পোস্টস

কবিতা

নারাজ

৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আযাহা সুলতান

মূল লেখক আযাহা সুলতান

নীরব থাকতে পারিনি—পারলাম না আর 

 

সান্ত্বনার বাহুডোরে শান্তি গেছে হারায় 

মনটা জখমে জখমে ভরে গেছে বুকের আধার—

মায়ের আঘাতের জখম 

ভাইয়ের আঘাতের জখম 

বোনের আঘাতের জখম 

পাড়াপ্রতিবেশির আঘাতের জখম 

এ জখমের রং এতটাই গাঢ়! 

অসহ্য হতে হতে একদিন—অনেক দিন আত্মহননে গেছি বারবার 

বোমের মতো ফেটে হতে চেয়েছি ধ্বংসস্তূপে ছাই 

চিন্তার কৃষ্ণগহ্বরে ডুবতে ডুবতে পারিনি আবার 

 

ছোটবেলায় দেখেছি বাবার মৃত্যু 

 

তারপর ছুটছি শুধু ছুটছি 

কষ্টের পাহাড় বুকে চেপে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি 

যাদের অন্নজোগানে কলুর বলদের মতো দিনরাত খাটছি

পথের কুকুরের মতো তাড়না পেয়েছি 

হাজার লাথিঝাঁটা খেয়েছি 

তারা স্বর্গ পেয়ে ধাক্কা দিলো আমায় নরককুণ্ডে! 

আমি তলিয়ে যেতে যেতে বুঝেছি আপনের মায়া 

দেখেছি আপনের বিষেভরা হাত

দুনিয়াঘাটের রূপ 

হাসতে হাসতে ডুবেছি আমি—

হা-হা-হা—আমার অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছে নরককুণ্ড? 

হেসেছি ভাগ্যের ওপর 

ভাগ্য কত যে হতে পারে নিষ্ঠুর 

 

ভাই হোক—বন্ধু হোক—আত্মীয়-অনাত্মীয় যাই হোক সকলেই সুবিধার মাঝ 

 

দুনিয়াকে খুব কাছ থেকে দেখেছি আমি 

না, নেই—আমার দেখাতে কোথা কোনো ভুল নেই

কেউই বলে না—বলবে না—সত্যটা বাজ 

‘অমানুষ বলি না 

মানুষের সন্তান তোরা মানুষ হলি না’ 

শুধু বলে—বলবে—স্রষ্টা তোমায় রাখবে না গর্তে 

আমি সান্ত্বনাদের বলি—বলব—পেটের ক্ষুধা পিঠে সয় না 

পেটে ক্ষুধা লাগলে পিঠ থাপড়ালে ক্ষুধা মিটে না 

স্বার্থপরের জিন্দেগি উন্নত—স্বার্থ যাদের কাছে সন্তানের মতো 

তারা বুঝেও বুঝে না—কোনো কোনো সন্তান হয় মা-বাবার কাল 

বুঝেও বুঝে না—কোনো কোনো মা-বাবা হয় সন্তানের কাল 

স্বার্থটা কারও কোনো কাজে আসেনি—আসবে না 

তারা বুঝে তবে বুঝবে না—

 

দুনিয়াটা স্বার্থেই ভরা 

 

আমার দুঃখ এখানে-ওখানে—কোনো আশ্রমে নেই—

আছে—থাকবে—ভাইয়ের স্বার্থপরতা ও মায়ের পক্ষাবলম্বনের আঁচলে 

এখানে আমার নারাজি—আমি নারাজ 

সত্যিই কোনো কোনো বুকের ধন হয় পিঠের আঘাত 

সত্যিই হয়?

না, থাক...

দুহাতে মুখটা চেপে ধরলাম এবার  

আমার মৃত্যুতে অনেকে রাজ 

২১/৭/২০২০—ডি সি রোড. চট্টগ্রাম