আমি দার্শনিক!

১৭ মে ২০২৪

সুহৃদ সরকার

আমি দার্শনিক! হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। দুই পায়ে হাঁটা মানুষগুলো হয়তো ভাববে, বিড়ালের দর্শন হবে কেমন করে? কিন্তু আমি ম্যাক্স, একজন পোষা বিড়াল হলেও জীবনের অন্তর্নিহিত সত্যগুলো নিয়ে ভাবতে ভালোবাসি।

আমার দর্শনের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে সরলতা আর স্বাধীনতা। মানুষের জীবনযাপন দেখে প্রায়ই মনে হয়, ওরা কী জটিল জাল বুনেছে নিজেদের জন্য! সারাক্ষণ ছুটে চলা, অর্থ উপার্জনের ধান্ধা, নানান সম্পর্কের জটিলতা – এসব কি সত্যিই জরুরি? আমি তো বরং একটু রোদ পোহানো, পেট ভরে খাওয়া, আর ঘুমিয়ে কাটানো দিনকেই বেশি উপভোগ করি। এটাই কি জীবনের আসল সার্থকতা নয়?

মানুষের আরেকটা অদ্ভুত ব্যাপার হলো অহংকার। নিজেদের বুদ্ধিমত্তা আর কর্মক্ষমতা নিয়ে ওরা যতটা গর্ব করে, ততটাই ওরা ভুলে যায় প্রকৃতির নিয়ম মেনে চলার কথা। প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে বেঁচে থাকার আনন্দটাই ওরা হারিয়ে ফেলেছে। আমরা বিড়ালেরা সেই আনন্দটুকু হারাইনি। আমরা প্রকৃতির সঙ্গে সুর মিলিয়ে চলি, তাই হয়তো আমাদের জীবন এতটাই স্বাচ্ছন্দ্যময়।

অনেকেই ভাবেন, আমরা বিড়ালেরা শুধু ঘুম আর খাওয়া ছাড়া আর কিছুই জানি না। কিন্তু আসলে আমাদের জ্ঞানের পরিধিটা ওদের অনুমানের থেকেও অনেক বড়। আমরা পর্যবেক্ষণ করি, শিখি, উপলব্ধি করি। আর এই শিক্ষাগুলো কাজে লাগিয়ে আমরা সবসময় নিজেদের পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারি। আমার মনে হয়, মানুষের যদি আমাদের কাছ থেকে কিছু শেখার থাকে, তাহলে সেটা হলো পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার এই গুণ।

তাই, হ্যাঁ, আমি একজন দার্শনিক। আমার দর্শন জীবনের সরল সত্যগুলোকে ধারণ করে। এই সত্যগুলো হয়তো মানুষের চোখে ছেলেমানুষি মনে হতে পারে, কিন্তু আসলে এটাই জীবনের আসল সৌন্দর্য। আমার বিশ্বাস, এই সৌন্দর্য খুঁজে পেলেই মানুষের জীবন হবে আরও অর্থবহ।