পোস্টস

বাংলা সাহিত্য

শঙ্খবীণা (১)

২৮ জুন ২০২৪

আযাহা সুলতান

মূল লেখক আযাহা সুলতান

১ 

পরম করুণাময়—অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু

আমার প্রতিপালক নিশ্চয় ক্ষমাশীল ও দয়াবান; 

সকল প্রশংসা তোমার, তুমি সৃষ্টিকুলের স্রষ্টা প্রভু

তুলনাহীন—কত সুন্দর কোরানের বাণী—ফুরকান॥ 

 

‘আমরা তোমারই এবাদত করি এবং সাহায্য চাই 

আমাদেরকে সরলপথ দেখান’ যেপথে আছে ঠাঁই, 

‘এ সেই গ্রন্থ, যাতে কোনো সন্দেহ নাই’ আশেকান 

‘পুণ্যময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব’ তুমি মহান॥ 

 

আমি তোমাকে ভয় করি—অঙ্গীকার পূর্ণে চেষ্টা করি 

দেখছি—খুঁটিহীন আসমান দাঁড় করেই রেখেছ তুমি,

তোমার সৃষ্টে কোথা খুঁত নেই—নিশ্চিত বলতে পারি 

আসমান ও জমিন—আঁধার-আলো তোমার অপূর্ব সৃষ্টি॥ 

 

‘সুনিশ্চিত কী? তুমি কি জানো সুনিশ্চিত ঘটনা কী?’

‘কেয়ামত’ আমরা বিশ্বাস করি—আমরা বিশ্বাসীজাতি। 

‘পরম করুণাময় আল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন কোরান’ 

যে শুনে-কি-পড়ে সে হতে পারে পুণ্য ও পুণ্যবান॥ 

 

‘কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে তোমরা’ 

না, তোমার কোনো অবদানকে অস্বীকার করি না, 

তোমার শোকরিয়া আদায় করতে পারি হরহামেশা 

নাফরমান যেন না হই যত দুঃখকষ্টে কেন থাকি না॥ 

 

কত কতই মধুর—কী সুমধুর আল্লাহ তোমার বাণী 

যতই শুনি ততই মন বলে আরও শুনি আরও শুনি। 

‘তারা কি দেখে না’ হাঁ, দেখেই তো আমি বেজবান 

মানুষ বেইমান—ফেরেশতা এলেও বলত আরেকখান॥ 

                  ২২ কার্তিক, ১৪৩০—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম 

২ 

কিছু কিছু কথা—কিছু কিছু সুখ 
কিছু কিছু দুঃখ ভুলে না বুক, 
কিছু কিছু আশা পূরণ হয় না জীবনে 
কিছু কিছু ভালোবাসা রয়ে যায় মনে—
পেতে নেই জীবনে—স্মরণে থাকুক। 
কিছু কিছু কথা—কিছু কিছু সুখ॥ 

ভুলা যায় ভুলা যায়—ভুলা যায় না অনেক 
চলার পথে কিছু দেখা পিছুটানে আবেগ, 
বাঁধতে গেলে ছিঁড়ে আবেগের রশি 
বিরহী মন বাজায় শুধু দূরত্বের বাঁশি—
ভুলেও ভুলা যায় না চেনা কতক মুখ। 
কিছু কিছু কথা—কিছু কিছু সুখ॥ 

                  ২৪ চৈত্র, ১৪১৪—মানামা, আমিরাত 

৩ 
দুঃখ পেলাম যত যা আমি এ জীবনে 
সুখ বলে জড়িয়ে নিয়েছি বুকের মধ্যিখানে। 
হলাম যা ঘৃণ্য ভালোবাসার জন্য 
সেই ঘৃণায় ফুটিয়েছি ফুল অনন্য 
মিলেছে ‘বন্য’ উপাধি তবু ধন্য হলাম মনে॥ 

জীবনের যশখ্যাতি কতক্ষণ থাকে বরাতে 
কষ্ট স্পষ্ট আছে—থাকবে জীবনের পদেপদে। 
আমার জ্বলনে যদি কই নগর আলোকিত 
হাসিয়ে জ্বলে যাব করব না ওহ শব্দ 
বাঁচিয়ে পারি না—মরিয়ে সারা কলঙ্ক ঘুচাব ক্ষণে॥ 

                  ২১ আষাঢ়, ১৪১৫—মানামা, আমিরাত 

৪ 

সাগর হতে পারো তুমি 

         আমি তবে সাগরের গভীরতা। 

হতে পারো তুমি জলকল্লোল 

         আমি তবে কলের আত্মা—

                  হে আমার কবিতা॥ 

 

নগরী হতে পারো তুমি 

         আমি তবে নাগরিক, 

                  নাগরিক হলে তুমি 

আমি উপযুক্ত ছাউনিক। 

         তুমি ছাউনি হলে তো 

                  আমি তোমার ধরনা, 

ধরনা হলে তুমি 

         আমি সেই এবাদতখানা—

                  হে আমার বন্দনা॥ 

 

ছায়া হতে পারো তুমি 

         আমি তবে কায়া। 

কায়া হলে তুমি 

         আমি তোমার মায়া—

                  হে আমার ছায়া॥ 

 

আসমান হতে পারো তুমি 

         আমি তবে মেঘমেদুর, 

                  হলে তুমি মেঘমেদুর 

আমি তখন বারিধারাসুর। 

         তুমি বারিধারা হবে তো 

                  আমি তবে ঝরঝর ঝরনা, 

ঝরনা হলে তুমি 

         আমি উৎসপ্রাণের উন্মাদনা—

                  হে আমার কামনা॥ 

                  ১৪ শ্রাবণ, ১৪১৫—মানামা, আমিরাত 

৫ 

ও আমার সবুজশ্যামল বাংলাদেশের পল্লীভূমি 

কী অপরূপ স্নিগ্ধরূপে রূপসী তুমি—ওগো তুমি। 

     বাঁশের ঝাড়ে বকের সারি 

         কাননঘেরা বাগানবাড়ি, 

আমায় মুগ্ধ করে তোমার পদ্মদিঘির জলকলমি। 

ও আমার সবুজশ্যামল বাংলাদেশের পল্লীভূমি॥ 

 

মাঠের অই ঈশানকোণে চরে বাছুর ও গাভী 

জলের সেই ডোবার বুকে ভাসে ছায়ার ছবি। 

     শাপলাবিল আর বাবলাগাছে 

         মন হরে নেয় খঞ্জননাচে, 

আমি ধন্য ওহে ধন্য রূপের সেই সে ললাটচুমি। 

ও আমার সবুজশ্যামল বাংলাদেশের পল্লীভূমি॥ 

                  ২২ শ্রাবণ, ১৪১৫—মানামা, আমিরাত