তৃতীয় পরিচ্ছেদ

১১ জুন ২০২৪

Naoroz Bipul

এমনিতেই প্লাস্টিকের পুতুলের মতো ফুটফুটে সুন্দরী, উদ্ভিন্নযৌবনা দেহসৌষ্ঠবের অধিকারিণী একটা মেয়ে জুওয়াইরিয়া। এক্সট্রা কোনো সাজগোজের প্রয়োজন হয় না ওর। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে সাজুগুজু তেমন কিছু করলোও না সে। লিপইষ্টিক সে খুব পছন্দ করে। ড্রেসের সাথে ম্যাচ করে, কমলার কোয়ার মতো ঠোঁটে গাঢ় করে লিপইষ্টিকের প্রলেপ লাগিয়ে নিলো জুওয়াইরিয়া। ওকে বের হতে দেখে এক দৌড়ে চলে আসলো ফরিদুল্লাহ্। গাড়ির দরজা খুললো। 
গাড়িতে উঠতে গিয়েও কী মনে করে আর উঠলো না জুওয়াইরিয়া। ফরিদুল্লাহ্’র দিকে তাকালো। বলল, ‘ফরিদুল্লাহ্, তুমি তো এখনও বিয়ে করোনি, তাই না?’
ম্যাডামের হঠাৎ এমন একটা প্রশ্ন শুনে ভ্যাপাচ্যাকা খেয়ে গেলো ফরিদুল্লাহ্। গত কয়েক বছর যাবৎ জুওয়াইরিয়ার ড্রাইভার হিসেবে চাকুরী করছে সে। এমন প্রশ্নের সম্মুখীন কখনো হয়নি। প্রশ্নের জবাবে এখন সে কী বলবে তা ঠিক বুঝতে পারলো না। কয়েক মুহুর্ত পর বলল, ‘না মাইনে ম্যাডাম, আমার আম্মায় আমারে বিয়া দিতেই চাইতাছে। কিন্তুক আমি অহনই বিয়া করমু না কইছি।’
‘গার্লফ্রেন্ড আছে?’
অল্প বয়সী একটা ছেলে ফরিদুল্লাহ্। ড্রাইভার হিসেবে খুবই দক্ষ। জুওয়াইরিয়া ওর সব সুবিধা অসুবিধার দিকে লক্ষ্য রাখে। ওর প্রশ্ন শুনে এবার ফরিদুল্লাহ্’র চেহারায় কিছুটা লজ্জা লজ্জা ভাব ফুটে উঠলো। জুওয়াইরিয়া বলল, ‘আরেহ্ ফরিদুল্লাহ্, লজ্জা পেয়ো না। বড়বোন মনে করে আমাকে বলো। আছে গার্লফ্রেন্ড?’
‘একডা মাইয়ারে আমার ভালো লাগে, ম্যাডাম।’ বলল ফরিদুল্লাহ্, ‘তয় ড্রাইভারের চাকুরী করি বইলা, হেয় আমারে পাত্তা দেয় না।’
হ্যান্ডব্যাগ থেকে এক হাজার টাকার পাঁচটা নোট বের করলো জুওয়াইরিয়া। ফরিদুল্লাহ্কে দিলো। বলল, ‘সুন্দর একটা গিফট কিনে নিয়ে গিয়ে মেয়েটাকে প্রপোজ করো। দেখো, সে রাজি হয়ে যাবে। যদি না হয়, তাহলে সরাসরি এসে আমাকে বলবে। তুলে নিয়ে এসে তোমার সাথে ওর বিয়ে দিয়ে দিবো। যাও।’
কয়েক মুহুর্ত হতভম্ব হয়ে জুওয়াইরিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলো ফরিদুল্লাহ্। হঠাৎ আজ ম্যাডামের কী হলো, সেটাই সে বুঝতে পারলো না। ম্যাডাম কোথাও বের হচ্ছে। ফরিদুল্লাহ্কে সাথে নিচ্ছে না। ইদানীং প্রায় প্রায় ওকে সাথে নেয়ও না। সেই দিনের সেই ছেলেটাকে ডেকে নিয়ে ওর সাথে কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়ায়। তাতে অবশ্য ভালোই হয় ফরিদুল্লাহ্’র। সে ছুটি পায়। নিজের ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াতে পারে। ড্রাইভাররা এমনিতেই একেকটা মহা ফাঁকিবাজ। ফরিদুল্লাহ্ অবশ্য এই ম্যাডামের কাজে কখনো ফাঁকি দেয় না। আজ আবার একবার ছুটি পেয়ে চলে গেলো ফরিদুল্লাহ্।
জুওয়াইরিয়াকে আসতে দেখে গেট খুলে দিলো সিকিউরিটি গার্ড। বাহিরে বের হয়ে দাঁড়ালো জুওয়াইরিয়া। মোবাইল ফোন হাতেই ছিল। মুমিতের নম্বরে কল করলো। প্রথম তিনবারের কল রিসিভ করলো না মুমিত। চতুর্থ বার কল করার আগে মুমিতের কল ব্যাক আসলো। কল রিসিভ করলো জুওয়াইরিয়া। বলল, ‘কল রিসিভ করছো না যে, খুব ব্যস্ত?’
‘ব্যস্ত না। রাইডিংয়ে ছিলাম।’ বলল মুমিত, ‘একজন যাত্রী নামিয়ে তোমার কল ব্যাক করেছি।’
‘ঠিক আছে, সমস্যা না। চলে আসো।’
‘কোথায়?’
‘আমার বাসার সামনে। গেটে দাঁড়িয়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি আমি।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘আজ সারাদিন তুমি আর তোমার বাইক আমার।’
‘যেখানে আছি, এখান থেকে যেতে প্রায় এক দেড় ঘন্টা সময় লাগবে।’ বলল মুমিত, ‘গেটে দাঁড়িয়ে না থেকে, ভেতরে গিয়ে অপেক্ষা করো। আমি এসে তোমাকে ডেকে নেবো।’
কথা আর না বাড়িয়ে কল কেটে দিলো জুওয়াইরিয়া। দেড় ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার কিছু আগে মুমিতের কল পেলো সে। জুওয়াইরিয়াকে তখনও গেটেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো মুমিত। আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘তুমি কি তখন থেকে এখানেই দাঁড়িয়ে ছিলে?’
‘না, ভেতরে গিয়েছিলাম।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ’আনুমানিক একটা সময় হিসেব করে নিয়ে আবার ফিরে এসে দাঁড়িয়েছি।’
মুমিতের বাড়ানো হেলমেট নিলো জুওয়াইরিয়া। পরলো। আজ জিন্স টপস পরে বের হয়েছে সে। বাইকে উঠে দুই পাশে পা রেখে বসলো। সে কোথায় যাবে জেনে না নিয়েই বাইক ছেড়ে দিলো মুমিত। কোথায় যাবে তা আগে থেকে জানায় না জুওয়াইরিয়া। যেতে যেতে হঠাৎ করে সে তার সিদ্ধান্ত জানায়। আজ সে নিজেদের একটা রেস্ট হাউজে যাবে বলে জানালো। মুমিতকে নিয়ে নিজের রেস্ট হাউজে যাওয়াতে, জুওয়াইরিয়ার কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে- তা মুমিতের বোধগম্য হলো না। এই মুহুর্তে বোধগম্য হতেও চাইলো না। জুওয়াইরিয়াকে সে একজন যাত্রী ছাড়া কিছুই মনে করে না। ওকে নিয়ে জুওয়াইরিয়া যেখানে যাবে, সেখানেই যেতে হবে। 
জুওয়াইরিয়ার বলে দেয়া লোকেশন অনুযায়ী, হাইওয়ে থেকে বাম দিকে যাওয়া একটা সরু রাস্তায় বাইক ঘুরিয়ে নিলো মুমিত। রাস্তাটা ধরে আরও প্রায় পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটারের মতো চলে আসতে হলো। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি গাছ। রাস্তার পরিবেশ খুব ভালো লেগেছে মুমিতের। একটা অজপাড়াগাঁয়ে ওকে নিয়ে এসেছে জুওয়াইরিয়া। ওর রেস্ট হাউজের গেটে দাঁড়িয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলো মুমিত। অসাধারণ দৃষ্টিনন্দন আর বিলাসবহুল একটা রেস্ট হাউজ। বড়লোকেরা অজপাড়াগাঁয়ে এমন সুন্দর রেস্ট হাউজ তৈরি করে আনন্দ ফুর্তি করার জন্য। জুওয়াইরিয়ার বড় দুই ভাই এমন রেস্ট হাউজে মেয়ে নিয়ে এসে, আনন্দ ফুর্তি করে গেলে তা আশ্চর্যের কিছু নয়। জুওয়াইরিয়াও কি ভাইদের মতো আনন্দ ফুর্তি করতে মুমিতকে নিয়ে এসেছে কি না, কে জানে!
মুমিতকে নিয়ে রেস্ট হাউজের দুই তলার একটা ঘরে চলে আসলো জুওয়াইরিয়া। বলল, ‘এই রেস্ট হাউজটা আমার। আব্বু এটা তৈরি করে আমার ঊণিশতম জন্মদিনে আমাকে গিফট দিয়েছে। ফ্রেন্ডরা সবাই প্রায় প্রায় এখানে এসে আনন্দ হৈ-হুল্লোড় করি।’
মুমিত প্রতিক্রিয়ায় বলল, ‘অসাধারণ সুন্দর তোমার এই বাড়িটা। তোমার মতোই সুন্দর! আগামী জন্মদিন কততম হবে?’
‘ফাজিল একটা! মেয়েদের বয়স এভাবে জানতে চাইতে হয় না!’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘একটু বসো। দেখে আসি, আমাদের খাওয়া-দাওয়ার কী ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
মুমিতকে বসিয়ে রেখে বের হয়ে গেলো জুওয়াইরিয়া। না চাইলেও কিছুটা উদ্বিগ্ন হতেই হলো মুমিতকে। ওকে জুওয়াইরিয়া কেন এখানে নিয়ে আসলো তা সে এখনও বুঝতে পারছে না। এখান থেকে কখন যে বের হতে পারবে তার কোনও ধারণা নাই ওর। সুন্দরী নারীর সাথে এসে এভাবে বসে থাকলে তো ওর দিন চলবে এ। পড়ালেখা সম্পন্ন করে এখনও কোনো চাকুরীতে ঢুকতে পারেনি সে। একটা চাকুরী পেতে যে প্রচুর টাকা দরকার তা ওর, কিংবা ওর বাপের কারোই নাই। মুদি দোকানদার বাপকে বুঝিয়ে শুনিয়ে একটা বাইক কিনে নিতে পেরেছে মুমিত। বাইকটা ভাড়ায় চালিয়ে পর্যাপ্ত টাকা ইনকাম করে সে। নিজের হাত খরচের জন্য কিছু টাকা রেখে, পুরো টাকাটা সে বাপের হাতে তুলে দেয়। ওর বাবা সেই টাকা নিজের মুদি দোকানের ব্যবসাতে ইনভেস্ট করেন। 
এমন পরিস্থিতিতে জুওয়াইরিয়ার সাথে এসে ফুর্তিতে মেতে থাকলে কীভাবে চলবে মুমিতের? অবশ্য জুওয়াইরিয়া পর্যাপ্ত টাকা দিয়ে দেয় ওকে। সে কখনও ওর কাছ থেকে টাকা চায় না। জুওয়াইরিয়াও সরাসরি ওর হাতে টাকা দেয় না। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মুমিতের ভাড়া পেমেন্ট করে দেয়। দেখা যায়, মুমিতের রেটের চেয়েও বেশি টাকা দিয়েছে জুওয়াইরিয়া। সে ফিরে আসলো। ওর সাথে মধ্যবয়সী এক ভদ্রমহিলাও আসলো।
ভদ্রমহিলা খুব সম্ভব জুওয়াইরিয়ার রেস্ট হাউজে কাজ করে। মুমিতকে আপ্যায়নের জন্য ভদ্রমহিলা বিভিন্ন ধরনের নাস্তার ব্যবস্থা করে নিয়ে এসেছে। জুওয়াইরিয়ার ইঙ্গিত পেয়ে টি-টেবিলের উপর সবকিছু রেখে গেলো ভদ্রমহিলা। জুওয়াইরিয়া বলল, ‘আপাতত হালকা নাস্তা করে নিই, আমরা লান্স করে এখান থেকে বিকেলে বের হবো।’
বের হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট একটা সময়সীমা জানতে পারলো মুমিত। আপাতত খেয়ে নেয়া যেতে পারে। খাওয়া শেষে চা’য়ের কাপটা টেনে নিলো মুমিত। চা খাওয়া শেষ হলে, সেই মহিলাকে আবার ডাকলো জুওয়াইরিয়া। মহিলা এসে অন্যান্য জিনিসপত্র সব নিয়ে গেলো। জুওয়াইরিয়া উঠে গিয়ে ভেতর থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে, ফিরে আসলো। মুমিত কিছুই বলল না। দরজার দিকে একবার তাকালো। দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে তাকালো জুওয়াইরিয়ার দিকে। জুওয়াইরিয়া এগিয়ে আসতে আসতে বলল, ‘আচ্ছা মুমিত, তোমার যদি লেটেস্ট ব্র‍্যান্ডের একটা গাড়ি আর গাড়িতে তোমার পাশের সিটে নারী হিসেবে থাকি আমি- তাহলে তোমার অনুভূতিটা ঠিক কী হবে?’
নিঃশব্দে হাসলো মুমিত। বলল, ‘লোভ নাকি স্বপ্ন- কোনটা দেখাচ্ছো?’
‘কোনোটায় না।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘নিজেকে আমি তোমার জন্য প্রোভাইড করছি।’
‘কী ভাষা ব্যবহার করো এইসব?’ বলল মুমিত, ‘নিজেকে আমার জন্য প্রোভাইড করছো মানে কি, তুমি কি প্রোডাক্ট নাকি কোনো সার্ভিস?’
‘তোমার জন্য, আর তোমাকে পাওয়ার জন্য- নিজেকে আমি প্রোডাক্ট সার্ভিস সবকিছু ভাবতে রাজি আছি।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘আমাকে এক্সেপ্ট করো। তোমাকে নিয়ে আমি আমার আব্বুর সামনে যাবো। তুমি কল্পনাও করতে পারবে না, তোমার আমার বিয়েতে কী ধরনের গ্র‍্যান্ড পার্টি হবে!’
‘কী আশ্চর্য! তুমি একেবারে বিয়েতে চলে গেছো?’
‘হ্যাঁ, এতে আশ্চর্য হওয়ার কী আছে?’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘তোমার প্রেমে পড়েছি আমি, তোমাকে ভালোবেসেছি। অন্য আর দশটা বাঙ্গালী নারীর মতো আমিও মনে করি- বিয়ের মধ্যে দিয়েই প্রেমের পূর্ণতা আসে। সুতরাং তোমাকে আমার লাগবে।’
‘তোমাকে আমার প্রত্যাখ্যান করতে হচ্ছে, জুওয়াইরিয়া।’
‘কেন?’
‘আমার গার্লফ্রেন্ড আছে।’
মোবাইল ফোন টি-টেবিলের উপর রেখেছিলজুওয়াইরিয়া। হাতে তুলে নিলো মোবাইল ফোন। কিছু একটা বের করলো। মুমিতের সামনে ধরলো। বলল, ‘এইটা না তোমার গার্লফ্রেন্ড?’
মোবাইল ফোনের ডিসপ্লের দিকে তাকালো মুমিত। ভ্রু কুঁচকালো। কী সর্বনাশ! জুওয়াইরিয়ার ফোনে আয়িশার ছবি! আয়িশার ছবি যখন জুওয়াইরিয়া নিজের ফোনে নিয়ে আসতে পেরেছে, তখন ওর সম্পর্কে সবকিছুই জানে জুওয়াইরিয়া। মুমিত এখন কী করবে? আয়িশা কি এই মুহুর্তে জীবন সংশয় আছে? মুমিতের প্রতি প্রেমান্ধ হয়ে আয়িশার যেকোনো ক্ষতি করে দিতে পারে জুওয়াইরিয়া। কিছু না বলে মুমিতকে চুপচাপ থাকতে দেখলো সে। বলল, ‘এইটা একটা মেয়ে হলো, মুমিত?’
‘মেয়ে নয়তো কি, তোমার কাছে ওকে পুরুষ লোক মনে হচ্ছে?’
‘না, মেয়েই মনে হচ্ছে। মুমিত, তুমি হচ্ছো হিরো- এই মেয়ে তোমার জন্য পারফেক্ট না।’ বলল জুওয়াইরিয়া, ‘তোমার জন্য আমি- আমার মতো একজন নারী তোমার জন্য পারফেক্ট!’
‘কিন্তু জুওয়াইরিয়া, আমি আয়িশাকেই ভালোবাসি।’ বলল মুমিত, ‘আমাকে যেমন তোমার ভালো লেগেছে, তেমনই আমার নিজেরও তো ভালোলাগার কেউ থাকতে পারে। সেই ভালোলাগা যে তুমিই হবে, সেটার কি কোনো বাধ্যবাধকতা আছে?’
‘কেন আমাকে তোমার ভালো লাগবে না?’ বলল জুওয়াইরিয়া। বলার পর যা করলো সেটার জন্য মুমিত প্রস্তুত ছিল না। মুমিতকে বাকহত করে দিয়ে নিজের পরনের টপসটা খুলে ফেললো জুওয়াইরিয়া। শুধুমাত্র ব্রা পরিহিত নিজের শরীর দেখিয়ে, সে বলল, ‘লুক এ্যাট মি, মুমিত। আমি সুন্দরী, আমার উদ্ভিন্নযৌবনা দেহসৌষ্ঠব, বড়লোক বাপের একমাত্র মেয়ে- একজন পুরুষ হিসেবে এরচেয়ে বেশি আর কী লাগবে তোমার? এই মুহুর্তে এনজয় করতে চাও আমাকে? এসো, তুমি যা চাও তা-ই হবে…’ 
জুওয়াইরিয়াকে টপস খুলতে দেখে চট করে দাঁড়িয়ে পড়েছিল মুমিত। জুওয়াইরিয়া এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো। মুমিতের জন্য নিঃসন্দেহে লোভনীয় প্রস্তাব, লোভনীয় মুহুর্ত। ইচ্ছে করলেই সে এই মুহুর্তের সুযোগটা নিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো পুরুষই নিজেকে সংবরণ করতে পারবে না। কিন্তু নিজেকে মুমিতের সংবরণ করতে হলো। অত্যন্ত ধুরন্ধর মেয়ে জুওয়াইরিয়া। ওর এই মুহুর্তটা মুমিতের জন্য একটা ফাঁদ। সম্পর্ক গড়ার ইচ্ছে থাকলে অনেক আগেই তা করতে পারতো মুমিত। সে কোনো রকম সম্পর্কে যেতে চায় না বুঝতে পেরেই, ফাঁদ পেতেছে জুওয়াইরিয়া। কোথাও বেড়াতে গিয়ে, কিংবা কোনো পার্কে গিয়ে গল্প করতে করতেও তো মুমিতকে প্রপোজ করতে পারতো সে। কিন্তু প্রপোজ করতে সে নিজের রেস্ট হাউজে নিয়ে এসেছে মুমিতকে নিঃসন্দেহে উদ্দেশ্য খারাপ। ওর এই ফাঁদে পা দেবে না মুমিত। পরবর্তীতে ওর জীবনকেই দূর্বিষহ করে তুলবে জুওয়াইরিয়া। সে ধনাঢ্য বাপের একমাত্র মেয়ে, মুমিত ফুটপাতের কীটপতঙ্গ। পরবর্তীতে ওর সাথে পেরে উঠা মুমিতের পক্ষে সম্ভব নয়।
ওর বাহু বন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়ালো মুমিত। জুওয়াইরিয়ার বাহু ধরে ওকে পেছন দিকে সরিয়ে নিয়ে গেলো। দাঁড় করিয়ে দিয়ে নিজে আবার পেছন দিকে সরে আসলো। বলল, ‘তুমি অনেক সুন্দরী, জুওয়াইরিয়া। সত্যিকার অর্থে সবদিক দিয়ে যেকোনো পুরুষের কাছে তুমি লোভনীয় অপশন।’ বলল মুমিত, ‘কিন্তু আমি ভালোবাসি আয়িশাকে। আমার জীবনে মেয়েটার একটা অবদান আছে- ওর সাথে প্রতারণা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি চলে যাচ্ছি। তুমি কি যাবে?’
জবাবে জুওয়াইরিয়া কিছু বলল না। ওকে চুপচাপ থাকতে দেখে, ওর পাশ কেটে দরজার দিকে এগুলো মুমিত। পেছন থেকে জুওয়াইরিয়া বলল, ‘আমাকে ছেড়ে চলে যেওনা, মুমিত।’
জুওয়াইরিয়ার কথা মুমিত কানেই তুললো না। সে দরজা খুললো। বের হয়ে বাহিরে থেকে দরজা টেনে দিলো। যেখানে ছিল সেখানেই কয়েক মুহুর্ত দাঁড়িয়ে থাকলো জুওয়াইরিয়া। এক পা দুই পা করে সামনে এগিয়ে এসে সোফায় বসলো। হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলো। কিছুক্ষণ কিছু একটা ভাবলো। চোখ খুলে এক সময় সোজা হয়ে বসলো। মোবাইল ফোনটা হাতে নিলো। হোয়াটসএপ মেসেঞ্জার ওপেন করলো। দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে দ্রুত টাইপ করলো- মুমিত আমাকে প্রত্যাখ্যান করে চলে গেছে। সে পৌঁছানোর আগেই আয়িশাকে তুলে নিয়ে আসো