই মায়ার বাড়ি ছাড়ি! 

         প্রিয়জনদের মাঝে কত ওঠাবসা

         প্রিয়জনদের সাথে কত হাসিঠাট্টা,

কেমনে থাকব হয়ে চিরনিভৃতচারী! 

প্রতিটি মুহূর্তে কাঁদছে মন আমারি॥ 

 

প্রিয়ের এত হাসাহাসি—পাশে বসি 

একটুতে আবার অভিমান করে কী! 

         প্রিয়ের এই ভালোবাসাবাসি কী মধুর 

         এই ভালোবাসাতে নেই বেদনার সুর,

এমন আনন্দজীবন নেবে তুমি কাড়ি! 

প্রতিটি মুহূর্তে কাঁদছে মন আমারি॥ 

                  ২৫ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম