Posts

নন ফিকশন

ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাৎকার, নিয়েছেন টাকার কার্লসন - পর্ব ১ (রাশিয়া এবং ইউক্রেনের ইতিহাস)

February 20, 2025

মো; আহসান-উজ-জামান

Original Author ভ্লাদিমির পুতিন, টাকার কার্লসন

Translated by আহসান উজ জামান

77
View

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই প্রথম পশ্চিমা মিডিয়ার মুখোমুখি হলেন। মার্কিন সাংবাদিক টাকার কার্লসন এর নেয়া সাক্ষাৎকারটি অনেক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ কারণ পুরো ঘটনাটি রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও দেখা জরুরী, যা অনেক সময়ই সম্ভব হয় না পশ্চিমা মিডিয়ার আগ্রাসী এবং একমুখী প্রচারণার জন্য। 


 

সাক্ষাৎকারটি বেশ দীর্ঘ হওয়ায় ধাপে ধাপে প্রকাশ করছি। কলেবর যাতে বেশি দীর্ঘায়িত না হয় সেজন্য কিছুটা পরিমার্জনাও করা হয়েছে, তবে গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছু বাদ দেয়া হয় নি। আশা করি সবাই ধৈর্য সহকারে পড়বেন এবং মতামত জানাবেন।


 

টাকার কার্লসন:

ক্রেমলিনে গত ৬ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ তারিখে সন্ধ্যা ৭:০০ টায় রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের একটি সাক্ষাৎকার নেই আমি। সাক্ষাৎকারটি দেখার পোঁর আপনি জানতে পারবেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ কীভাবে শুরু হয়েছিল, কী ঘটছে এবং কীভাবে তা শেষ হতে পারে। দেখার আগে ছোট্ট একটা কথা।


সাক্ষাৎকারের শুরুতে সরাসরি জানতে চেয়েছিলাম, কেন আপনি ইউক্রেন আক্রমণ করলেন? হুমকি বোধ করছিলেন, এটাই আপনার যুক্তি? উনার উত্তর আমাদের বেশ অবাক করে দেয়। পুতিন বেশ দীর্ঘ সময় ধরে, সম্ভবত আধা ঘন্টা ধরে ৮ম শতাব্দীর রাশিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে কথা বলেছিলেন। সত্যি বলতে কী, আমরা ভেবেছিলাম উনি প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দেয়ার জন্য অযথা সময় নষ্ট করার কৌশল বেছে নিয়েছেন। ব্যাপারটা কিঞ্চিৎ বিরক্তিকর মনে হওয়ায় বেশ কয়েকবার থামিয়ে তাকে অন্য প্রসঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিলাম। তিনিও অবশ্য কথার মাঝে বাধা দেয়ার ব্যাপারটি পছন্দ করেন নি।


তবে শেষমেষ স্পষ্ট হলো, উনি অযথা সময় নষ্ট করছিলেন না। কারণ সাক্ষাৎকারের কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমাই ছিল না। সাক্ষাৎকার নেয়া শেষ হওয়ার পর মনে হলো, পুতিন যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিষয়টি দেখছেন সেটি আমাদের ও জানার প্রয়োজন আছে। সবার প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে সাক্ষাৎকারটি সেভাবেই দেখার।


 

Putin Spotted Using Hand To Put Leg in Place During Tucker Carlson  Interview - Newsweek

সাক্ষাৎকার শুরু:
মিঃ প্রেসিডেন্ট, আপনাকে ধন্যবাদ। ২২শে ফেব্রুয়ারী, ২০২২ তারিখে, ইউক্রেনে সংঘাত শুরু হওয়ার সময় আপনি আপনার দেশের উদ্দেশ্যে জাতীয় ভাষণে বলেছিলেন, আপনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে ন্যাটোর মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দেশের উপর হঠাৎ আক্রমণ শুরু করতে পারে। আমেরিকানদের কাছে কথাটি শুনতে কিন্তু বেশ অদ্ভুত লাগছিল। আপনি কী আমাদের বলবেন কেন আপনি বিশ্বাস করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ রাশিয়ায় আক্রমণ করতে পারে? আপনি কীভাবে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন?

ভ্লাদিমির পুতিন:

বিষয়টি এমন নয় যে আমেরিকা রাশিয়ায় হঠাৎ করেই হামলা চালাতে যাচ্ছিল। আমি কিন্তু তা বলিনি। আচ্ছা বলুন তো, আমরা কি কোনও টক শো করতে যাচ্ছি নাকি আন্তরিকতায় পূর্ণ কোন আলোচনা?

টাকার কার্লসন:

আমি কিন্তু আপনার উক্তিটি হুবুহুই তুলে ধরেছি।

ভ্লাদিমির পুতিন:

আমি যতদূর জানি, আপনার মূল পড়াশোনা ইতিহাসের উপর, তাই না?

টাকার কার্লসন:

হ্যাঁ।

ভ্লাদিমির পুতিন:

যদি আপত্তি না থাকে, তাহলে বোঝার সুবিধার্থে আমি ইতিহাসের উপর একটু সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো, বেশি না মাত্র ৩০ সেকেন্ড বা এক মিনিট সময় নেব, যাতে আপনি ঐতিহাসিক পটভূমি খানিকটা বুঝতে পারেন।

টাকার কার্লসন:

অবশ্যই।

ভ্লাদিমির পুতিন:

দেখা যাক ইউক্রেনের সাথে আমাদের সম্পর্কের শুরু কোথা থেকে। ইউক্রেন এলোই বা কোথা থেকে? রাশিয়ান রাষ্ট্র একটি কেন্দ্রীভূত রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের একত্রিত করতে শুরু করে ৮৬২ সাল থেকে এবং এই বছরকেই রাশিয়ান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বছর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৮৬২ সালেই নভগোরোডের অধিবাসীরা স্ক্যান্ডিনেভিয়ার এক ভারাঙ্গিয়ান রাজপুত্র ‘রুরিক’কে আমন্ত্রণ জানায় তাদের শাসনভার গ্রহণের জন্য। ১৮৬২ সালে রাশিয়া তার রাষ্ট্রত্বের ১০০০তম বার্ষিকীও উদযাপন করে। নভগোরোডে কিন্তু দেশের ১০০০তম বর্ষপূর্তী উপলক্ষ্যে নিবেদিত একটি স্মৃতিসৌধও রয়েছে।


 

Monuments and sculptures of Novgorod (32 photo) - Blog - Photo and travel ©  Andrey Panevin

৮৮২ সালে রুরিকের উত্তরসূরী প্রিন্স ওলেগ, যিনি প্রকৃতপক্ষে রিজেন্ট এবং রুরিকের ছোট ছেলের ভূমিকা পালন করছিলেন কারণ রুরিক ততক্ষণে মারা গিয়েছিলেন, তিনি কিয়েভে আসেন। তিনি দুই ভাইকে ক্ষমতাচ্যুত করেন যারা দৃশ্যত একসময় রুরিকের দলের সদস্য ছিলেন। এরপর থেকে রাশিয়া দুটি ক্ষমতার কেন্দ্র নিয়ে বিকশিত হতে শুরু করে, একটি কিয়েভ অপরটি নভগোরোড।


রাশিয়ার ইতিহাসে পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ তারিখ ৯৮৮ সাল, রাশিয়ার খ্রিস্টধর্মে দীক্ষার বছর। রুরিকের প্রপৌত্র প্রিন্স ভ্লাদিমির ওই সময় রাশিয়াকে খ্রিস্টধর্মের দিকে নিয়ে যান এবং প্রাচ্যধারার অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ানিটি বেছে নেন। তখন থেকেই কেন্দ্রীভূত রাশিয়ান রাষ্ট্র শক্তিশালী হতে শুরু করে। কেন? বেশ কিছু কারণ যেমন  একই অঞ্চলে পরষ্পরের উপর নির্ভর সমন্বিত অর্থনীতি, একই ভাষা এবং ব্যাপ্টিজমের পর একই ধর্ম বিশ্বাস এবং এক ব্যক্তির শাসনের কারণে। এ সময় কেন্দ্রীভূত রাশিয়ান রাষ্ট্রের একটা রূপ ও স্পষ্ট হতে শুরু করে।

মধ্যযুগে, প্রিন্স ইয়ারোস্লাভ দ্য ওয়াইজ, সিংহাসনের উত্তরাধিকারের ক্রম চালু করেছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর, বিভিন্ন কারণে এতে গোলমাল লেগে যায়। সিংহাসন সরাসরি পিতার কাছ থেকে জ্যেষ্ঠ পুত্রের কাছে নয়, বরং রাজপুত্রের কাছ থেকে যিনি মারা গিয়েছিলেন তার ভাইয়ের কাছে, তারপর তার পুত্রদের কাছে বিভিন্ন বংশে স্থানান্তরিত হয়ে যাচ্ছিল। এই সব কিছুর ফলে রাশিয়া ভেঙ্গে যায়, একক রাষ্ট্র হিসেবে তার সমাপ্তি ঘটে।


এটা বিশেষ কোন ঘটনা নয়, ইউরোপেও তখন একই ধরণের ঘটনা ঘটছিল। কিন্তু খণ্ডিত রাশিয়ান রাষ্ট্র চেঙ্গিস খানের সাম্রাজ্যের সহজ শিকারে পরিণত হয়। তার উত্তরসূরী বাটু খান রাশিয়ায় প্রায় সব শহরে লুটতরাজ চালিয়ে ধ্বংস করে দেয়। দক্ষিণ অংশ, কিয়েভ সহ আরও কিছু শহর যখন তাদের স্বাধীনতা হারাতে বসেছিল উত্তরের শহরগুলি তখনও তাদের কিছু সার্বভৌমত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল, বিনিময়ে তাদের কর দিতে হতো। এ সময় থেকেই ধীরে ধীরে মস্কোকে কেন্দ্র করে আবার একটি ঐক্যবদ্ধ রাশিয়ান রাষ্ট্র গড়ে ওঠতে শুরু করে।


কিয়েভ সহ রাশিয়ান ভূখণ্ডের দক্ষিণ অংশ ধীরে ধীরে ইউরোপের অন্য আরেকটি উদীয়মান কেন্দ্রের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে - লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডাচি। এটিকে লিথুয়ানিয়ান রাশিয়ান ডাচি ও বলা হতো কারণ রাশিয়ানরা এই জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ। তারা ছিল অর্থোডক্স ঘরানার এবং কথা বলতোও পুরাতন রাশিয়ান ভাষায় । এরপর কয়েক বছরের ব্যবধানে কয়েকটি ঐক্য ঘটে যায়, প্রথমে লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডাচি এবং পোল্যান্ড রাজ্যের, পরবর্তীতে একটি ধর্মীয় ঐক্য - কিছু অর্থোডক্স পুরোহিত পোপের অধীনস্থ হয়ে পড়েন। এইভাবে এই ভূমিগুলি হয়ে ওঠে  পোলিশ-লিথুয়ানিয়ান রাজ্যের অংশ। বেশ কয়েক দশক ধরেই পোলিশরা এই জনগোষ্ঠীর উপর উপনিবেশায়ন প্রক্রিয়া চালিয়ে যায়। সেখানে তারা তাদের ভাষা চালু করে এমন একটা ধারণা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যে এখানকার জনগণ ঠিক রাশিয়ান নয়, কারণ তারা অনেক দূরে এক প্রান্তে বসবাস করতো। তারা আসলে ইউক্রেনীয়।


নির্দিষ্ট কোন জাতিগত গোষ্ঠীকে বোঝানোর জন্য ‘ইউক্রেনীয়’ শব্দটি ব্যবহার হতো না, শব্দটির আসল অর্থ বোঝাতো সেই ব্যক্তিকে যে রাজ্যের উপকণ্ঠে বসবাস করতো অথবা সীমান্ত টহল পরিষেবায় নিযুক্ত ছিল। পোলিশরা রাশিয়ান ভূমির এই অংশে উপনিবেশ স্থাপনের জন্য সম্ভাব্য সকল উপায়ে চেষ্টা চালাচ্ছিল,  প্রয়োজনে কঠোর বা নিষ্ঠুর হতেও তারা দ্বিধা করে নি। এ সবের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ান ভূখন্ডের এই অংশটি শুরু করে তাদের অধিকারের জন্য সংগ্রাম। তারা ওয়ারশকে চিঠি লিখে দাবি জানিয়েছিল যে তাদের অধিকার পালন করার সুযোগ দেয়া হোক এবং কিয়েভ সহ এখানে লোক নিযুক্ত করে দেওয়া হোক।

টাকার কার্লসন:

মাফ করবেন, আপনি কি একটু বলবেন যে ইতিহাসের কোন সময়ে ইউক্রেনের উপর পোলিশ নিপীড়নের কথা বলছেন আপনি? আমি একটু খেই হারিয়ে ফেলেছি।

ভ্লাদিমির পুতিন:

এটা ত্রয়োদশ শতাব্দীর কথা। এর পরে কী ঘটেছিল তা বলার সময় তারিখগুলিও দেব যাতে কোনও বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়। ১৬৫৪ সালের দিকে, রাশিয়ান ভূখণ্ডের উক্ত অংশের নিয়ন্ত্রণে থাকা লোকেরা ওয়ারশকে বলেছিল, তারা যেন রাশিয়ান বংশোদ্ভূত এবং অর্থোডক্স বিশ্বাসের কোন শাসককে পাঠায়। যখন ওয়ারশ তাদের উত্তর দেয়নি, এবং শেষ পর্যন্ত তাদের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে, তখন তারা মস্কোর মুখাপেক্ষী হয়, যাতে মস্কো তাদেরকে অন্তর্ভূক্ত করে নেয়। আমি কিন্তু কোন কিছু বানিয়ে বলছি না, এ সমস্ত কিছুই নথিভুক্ত আছে, আপনাদেরকেও দিয়ে দেব।

টাকার কার্লসন:

আপনি বানিয়ে বলছেন এমন কিছু আমি ভাবছি না। তবে আমি বুঝতে পারছি না, দুই বছর আগে শুরু হওয়া যুদ্ধের সাথে এই ইতিহাস কেন প্রাসঙ্গিক?

ভ্লাদিমির পুতিন:

এগুলো কিন্তু আর্কাইভ থেকে নেওয়া নথির কপি। আপনাকে বোহদান খমেলনিটস্কির চিঠি দিচ্ছি,  যিনি তখন রাশিয়ান ভূখণ্ডের এই অংশের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন, যা এখন ইউক্রেন নামে পরিচিত। তিনি তাদের অধিকার সমুন্নত রাখার অনুরোধ জানিয়ে ওয়ারশকে চিঠি লিখেছিলেন, এবং প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর মস্কোকে চিঠি লিখতে শুরু করেন যাতে মস্কোর জার তার সুসংহত শাসনের আওতায় তাদের অন্তর্ভূক্ত করেন।

File:80-391-1247 Kyiv Khmelnytsky Monument RB 18.jpg - Wikimedia Commons
Bohdan Khmelnytsky Monument


রাশিয়া সহসাই তাদেরকে নিজেদের আওতায় রাজি হয় নি কারণ তাতে পোল্যান্ডের সাথে যুদ্ধ বেঁধে যাবে। তবুও, ১৬৫৪ সালে, পুরাতন রাশিয়ান রাষ্ট্রের ক্ষমতার প্রতিনিধিত্বকারী জার-এর নেতৃত্বে এক রাশিয়ান সমাবেশে পুরাতন রাশিয়ান ভূমির একটি অংশ মস্কো রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন শীর্ষস্থানীয় ধর্মযাজক এবং জমিদাররা। এই সিদ্ধান্তের ফলে পোল্যান্ডের সাথে শুরু হয় এক দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ যা স্থায়ী হয়েছিল ১৩ বছর। তবে ১৬৫৪ সালে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয় এবং বত্রিশ বছর পরে পোল্যান্ডের সাথে আরো একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যাকে তারা ‘চিরন্তন শান্তি’ বলে অভিহিত করে থাকে। ফলে এই ভূখন্ডগুলো, কিয়েভ সহ ডিনিপারের পুরো বাম তীর রাশিয়ার কাছে চলে যায় এবং ডিনিপারের পুরো ডান তীর পোল্যান্ডের হাতে থেকে যায়।

Catherine the Great - Wikipedia
ক্যাথরিন দ্য গ্রেট


ক্যাথরিন দ্য গ্রেটের শাসনামলে, দক্ষিণ ও পশ্চিম সহ সমস্ত ঐতিহাসিক ভূমি পুনরুদ্ধার করে রাশিয়া। এই সবকিছুই বিপ্লবের আগ পর্যন্ত টিকে ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে, অস্ট্রিয়ান জেনারেল স্টাফরা ইউক্রেনীয়করণের ধারণার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং ইউক্রেনীয়করণের ধারণাগুলি সক্রিয়ভাবে প্রচার ও বাস্তবায়ন করতে শুরু করে। উদ্দেশ্য স্পষ্ট। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক আগে তারা সম্ভাব্য শত্রুকে দুর্বল করতে এবং সীমান্ত এলাকায় নিজেদের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে চেয়েছিল। তাই পোল্যান্ড থেকে আসা ধারণা - ওই অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা আসলে রাশিয়ান নয় বরং একটি বিশেষ জাতিগত গোষ্ঠী ‘ইউক্রেনীয়’দের অন্তর্ভুক্ত ছিল, তা অস্ট্রিয়ান জেনারেল স্টাফরা আবার প্রচার করতে শুরু করে।


১৯ শতকের শুরুতেও ইউক্রেনের স্বাধীনতার দাবিদার তাত্ত্বিকরা সক্রিয় ছিলেন। তবে তারা এও বলতেন যে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের খুব ভালো সম্পর্ক থাকা উচিত এবং এর উপর তারা বিশেষ জোর ও দিতেন। ১৯১৭ সালের বিপ্লবের পর, বলশেভিকরা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে এবং গৃহযুদ্ধ শুরু হযইয়ে যায় যার মধ্যে পোল্যান্ডের সাথে শত্রুতাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। অবশেষে ১৯২১ সালে পোল্যান্ডের সাথে শান্তি ঘোষণা করা হয় এবং সেই চুক্তির অধীনে, ডিনিপার নদীর ডান তীর আবারও পোল্যান্ডকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।


১৯৩৯ সালে, পোল্যান্ড হিটলারের সাথে সহযোগিতা করে। হিটলারও পোল্যান্ডকে শান্তি আর বন্ধুত্বের চুক্তি এবং জোটের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, বিনিময়ে পোল্যান্ড এর কাছে ড্যানজিগ করিডোর জার্মানিকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেন, যা জার্মানির বেশিরভাগ অংশকে পূর্ব প্রুশিয়া এবং কোনিগসবার্গের সাথে সংযুক্ত করবে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, এই অঞ্চলটি পোল্যান্ডের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং ড্যানজিগের পরিবর্তে, গডানস্ক শহরের উদ্ভব ঘটে। হিটলার বন্ধুভাবাপন্নভাবেই নিয়েই পোল্যান্ডকে দিতে বলেছিলেন, কিন্তু পোল্যান্ড তা প্রত্যাখ্যান করে।

টাকার কার্লসন:

অবশ্যই।

ভ্লাদিমির পুতিন:

এরপরও হিটলারের সাথে পোল্যান্ড সহযোগিতা চালিয়ে যায় এবং দুপক্ষ একসাথে মিলেই চেকোস্লোভাকিয়াকে ভেঙ্গে ফেলে।

টাকার কার্লসন:

আপনি কী বলতে চাচ্ছেন যে ইউক্রেনের কিছু অংশ এবং পূর্ব ইউক্রেন আসলে রাশিয়া, শত শত বছর ধরে তা ই ছিল। তাহলে চব্বিশ বছর আগে যখন রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন তখন কেন আপনি এটি দখল করে নেননি? আপনার কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে, তাদের কাছে নেই। যদি আসলেই ইউক্রেন আপনাদের ভূখন্ডের অংশ হয়, তাহলে এতদিন কেন অপেক্ষা করলেন?

ভ্লাদিমির পুতিন:

সব ই বলব, সেই প্রসঙ্গেই আসছি। রাশিয়া আর ইউক্রেনের ইতিহাস পর্যালোচনা প্রায় শেষের দিকে। একটু একঘেয়ে লাগতে পারে, কিন্তু অনেক কিছুর ব্যাখ্যা ও আপনি পেয়ে যাবেন।

টাকার কার্লসন:

মোটেও একঘেয়ে নয়। তবে কতটা প্রাসঙ্গিক সেটা বোঝা যাচ্ছে না।

ভ্লাদিমির পুতিন:

একঘেয়ে লাগছে না জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে, পোল্যান্ড হিটলারের সাথে হাত মেলায়। যদিও তারা হিটলারের দাবি মেনে নেয়নি, তবুও হিটলারের সাথে মিলে চেকোস্লোভাকিয়ার ভাঙনে অংশ নেয়। পোলিশরা তো জার্মানিকে ড্যানজিগ করিডোর দেয়ই নি, উপরন্তু তারা হিটলারকে আক্রমণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করার জন্য ঠেলে দিয়েছিল। ১৯৩৯ সালে ১ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল কেন বলতে পারেন? পোল্যান্ড হিটলারের দাবি কোনভাবেই মানছিল না আবার হিটলার এর সামনেও পোল্যান্ডকে ছাড়াই তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।


যাই হোক, আমি কিছু আর্কাইভ ডকুমেন্ট পড়েছি, তা থেকে বলতে পারি, সোভিয়েত ইউনিয়ন খুব সততার সাথে সবকিছু সামলাচ্ছিল। চেকোস্লোভাকিয়াকে সাহায্য করার জন্য পোলিশ ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে সৈন্য পরিবহনের জন্য অনুমতি চেয়েছিল তারা পোল্যান্ডের কাছে। কিন্তু তৎকালীন পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন যদি সোভিয়েত বিমান পোল্যান্ডের উপর দিয়ে উড়ে যায়, তাহলে সব কয়টিকেই ভূপাতিত করা হবে। কিন্তু সেগুলো গুরুত্বপুর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ততদিনে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং পোল্যান্ড চেকোস্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে যে নীতি অনুসরণ করেছিল নিজেই সেরকম একটি নীতির শিকার হয় - আমি মলোটভ রিবেন্ট্রপ প্যাক্ট এর কথা বলছি, যে চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিম ইউক্রেন সহ পোল্যান্ড এর ভূখণ্ডের কিছু অংশ রাশিয়াকে দিয়ে দেয়া হয়। এইভাবে রাশিয়া, যা তখন ইউএসএসআর বা সোভিয়েত ইউনিয়ন নামে পরিচিত ছিল, তার ঐতিহাসিক ভূমি পুনরুদ্ধার করে।


গ্রেট প্যাট্রিয়টিক ওয়ার বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয়ের পর সেই সমস্ত অঞ্চল শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার বা সোভিয়েত ইউনিয়ন এর অন্তর্গত হয়ে যায়। পোল্যান্ডের ক্ষেত্রে, তারা দৃশ্যত ক্ষতিপূরণ হিসেবে সেসব জমি পায় যা মূলত জার্মান ছিল। জার্মানির পূর্ব অংশগুলি, এখন পোল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলীয় ভূমি। অবশ্যই, পোল্যান্ড বাল্টিক সাগর এবং ড্যানজিগে প্রবেশাধিকার ফিরে পায়, যেটাকে আবার তার পোলিশ নাম দেওয়া হয়েছিল। এভাবেই এই পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে। 

১৯২২ সালে, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছিল তখন বলশেভিকরা সোভিয়েত ইউক্রেন নির্মাণ শুরু করে, যা আগে কখনও ছিল না। স্ট্যালিন জোর দিয়েছিলেন যে এই প্রজাতন্ত্রগুলিকে স্বায়ত্তশাসিত সত্তা হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত করা হোক। কিন্তু ব্যাখ্যাতীত কারণে, সোভিয়েত রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা লেনিন জোর দিয়েছিলেন যে তাদের সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে সরে আসার ও অধিকার রয়েছে। এবং আবারও, কোন অজানা কারণে, তিনি নতুন প্রতিষ্ঠিত সোভিয়েত ইউক্রেনে মানুষদের পাশাপাশি কিছু ভূখন্ডও দিয়ে দেন, যদিও সেই ভূখন্ডগুলোকে কখনোই ইউক্রেন বলা হত না। তার মধ্যে ছিল ক্যাথরিন দ্য গ্রেট এর সময় অধিকৃত কৃষ্ণ সাগর অঞ্চল, ইউক্রেনের সাথে যার কোনও ঐতিহাসিক সম্পর্কই ছিল না। এমনকি যদি আমরা ১৬৫৪ সালেও ফিরে যাই, যখন এই ভূখন্ডগুলি রাশিয়ান সাম্রাজ্যের কাছে ফিরে আসে, যার আয়তন ছিল আধুনিক ইউক্রেন এর তিন থেকে চার গুণ, সেখানেও কোন কৃষ্ণ সাগর অঞ্চল ছিল না। এটি সম্পূর্ণরূপে প্রশ্নাতীত।

টাকার কার্লসন:

১৬৫৪ সালে?

ভ্লাদিমির পুতিন:

হ্যাঁ।

টাকার কার্লসন:

আপনার অবশ্যই এই অঞ্চল সম্পর্কে প্রায় বিশ্বকোষীয় পর্যায়ের জ্ঞান রয়েছে, কিন্তু রাষ্ট্রপতি হিসেবে গত বাইশ বছর আপনি কেন এই যুক্তিটি তুলে ধরেননি যে ইউক্রেন আসলে একটি দেশ ছিল না?

ভ্লাদিমির পুতিন:

সোভিয়েত ইউনিয়নকে এমন অনেক ভূখণ্ড দেওয়া হয়েছিল যা কখনোই তাদের ছিল না, যার মধ্যে কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলও ছিল। এক সময়, যখন রাশিয়া রুশ-তুর্কি যুদ্ধের পর এগুলো গ্রহণ করে, তখন সেগুলোকে নতুন রাশিয়া বা নভোরোসিয়া বলা হত। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সোভিয়েত রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা লেনিন এভাবেই ইউক্রেন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কয়েক দশক ধরে, ইউক্রেনীয় সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন এর অংশ হিসেবেই বিকশিত হয়েছিল এবং অজানা কারণে  বলশেভিকরা আবারও ইউক্রেনীয়করণে মেতে ওঠে।


সোভিয়েত নেতৃত্ব গড়ে ওঠেছিল মূলত ইউক্রেন থেকে আসা লোকদের দ্বারা, কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়। বরং, ব্যাপারটিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাধারণ আদিবাসীকরণ নীতি দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়। অন্যান্য সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রেও একই কাজ করা হচ্ছিল, এর মধ্যে ছিল জাতীয় ভাষা এবং জাতীয় সংস্কৃতির ও প্রচার, যা কিন্তু নীতিগতভাবে খারাপ নয়। এভাবেই গড়ে ওঠে সোভিয়েত ইউক্রেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউক্রেন কিছু ভূখন্ড পেয়েছিল যা যুদ্ধের আগে পোল্যান্ডের মালিকানাধীন ছিল, এ ছাড়াও পেয়েছিল আরো কিছু ভূখন্ড যা ছিল হাঙ্গেরি এবং রোমানিয়ার অন্তর্ভূক্ত। এভাবেই রোমানিয়া এবং হাঙ্গেরি থেকে ভূখন্ড কেড়ে নিয়ে সোভিয়েত ইউক্রেনকে দেওয়া হয় যা এখনও ইউক্রেনের অংশ। তাই আমাদের এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে যে ইউক্রেন একটি কৃত্রিম রাষ্ট্র যা স্ট্যালিনের ইচ্ছায় গঠিত হয়।

টাকার কার্লসন:

আপনি কি বিশ্বাস করেন যে হাঙ্গেরির ইউক্রেন থেকে তাদের জমি ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার আছে এবং অন্যান্য জাতিরও তাদের ১৬৫৪ সালের সীমান্তে ফিরে যাওয়ার অধিকার আছে?

ভ্লাদিমির পুতিন:

আমি নিশ্চিত নই যে তাদের ১৬৫৪ সালের সীমান্তে ফিরে যাওয়া উচিত কিনা, তবে স্ট্যালিনের সময়, তথাকথিত স্ট্যালিনের শাসনামল, যেখানে অনেকেই দাবি করেন যে মানবাধিকারের অসংখ্য লঙ্ঘন এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের অধিকার লঙ্ঘন ঘটেছে, তা বিবেচনা করে বলা যায় যে তারা তাদের সেই পুরনো ভূখন্ডগুলি ফিরে পাওয়ার দাবি তুলতে পারেন। যদিও সেরকমটি করার কোনও অধিকার নেই তারপরও অন্তত বুঝতে পারি যে তারা কেন এমনটি বলছেন।

টাকার কার্লসন:

আপনি কি ভিক্টর অরবানকে বলেছেন যে তিনি ইউক্রেনের অংশ ফেরত নিতে পারেন?

ভ্লাদিমির পুতিন:

কখনোই না। তাকে আমি একবারও এ কথা বলি নি। আমাদের মধ্যে এ বিষয়ে কোনও কথাই হয়নি, কিন্তু আমি নিশ্চিতভাবেই জানি যে সেখানে বসবাসকারী হাঙ্গেরিয়ানরা তাদের আদি ভূমিতে ফিরে যেতে চেয়েছিল। এ ব্যাপারে আমি আপনাকে একটি চমকপ্রদ গল্প বলতে চাই। ব্যক্তিগত গল্প।


আশির দশকের গোড়ার দিকে তৎকালীন লেনিনগ্রাদ থেকে গাড়িতে করে সোভিয়েত ইউনিয়ন ঘুরতে বের হই আমি, পথে যাত্রাবিরতি নেই কিয়েভে, তারপর আবার রওনা হই পশ্চিম ইউক্রেনের দিকে। বেরেগোভোই নামক এক শহরের কথা আমার এখনো মনে আছে যেখানকার সমস্ত শহর এবং গ্রামের নাম ছিল রাশিয়ান ভাষায় এবং ভাষা ছিল হাঙ্গেরিয়ান। রাশিয়ান এবং হাঙ্গেরিয়ান, ইউক্রেনীয় ভাষা না কিন্তু। কোনও এক গ্রামের মধ্য দিয়ে গাড়ি চালানোর সময় দেখলাম যে বাড়ির পাশে যে পুরুষরা বসে ছিল তাদের পরনে কালো থ্রি-পিস স্যুট এবং কালো সিলিন্ডার টুপি। জানতে চাইলাম, তারা কি কোনও ধরণের বিনোদনমূলক কাজের সাথে জড়িত, সার্কাস বা থিয়েটার? আমাকে বলা হলো, না সেরকম কিছু নয়, তারা সাধারণ হাঙ্গেরিয়ান। আবারো জানতে চাইলাম, তারা এখানে কী করছে? বলা হলো, তুমি কী বলতে চাইছ? এটা তো তাদেরই ভূমি। তারা এখানেই থাকে। ঘটনাটা ১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত আমলের। তারা হাঙ্গেরিয়ান ভাষা, হাঙ্গেরিয়ান নাম এবং সমস্ত জাতীয় পোশাক - সব ই তারা ধরে রেখেছিল। তারা হাঙ্গেরিয়ান এবং নিজেদের তারা হাঙ্গেরিয়ান ই বলে মনে করে।

টাকার কার্লসন:

আমার মনে হয় অনেক দেশ ই ট্রান্সিলভেনিয়া নিয়ে বিরক্ত, আপনিও জানেন ব্যাপারটা। বহু দেশ ই কিন্তু বিংশ শতাব্দীর যুদ্ধ এবং হাজার বছর আগের যুদ্ধের ফলে পুনর্নির্ধারিত সীমানা দেখে ক্ষুব্ধ। কিন্তু বাস্তবতা হলো আপনি দুই বছর আগে ফেব্রুয়ারিতে এই বিষয়টি জনসমক্ষে তুলে ধরেননি। বরঞ্চ আপনি তুলে ধরেছেন যে পশ্চিমাদের ন্যাটো থেকে আপনি সরাসরি হুমকি অনুভব করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে সম্ভাব্য পারমাণবিক হুমকি, এবং সেটাই আপনাকে এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। আপনি যা বলেছেন আমি কী তা ঠিকঠাক তুলে ধরতে পেরেছি?

ভ্লাদিমির পুতিন:

আমি বুঝতে পারছি যে আমার দীর্ঘ বক্তৃতাগুলি সম্ভবত গৎবাঁধা সাক্ষাৎকারের সাথে মিলছে না। সেজন্যই আমি শুরুতেই আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমরা কি কোনও টকশো তে বসেছি নাকি আন্তরিকতাপূর্ণ আলোচনা? আপনি বলেছেন আন্তরিকতাপূর্ণ আলোচনা, তাই বলছি, একটু ধৈর্য ধরে আমার কথা শুনতে থাকুন। আমরা ইতিহাসের সেই পর্যায়ে চলে এসেছি যখন সোভিয়েত ইউক্রেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তারপর ১৯৯১ সালে, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ে তখন রাশিয়া উদারহস্তে ইউক্রেনকে যা যা দিয়েছিল তা পরবর্তীজন জবরদস্তি করে নিয়ে যায়। আমরা কিন্তু আজকের আলোচ্যসূচির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চলে এসেছি। একটু পরেই তা বলছি।

টাকার কার্লসন:

ধন্যবাদ। প্লিজ বলুন।



চলবে

দ্বিতীয় পর্বের জন্য ক্লিক করুন

Comments

    Please login to post comment. Login