পোস্টস

বাংলা সাহিত্য

‘রৌজা’ গীতিকবিতা পর্ব (৩০)

২৭ জুন ২০২৪

আযাহা সুলতান

মূল লেখক আযাহা সুলতান

১৪৬ 

প্রতিদানের আশা করছি না কোনো 

কিছু নেই আমার দানের প্রাপ্য। 

তবু তোমার দয়ার আশা রাখছি বড় 

         না থাক আমার এতটু পুণ্য॥ 

 

মিলে মিলুক-না স্থান ওই ওখানে 

এখানেও থাকবে প্রত্যাশা বড় মনে, 

যে-কোনো উপায়ে পার করবে তুমি 

         নাহলে তুমি রহমান কেন—

         না থাক আমার এতটু পুণ্য॥ 

 

কিছু নিতেই পারি নে যেখান থেকে 

সেখানে কীসের হাজি আর গাজি। 

যা নিয়ে যাচ্ছি হয়তো আমলের ভারে 

         হবে ওয়াল দোজখের খুঁটি॥ 

 

‘চা’ চাইব না লাসভেগাসের জিন্দেগি 

দিলেও খুশি চট্টেশ্বরীর নিরিবিলি বাড়ি, 

না দিলেও ভালো—কোনো দুঃখ নেই 

         তোমার আনন্দে আমার আনন্দ—

         কিছু নেই আমার দানের প্রাপ্য॥

                  ২৭ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৪৭ 

মালিক, 

         আমার সব মালিকানাই দিয়ে যাচ্ছি

                  কিছুই নিচ্ছি না।

খালিক, 

         তুমি খালি হাতেই পাঠিয়েছিলে

                  খালিই যাচ্ছি না।


রেখে যাচ্ছি সুলতানি-প্রাসাদ 

         এতটু পেরেছি করেছি আবাদ, 

এলেও 

         আসতে পারে কার উপকারে 

                  না এলে না। 

মালিক, 

         আমার সব মালিকানাই দিয়ে যাচ্ছি

                  কিছুই নিচ্ছি না॥

 

পাওয়ায়, 

         বলতে ইচ্ছে হয়—পৃথিবীর বাদশাহি 

                  দিলে না আমায়। 

দেওয়ায়, 

         নিজেকেও দিয়ে যেতে না পারলে

                  কী দেওয়া তাই। 


‘আমার’ ‘আমার’ করে জমিয়ে 

         শান্তি নেই যাওয়ায় এতটা রাখিয়ে,

কালকে 

         হিসাবের ভারী দপ্তর বইতে কেউ

                  এগিয়ে আসবে না। 

মালিক, 

         আমার সব মালিকানাই দিয়ে যাচ্ছি

                  কিছুই নিচ্ছি না॥

                  ২৮ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৪৮ 

         আমার এ গান 

তোমার মনে পাবে কি একটু স্থান? 

                  গাইলাম যা এতখান!

         আমার এ গান। 

 

         তাল-লয়-সুর বেতালে ঘোর 

স্বরলিপির ভুল পারিনি করতে দূর, 

                  মুখ্য-অন্তরা রইল ছন্দহারা বেজান—

         আমার এ গান॥ 

 

         গানের আগামাথা কী বুঝি 

তুমি গাওয়ালে বলে গেয়েছি এতটি। 

                  হবে কি বন্দেগি এ গায়কি? 

         গানের আগামাথা কী বুঝি। 

 

         আমার কণ্ঠ তোমার সুর 

দুয়ের ভালোবাসায় এলাম এতদূর, 

                  তবেই বুঝি দুয়ের ভালোবাসার টান—

         আমার এ গান॥ 

                  ২৯ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

১৪৯ 

ইয়া—

         ইয়া এলাহি, ইয়া এলাহি 

                  চাইছি দয়া চাইছি।

ইয়া—

         ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি 

                  জপছি মালা জপছি। 

         জান নেই জানের সনে 

                  প্রাণ নেই প্রাণের মনে, 

আমার—

         কী হবে, কী হবে গতি 

                  কাঁপছি ভয়ে কাঁপছি—

         জপছি মালা জপছি॥ 

 

এই—

         এতখানি, এতটু জিন্দেগানি 

                  ভুলাল কী মোহে নাজানি।

অই—

         মন্ত্রণাকারী, পথভ্রষ্ট দিশারি

                  পালাল পিঠ দেখিয়ে দৌড়ি। 

         হায় হায়—কণ্ঠ শুকায় 

                  এখন আমার কী উপায়,

কখন—

         কী করতে, কী কর তুমি 

                  মরছি ডরে মরছি—

         জপছি মালা জপছি॥ 

                  ৩০ চৈত্র, ১৪২৭—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

 

সমাপ্ত