শেষ পরিচ্ছেদ

১১ জুন ২০২৪

Naoroz Bipul

এক সপ্তাহ পর দেশে ফিরলো জুওয়াইরিয়া। প্রথমেই সে নিজের স্বঘোষিত বয়ফ্রেন্ডের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলো। ওকে দেখে মুমিতের কী প্রতিক্রিয়া হলো তা সে বুঝতে পারলো না। অপলক দৃষ্টিতে শুধু জুওয়াইরিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলো। ওকে চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখতে দেখে প্রচন্ড ক্ষেপে গেলো জুওয়াইরিয়া। নিজের দুই বডিগার্ডের দিকে তাকালো। জানতে চাইলো, ‘ওকে বেঁধে রেখেছো কেন তোমরা?’
‘আমি বলেছি।’ জবাবে বলল জাফর, ‘যদি তোমার উপরে এ্যাটাক করে বসে?’
‘করলে করবে, সেটা কি তোমার সমস্যা?’
জবাবে এবার জাফর কিছু বলতে পারলো না। মুমিতকে সে জুওয়াইরিয়ার হাতে তুলে দিয়েছে, যাতে বিয়ে করে জুওয়াইরিয়া ওকে নিয়ে চলে যায়। আয়িশাকে যেন মুমিত না পায়। জুওয়াইরিয়া ওকে নিয়ে চলে গেলে আয়িশা প্রচন্ডভাবে ভেঙ্গে পড়বে। আয়িশার সেই সুযোগটায় নিবে জাফর। কিন্তু ওকে জুওয়াইরিয়াও তেমন একটা পছন্দ করে না। শুধুমাত্র কাজের প্রয়োজনে ওকে হাতে রেখেছে সে। জাফর ওর দুই বডিগার্ডকে বলল, ‘এই যাও, ওকে খুলে দাও। ওর পাশেই দাঁড়িয়ে থাকবে তোমরা।’ 
দুই বডি বিল্ডার গিয়ে মুমিতকে খুলে দিলো। দুইপাশে দাঁড়িয়ে থাকলো। সোফায় বসলো জুওয়াইরিয়া। মুমিত বলল, ‘এসব কেন করছো, জুওয়াইরিয়া?’
‘আমাকে তোমার বিয়ে করতে হবে।’
‘বাধ্য করবে?’
‘করবো।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘অর্থ সম্পদের লোভ দেখালাম- স্বেচ্ছায় রাজি হলে না। নিজেকে তোমার জন্য প্রোভাইড করলাম- তবুও স্বেচ্ছায় রাজি হলে না। তোমাকে পেতে, এখন আমার বাধ্য করা ছাড়া তো কোনো অপশন দেখছি না।’
‘বাধ্য করে হয়তো বিয়ে করাবে, কিন্তু তুমি কি আমাকে পাবে?’
কথাটা জুওয়াইরিয়ার কানে লেগে গেলো। কিন্তু এই মুহুর্তে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। বলল, ‘আমি ইউএসএ’র সিটিজেনশিপ পেয়ে গেছি, মুমিত! আমাকে বিয়ে করো, আমার সাথে ইউএস চলো। ভেবে দেখো, কতটা উন্নত জীবন যাপনের হাতছানি তোমার সামনে!’
‘অতো লোভ দেখাইয়ো না, জুওয়াইরিয়া। কুকুরের পেটে কখনো ঘি সহ্য হয় না।’ বলল মুমিত, ‘তাছাড়া, আমি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। উন্নত জীবন যাপনের লোভে তোমার সাথে যদি আমি ইউএস চলে যাই, তাহলে তারা কী করবে?’
‘শুধু বাবা-মা?’ কিছুটা আশ্চর্য্য দেখালো জুওয়াইরিয়াকে, ‘আয়িশার জন্য কোনো ভাবনা নাই তোমার?’
‘আলাদা করে নাই।’ বলল মুমিত, ‘নিজের থেকে ওকে আমি আলাদা করে ভাবিনা কখনো।’
‘তোমার শেষ সিদ্ধান্ত এটাই?’
‘ধরে নিতে পারো।’
‘কী আর করা তাহলে?’ বলল জুওয়াইরিয়া। উঠলো সে। দরজার দিকে পা বাড়াতে গিয়েও, আবার থামলো। বলল, ‘যতদিন তুমি আমাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত না নিচ্ছো, ততদিন রিংকি পিংকির মেহমান হয়েই থাকো। রিংকি পিংকি…’
‘ম্যাম…’ জুওয়াইরিয়ার কাছাকাছি এগিয়ে আসলো রিংকি পিংকি।
‘তোমাদের মেহমানের খাতির যত্ন ঠিকঠাকমতো হচ্ছে তো?’
‘একদম পারফেক্ট, ম্যাম।’
‘গুড। ওভাবেই চালিয়ে যাও।’ মুমিতের দিকে আবার একবার তাকালো জুওয়াইরিয়া। বলল, ‘প্রতিদিন আমি একবার করে তোমার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসবো। বুঝোই তো, তোমার মুখটা দেখলে বুকের ভেতর একটা পরম শান্তি পাই!’
প্রতিদিনই একবার করে এসেছেও জুওয়াইরিয়া। ওদিকে মুমিতকে কিডন্যাপের সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে, পিবিআই অফিসার আব্দুল গফুর ডাকলো জুওয়াইরিয়াকে। তার অফিস থেকে ফেরার পর সে লক্ষ্য করলো, আব্দুল গফুরের নজরবন্দি হযে আছে সে। ওর অনেকগুলো চোখ জুওয়াইরিয়াকে ঘিরে রেখেছে। বাসা থেকে বের হওয়াই বন্ধ করে দিলো জুওয়াইরিয়া। কিন্তু কয়েক দিন ধরে মুমিতকে একটাবার না দেখে, থাকতেই পারছিল না সে। আব্দুল গফুরের নজর এড়িয়ে কীভাবে সে যাবে মুমিতের কাছে? বুদ্ধিও একটা বের করে ফেললো। কাজের বুয়া খাদিজার পরনের শাড়ি, ব্লাউজ, পেটিকোট নিয়ে পরে ফেললো। তার শাড়ি পরার স্টাইলের মতো করে ওর শাড়ি পরে নিলো। বের হলো। ওর গাড়ি নিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে ছিল ফরিদুল্লাহ্। বাসা থেকে বের হয়ে হেঁটে হেঁটে এসে গাড়িতে উঠে পড়লো জুওয়াইরিয়া। ফরিদুল্লাহ্ এখন ওকে নিয়ে ওর রেস্ট হাউজের দিকে ছুটে চলেছে। এরই মাঝে আবার জুওয়াইরিয়ার বাবা কল করলেন। মুমিতের ব্যাপারটা এখনও বাবাকে জানায়নি জুওয়াইরিয়া। ভেবে রেখেছিল, মুমিতের সাথে খুব ভালো একটা রিলেশন তৈরি করে, ওকে নিয়ে বাবার সামনে দাঁড়াবে। মুমিতের সাথে ওর রিলেশন তৈরি হয়নি। বাপের কাছ থেকে ব্যাপারটা আজও এড়িয়ে গেলো সে।
রেস্ট হাউসে পৌঁছে সরাসরি মুমিতকে আটকে রাখা ঘরে আসলো জুওয়াইরিয়া। ওর আগেই পৌঁছেছে জাফর। সোফায় বসে আছে। মুমিতকে বেঁধে রাখা হয়েছে চেয়ারের সাথে। দৃশ্যটা দেখে মাথায় আগুন উঠে গেলো জুওয়াইরিয়ার। বলল, ‘কী ব্যাপার, ওকে এভাবে বেঁধে রেখেছো কেন?’
জবাব দিলো জাফর। বলল, ‘আমার নিরাপত্তার জন্য। এখন তো আমরা আর বন্ধু আছি বলে মনে হয় না। যদি আক্রমণ করে বসে?’
‘তুমি কোথাকার কোন লাট সাহেব এসেছো যে, তোমার নিরাপত্তা লাগবে?’ বলল জুওয়াইরিয়া। দুই বডি বিল্ডার বডিগার্ডের দিকে তাকালো। নির্দেশ দিলো, ‘এই, খোলো ওকে!’
নিঃশব্দে নির্দেশ পালন করলো দুই বডি বিল্ডার। মুমিতকে খুলে দিয়ে ওর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকলো। জাফরের দিকে তাকালো। সোফা ছেড়ে দাঁড়ালো জাফর। জুওয়াইরিয়া গিয়ে সেখানে বসলো। জাফর আর বসলো না। জুওয়াইরিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলো। মুমিতের দিকে তাকালো জুওয়াইরিয়া। কিডন্যাপ করে নিয়ে আসার পর, প্রথম দিন সাক্ষাৎ করতে এসে মুমিত একটা কথা বলেছিল- জোর করে হয়তো বিয়ে করতে রাজি করাতে পারবে জুওয়াইরিয়া। কিন্তু সে কি মুমিতকে পাবে? কথাটা তো একদম সত্যি। জোর করে বিয়ে করালে জুওয়াইরিয়া স্বামী পাবে, কিন্তু মুমিতকে কি আদৌ পাওয়া সম্ভব? কথাটা নিয়ে গত কয়েকটা দিন অনেক ভেবেছে জুওয়াইরিয়া। একটা সিদ্ধান্তে তো অবশ্যই এসেছে। জ্ঞান বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে, জুওয়াইরিয়া একবার যেটা পছন্দ করেছে, সেটা নিয়েই ছেড়েছে। যেটা সে নিজে পায়নি সেটা অন্য কাউকে পেতেও দেয়নি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার মুমিতকে পছন্দ করেছে সে। সে যদি মুমিতকে না পায়, তাহলে আয়িশা কেন পাবে?
জুওয়াইরিয়াকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে অস্বস্তিবোধ করলো মুমিত। বলল, ‘এভাবে কারো দিকে তাকিয়ে থাকলে অস্বস্তি লাগে, জুওয়াইরিয়া। চুপচাপ বসে না বেহালা বাজাও।’
মুখ খুললো জুওয়াইরিয়া। বলল, ‘আমাকে নিয়ে তোমার সিদ্ধান্ত কি এখনও আগের মতোই আছে?’
‘সিদ্ধান্ত আগের পরের বলতে তো কিছু নাই।’ বলল মুমিত, ‘আমার সিদ্ধান্ত সিদ্ধান্তই।’
‘আবার ভাবতে বলছি, মুমিত। আয়িশাকে বিয়ে করে কিছুই পাবে না তুমি। আমাকে বিয়ে করো- তোমার বাবা-মাসহ আমরা ইউএসএ গিয়ে সেটেল্ড হবো।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘ভেবে দেখো।’
‘অতো ভাবিয়ে তুমি ওর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করাতে পারবে না, জুওয়াইরিয়া।’ বলল জাফর, ‘তোমার হ্যান্ডব্যাগ থেকে পিস্তলটা বের করো। শুট করে দাও। তুমিই যখন ওকে পাবে না, তখন আয়িশাকে পেতে দেবে কেন?’
শীতল একটা দৃষ্টিতে জাফরের দিকে তাকালো জুওয়াইরিয়া। বলল, ‘কারেক্ট!’ নিজের হ্যান্ডব্যাগ থেকে পিস্তলটা বের করলো সে। সেফটি ক্যাচ অফ করে দিলো। জাফরের দিকে ঘুরলো। গোড়ালি উঁচু জুতার গোড়া দিয়ে জাফরের বুকে একটা লাথি মারলো। জাফর একেবারেই প্রস্তুত ছিল না। জুওয়াইরিয়া যে ওকে এভাবে লাথি মারবে তা অনুমানও করেনি। ওর লাথি খেয়ে সে পেছনের দেয়ালের সাথে গিয়ে ধাক্কা খেলো। প্রচন্ড ব্যাথা পেয়ে বুক চেপে ধরে ওখানেই বসে পড়লো সে। জুওয়াইরিয়া এসে ওর বুকের উপর পা রাখলো। মাথায় পিস্তলের নল চেপে ধরলো। বলল, ‘চাইল্ড অফ আ বিচ! ওকে শুট করতে বলিস তুই আমাকে? তোকেই আমি গুলি করে মেরে ফেলবো!’
সত্যি সত্যিই জাফরকে গুলি করার প্রস্তুতি নিলো জুওয়াইরিয়া। মুমিত ওকে বাধা দেবার জন্য ছুটে যেতে চাইলো। কিন্তু দুই বডি বিল্ডার বডিগার্ড ওকে আটকালো। যেতে না পেরে সে বলল, ‘জুওয়াইরিয়া, প্লিজ… প্লিজ ডোন্ট শুট…’
পিস্তল নামিয়ে নিলো জুওয়াইরিয়া। মুমিতের দিকে তাকালো। বলল, ‘একটু আগেই সে তোমাকে শুট করতে বলেছে। উল্টো তুমি এখন ওকে শুট করতে নিষেধ করছো?’
‘করছি। প্লিজ রিল্যাক্স।’ বলল মুমিত, ‘মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু কে জানো? পেছনের বন্ধু। আমি আমার পেছনের বন্ধুটাকে চিনতে তো পারলাম। তুমি ওকে ছেড়ে দাও।’
‘আমি যা কিছুই করেছি- আয়িশাকে কিডন্যাপ করেছি, তোমাকে কিডন্যাপ করেছি, সবকিছু ওর কু-প্ররোচনায়।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘এখন আবার সে তোমাকে শুট করতে বলছে! ভালোবাসি আমি তোমাকে, কীভাবে শুট করবো?’
মুমিত কিছু বলার আগে, জুওয়াইরিয়ার আন্ডারগ্রাউন্ড এই রুমের রিমোট কন্ট্রোল দরজা খুলে গেলো। ভেতরে আসলো পিবিআই অফিসার আব্দুল গফুর। তার সাথে আরও দুজন অফিসার। সাথে মুমিতের জন্য একটা সারপ্রাইজ- আয়িশাকেও সাথে নিয়ে এসেছে পিবিআই অফিসার। মুমিতের দিকে এগিয়ে গেলো আব্দুল গফুর। হাত বাড়ালো। বলল, ‘আমাদের পূর্ব পরিচয় নেই, আমি সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পুলিশ আব্দুল গফুর- ফ্রম পিবিআই। আপনার কিডন্যাপিং কেসটা আমিই ডিল করছিলাম।’
‘ওহ্, থ্যাঙ্কিউ, স্যার।’ বলল মুমিত। আব্দুল গফুরের সাথে হাত মেলালো। বলল, ‘আপনার সাথে পরিচিত হয়ে আনন্দিতবোধ করছি।’
নিজ লেডি অফিসার নীলিমার দিকে তাকালো আব্দুল গফুর। জুওয়াইরিয়াকে ইঙ্গিত করে বলল, ‘এরেস্ট করো।’
আব্দুল গফুরের দৃষ্টি আকর্ষণ করলো মুমিত। বলল, ‘স্যার, জুওয়াইরিয়াকে এরেস্ট করার প্রয়োজন নাই। ও যা কিছু করেছে আমাকে ভালোবেসে করেছে। ওকে এরেস্ট করবেন না প্লিজ! আমি ওর হতে না পারি, আমার প্রতি ওর যে ভালোবাসা- সেটাকে অসম্মান করতে চাই না।’
‘ওকে, আপনিই যদি অভিযোগ উঠিয়ে নেন, তাহলে তো আমাদেরও আর করার কিছু থাকে না।’ বলল আব্দুল গফুর, ‘ফাইল ক্লোজড। চলুন, যাওয়া যাক।’
‘অফিসার…’
জুওয়াইরিয়ার কথা শুনে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালো আব্দুল গফুর। আয়িশার দিকে একটা আঙ্গুল তাক করলো জুওয়াইরিয়া। বলল, ‘ওকে নিয়ে কিছুক্ষণ বাহিরে অপেক্ষা করবেন, আমি কয়েকটা মুহুর্ত মুমিতের সাথে একা থাকার সুযোগ চাই।’
সবার দিকে একবার তাকালো আব্দুল গফুর। ওর ইঙ্গিতে জাফরকে টানতে টানতে বের করে নিয়ে গেলো রোহান। আয়িশাকে বাহিরে নিয়ে যেতে নীলিমাকে ইঙ্গিত করলো। নীলিমা ওকে নিয়ে বের হয়ে গেলো। দুই বডি বিল্ডারের দিকে তাকিয়ে আব্দুল গফুরও বের হলো। জুওয়াইরিয়ার ইঙ্গিত পেয়ে ওর বডিগার্ডরাও বের হয়ে গেলো। জুওয়াইরিয়া আবার কী বলে তা শোনার জন্য অপেক্ষা করলো মুমিত। ওর কাছে আসলো জুওয়াইরিয়া। দুইহাতে মুমিতের মুখমণ্ডল ধরলো। বলল, ‘জাফরের কু-প্ররোচনাতে নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেয়ায়, আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো, মুমিত। তোমাকে পাওয়ার আর কোনো অপচেষ্টা আমি করবো না। দেরিতে হলেও আমি উপলব্ধি করেছি, লোভ দেখিয়ে আর জোর খাটিয়ে সবকিছু অর্জন সম্ভব নয়। তোমাকে যেহেতু আমি পাবোই না, তাই আমিও আর থাকবো না!’
‘থাকবে না মানে?’ আতঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো মুমিত, ‘কী করার কথা ভাবছো তুমি?’
নিঃশব্দ হাসি ফুটিয়ে তুললো জুওয়াইরিয়া। বলল, ‘ভয় পেয়ো না, আমি সুইসাইড করবো না!’
মুমিতও হেসে বলল, ‘দ্যাটস লাইক আ স্মার্ট গার্ল!’
‘আগেই তো বলেছি, ইউএসএ’র সিটিজেনশিপ পেয়েছি আমি।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘ইউএস গিয়ে ওখানেই পার্মানেন্ট হবো। এখানে থাকলেই শুধু তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করবে। আয়িশা তা মানবে না। আমাকে একবার হাগ করবে?’
‘শিউর।’
দুইহাত বাড়িয়ে জুওয়াইরিয়াকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলো মুমিত। আলতো করে একবার চাপ দিলো। জুওয়াইরিয়ার মনে হলো, মুমিতের আলতো চাপটা ওর বুকের ভেতর গিয়ে হৃদপিণ্ডটাকে মুচড়িয়ে ধরলো। দীর্ঘক্ষণ যাবৎ মুমিতের বুকে মুখ গুঁজে থাকলো জুওয়াইরিয়া। এক সময় ছাড়িয়ে নিলো নিজেকে। কোনো কথা না বলে দরজায় এসে নক করলো। দরজা খুলে গেলো। কাছাকাছিই দাঁড়িয়ে ছিল সবাই। কারো দিকে তাকালো না জুওয়াইরিয়া। বের হয়ে যাওয়ার জন্য হাঁটতে লাগলো লম্বা করিডোর ধরে। মুমিত বের হয়ে এসে আয়িশাকে একহাতে জড়িয়ে ধরলো। তাকিয়ে থাকলো জুওয়াইরিয়ার গমন পথের দিকে। (সমাপ্ত)।