আমাদের স্কুলের ঠিক মাঝখানে বিশাল বটগাছটি
আজও মনে করিয়ে দেয়, সেই দিনের কথা।
বটগাছটির শীতল বাতাসে নীলিমার উন্মুক্ত চুলগুলো
যখন বাতাসের স্পর্শে শূন্যে উড়ছিল ,
তখন আমার বুকের গভীরে জন্ম নিচ্ছিল হাজারো কবিতা।
নীলিমা ছিল আমার জীবনের প্রথম প্রেম—
জ্যোৎস্না ছড়ানো চাঁদ,
বাদল দিনের বৃষ্টি,
হেমন্তের ভোরের প্রথম আলো,
অন্ধকার রাতের জোনাকি।
একদিন নীল রঙের খাতা দেখিয়ে বলেছিলাম,
“এই দেখ, তোর জন্য একটি কবিতা লিখেছি।”
তখন সে মিষ্টি হেসে বলেছিল,
“কবিতা? নাকি তোর অজানা গল্প?”
তার মিষ্টি হাসির ঝলকে আমার হৃদয়ের বসন্তবাগানে
ফুটেছিল অজস্র রঙিন ফুল।
মনে হয়েছিল, তার দুষ্টুমিমাখা প্রশ্নগুলো
আমার হৃদয়ের সব জমানো কথা শুনে ফেলেছিল।
কিন্তু হঠাৎ একদিন,
নীলিমা উড়ন্ত প্রজাপতির মতো
ডানা মেলে উড়ে গেল দূরের কোনো অজানা শহরে।
হয়তো সেখানে সে বসতি নির্মাণ করেছে, অন্য কারো সঙ্গে।
তার চলে যাওয়াতে,
স্কুলের শেষ ঘণ্টাটা যেন বেজে উঠেছিল,
আর থেমে গিয়েছিল
আমার জীবনের প্রথম কবিতাটিও।
আজও, বহু বছর পর,
স্কুলের সেই বটগাছের নিচে বসে
খুঁজে ফিরি ফেলে আসা দিনগুলো।
পুরোনো খাতার পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে দেখি,
তার নামের পাশে আমার কান্নার দাগগুলো শুকিয়ে গেছে।
নীল রঙের খাতার প্রতিটি পৃষ্ঠায় লেখা সেই একই প্রশ্ন—
“নীলিমা, তুই কি জানিস?
তোর জন্য একটি কবিতা লিখেছি।