হাজার বছর পরে
হয়তো আবার দেখা পাবে আমার
এ করুণার বাসভূমে হয়তো আর আসব না ফিরে
এ বাংলার লোকালয় তখন হয়তো রবে না
রবে না হয়তো এদেশের কোনো চিহ্নপ্রতীক
রবে না
রবে না হয়তো জাতিভেদের কোনো ভেদাভেদ
রবে না রবে না হয়তো মানুষে মানুষে বিবেদবিদ্বেষ
রবে না মৃত্তিকায় কেউ রবে না অট্টালিকার আত্মগরিমায়
ধনীগরিব উঁচুনিচু আর্য-অনার্য প্রভেদ ভুলে মনুষ্যজাতি হবে এক
তখন?
তখন হয়তো পৃথিবীর আরেক দেশে জন্ম হবে আমার অন্যরূপে
তুমি হবে আরেক—হয়তো রবে দূরে—কিবা—তবু হৃদয়ের কাছে
তোমার আঙিনার হলুদবনের গুলঞ্চলতার ফুলটিরে ভালোবাসবে তুমি
হয়তো সে আমি, অনুভবে সকল অনুভূতি করবে বন্ধু স্মরণ—
তখন
খেয়াল করো ওই পথের ধারে কলমিডাটায় বসে আছে যে-ফড়িং
তোমার বাড়ির উঠোনে শজনেগাছে বসে আছে যে-হলুদ পাখিটি
কিবা বসে আছে পেয়ারাডালে—বারবার উঁকি দিচ্ছে ওই ঘুলঘুলিতে
অথবা তোমার চলার পথে দ্রোণফুল হয়ে জড়িয়ে আছে পায়ে
টের পাবে না তুমি
যে-ভালোবাসার সমাধি হতে চলে যাচ্ছি আজ প্রেমহীন গহিনারণ্যে
জেনে রেখো প্রিয়, সেখানে হবে হয়তো আমার বেদনার কবর—
এই যে এ বিদায়ের পল, এই যে এ অপূর্ণ ভালোবাসাবিকল
যদি কখনো পূর্ণ হয়—হতে পারে—হবে তবে ওই ধরাধামে
অথবা না হোক কবে
এ জগজ্জড়তার ছত্রছায়ায় চাই না একবিন্দু ঠাঁই
চাই না নির্দয়ের কাছে করুণার কড়িমাত্র পাথেয়
চাই না বিরূপ এ চরাচরে মানবরূপে জন্ম নিই আবার
ধর্মান্ধতার জাঁতিকলে বলির মৃগ হতে চাই না পুন
বন্ধু তবে
আমায় যদি মনে পড়ে কবে—দেখো ওই নক্ষত্রের প্রাঙ্গণে
জোনাকির আলোর মতো জ্বলছে মিটিমিটি—দলেদলে করছে নর্তন
হয়তো সেখানে আমি একজন ভালোবাসার মশাল জ্বেলে
প্রিয়তমের প্রতীক্ষায় বসে আছি আহ্লাদে শুধু আহ্লাদের ঘরে
মনে রেখো
সেদিন ফুটবে না আর কোনো বেদনার নীলোৎপল
আসবে না আর কোনো বিদায়ব্যথার করুণমুহূর্ত
যেতে হবে না দূরে—অনেক দূরে প্রিয়জন ছাড়ি
আজ যেতে বাধ্য—নেই কোনো উপায়—কোনো সামর্থ্য
বন্ধু যাই
অপরাধী আমি নই—তবে ভাবো যদি অপরাধী
মানি বিধিলিখন, ধন্য তবে ধিক্কারের বাণী যদি পাই
আবার জন্ম যদি সত্যি হয় চাই না এ হিংস্রজীবন
পুনর্জন্মে যদি আসি মাছরাঙা হয়ে ওই নদীটির কিনারে
ধন্য সেই জনম
১৪/৪/২০১৬—ডি সি রোড, চট্টগ্রাম