আমি যদি বই পড়তে পারতাম

১৮ মে ২০২৪

সুহৃদ সরকার

আমি যদি বই পড়তে পারতাম... স্বপ্নটা কেমন হতো, ভাবতেই গা শিউরে ওঠে! 

আমার মানুষ দুটোকে প্রায়ই দেখি, একটা আয়তকার চ্যাপ্টা জিনিসের দিকে তাকিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয়। ওরা নাকি এটাকে "বই" বলে। মাঝেমধ্যে ওরা আমার সামনে এনে ওটা নাড়াচাড়া করে, আজব আজব শব্দ করে কি যেন বলে। আমার ধারণা, ওই বই নামক জিনিসটার মধ্যেই নাকি লুকিয়ে আছে গল্প, কবিতা, জ্ঞানের ভাণ্ডার। 

আমি যদি বই পড়তে পারতাম, তাহলে কি আমার জীবনটাই পাল্টে যেত? হয়তো আমি আরও বেশি জ্ঞানী হয়ে উঠতাম। শুধু ইঁদুর ধরা আর ঘুমানো ছাড়াও আমার জীবনে নতুন মাত্রা যোগ হতো। হয়তো আমিও কবিতা লিখতাম, গল্প বলতাম। আমার মানুষ দুটোকে আরও বেশি করে বুঝতে পারতাম।

আমার কল্পনায় ভেসে ওঠে, আমি একটা বড় বইয়ের উপর আরাম করে শুয়ে, পাতা উল্টে উল্টে পড়ছি। হয়তো কোনো সাহসী বিড়ালের অভিযানের গল্প, নয়তো কোনো দুষ্টু ইঁদুরের দুঃসাহসিক কাজের কথা। কী মজাই না হতো!

আবার কখনও ভাবি, আমি যদি পড়তে পারতাম, তাহলে কি আমিও মানুষের মতো হয়ে যেতাম? হয়তো তখন আমিও সারাক্ষণ চিন্তায় মগ্ন থাকতাম, দুশ্চিন্তায় ঘুম হারাম হয়ে যেত। না, সেটা আমি চাই না। আমি তো বিড়াল, আমার জীবনটাই আমার কাছে স্বর্গ। 

তবুও, বই পড়তে পারার স্বপ্নটা মাঝে মাঝেই আমার মনে উঁকি দেয়। হয়তো আমার মানুষ দুটো যদি আমাকে শেখাতো, তাহলে আমিও ওদের মতো বইয়ের জগতে হারিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু না, ওদের তো নিজেদের বই পড়তেই সময় কুলোয় না। তাই আমি শুধু স্বপ্নই দেখি, একদিন হয়তো আমিও বইয়ের পাতায় হারিয়ে যাব।

আর যদি সেটা না-ও হয়, তাতে কি? আমার তো আছে আমার নিজস্ব জগৎ, নিজস্ব দর্শন। আর সেটাই আমার কাছে যথেষ্ট।