সহযাত্রীনী | থ্রিলার ফিকশন | পঞ্চম পর্ব
June 24, 2024
Naoroz Bipul
পঞ্চম পর্ব
মাথার উপরে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ নিয়ে কোনো কাজেই মনযোগ দিতে পারছে না হাসীব। অফিসে নিয়মিত আসছে সে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। নিজের অফিস হওয়ায় ওকে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না। বন্ধু ঈশান সবকিছু সামলিয়ে নিচ্ছে। নিজের চেম্বার থেকে বের হয়ে হাসীবের চেম্বারে আসলো ঈশান। রিভলভিং চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে হাসীব।
ডেস্কের সামনের চেয়ার টেনে সেটাতে বসলো ঈশান। টেবিলে ঠকঠক শব্দ করে বন্ধুর ধ্যানভঙ্গ করলো। সোজা হয়ে বসলো হাসীব। ঈশান বলল, ‘কোনো উপায় বের করতে পারলি?’
‘এখনো পারিনি।’
‘আমার মাথায় একটা আইডিয়া এসেছে।’
‘বল।’
‘যে সেলফির জন্য গ্যাঁড়াকলে পড়েছিস, সেই ছবিই হবে গ্যাঁড়াকল থেকে বের হওয়ার ফার্স্ট স্টেপ।’
‘আরেকটু বিস্তারিত বল।’
‘ভেবে দেখ, সবার আগে আমাদেরকে জানতে হবে তোর অলিখিত বউয়ের পরিচয়।’ বলল ঈশান, ‘পরিচয় বের করার জন্য সেলফিটা ফেসবুকে পোস্ট করা যেতে পারে।’
‘অসাধারণ আইডিয়া বের করেছিস তো বন্ধু, এই এ্যাঙ্গেলটা আমি চিন্তাই করিনি।’
‘আমার বন্ধু হওয়ার কারণেই এতদিনে তোর মাথা খুলেছে।’ বলল ঈশান, ‘ছবিতে এমন একটা ক্যাপশন দিতে হবে- মেয়েটা যে মারা গেছে সেটা যেন কেউ বুঝতে না পারে। তুই পোস্ট কর। আমি শেয়ার করি। প্রয়োজনে পোস্ট বুস্ট করে দিবো আমরা। কেউ না কেউ মেয়েটাকে চিনবেই, এবং রেসপন্স করবেই।’
ডেস্কের উপর রাখা মোবাইল ফোন হাতে নিলো হাসীব। জামিন পাওয়ার পর মোবাইল ফোন ওকে ফেরৎ দেয়া হয়েছে। ফোন থেকে কোনো তথ্যই মুছে ফেলা হয়নি। ফটো এ্যালবাম থেকে সেলফিটা ফেসবুকে এ্যাটাচ করলো হাসীব। সাথে ক্যাপশনে লিখলো- অপরূপা সুন্দরী এই মেয়েটা আমার হৃদপিণ্ড ফালাফালা করে দিয়ে কোথাও হারিয়ে গেছে। খুবই অল্প সময়ের জন্য পরিচয় ছিল তার সাথে। নাম পরিচয় ঠিকানা কিছুই জেনে নেয়ার সুযোগ হয়নি। কিন্তু মেয়েটা আমার হৃদয়পটে ছবি হয়ে বসে আছে। ফ্রেন্ডস, তোমরা কেউ মেয়েটাকে চিনলে প্লিজ- তাকে খুঁজে পেতে আমায় হেল্প করো।
পোস্ট করার আগে ঈশানকে দেখালো হাসীব। ক্যাপশন পড়ে এ্যাপ্রুভ করলো ঈশান। হাসীব পোস্ট করলো। কয়েক মুহুর্তের মধ্যে হাসীবের পোস্টে হাহা রিএ্যাক্টের জলোচ্ছ্বাস আসতে লাগলো। ফ্রেন্ড ফলোয়ার সবাই পোস্টটাকে ফান পোস্ট হিসেবে নিয়েছে। অনেকে অনেক ফান কমেন্ট করতে লাগলো। ঈশানের শেয়ারিং পোস্টকেও সবাই একইভাবে নিলো। কেউ তো মেয়েটার সম্পর্কে কোনো তথ্য দিলোই না, বরং পোস্টটা থেকে মজা নিতে থাকলো।
পোস্ট করার পর প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলো। চতুর্থ দিন বিকালে- হাসীবের মেসেঞ্জারে ছোট্ট একটা টেক্সট আসলো। যে প্রোফাইল থেকে টেক্সট করা হয়েছে সেই প্রোফাইলের নামটাও অদ্ভুত- মনোহরিণী রাজকন্যা। দুই শব্দের ছোট্ট টেক্সট- আমি জানি।
প্রোফাইল নাম দেখে প্রতিক্রিয়ায় ঈশান বলল, ‘কী অদ্ভুত নাম রে ভাই!’
‘বোঝা যাচ্ছে এটা একটা ফেইক আইডি।’ বলল হাসীব, ‘কেউ হয়তো আমাদের সাথে শয়তানি করার চেষ্টা করছে। প্রোফাইলটা লকড। কোনো তথ্য জানার উপায় নাই।’
‘তারপরেও আমরা এই প্রোফাইলকেই টার্গেট করবো।’ বলল ঈশান, ‘টেক্সট ব্যাক কর।’
টেক্সট ব্যাক করলো হাসীব। লিখলো- কী জানেন?
‘আপনি যা জানতে চান।’
‘আপনি কি আমার পোস্ট দেখে টেক্সট করেছেন?’
‘জি।’
‘আপনার সত্যিকারের পরিচয় কি- প্রোফাইলের এমন অদ্ভুত নাম কেন?’
‘আমার পরিচয় আপনার বেশি দরকার নাকি যার খোঁজ করছেন তার পরিচয় বেশি দরকার?’
‘আপাতত তার পরিচয়টায় বেশি দরকার।’
‘তাহলে সেই দিকেই ফোকাসটা রাখুন।’
‘মেয়েটা এখন কোথায় আছে?’
‘তা বলতে পারবো না- তার খোঁজ পাওয়ার একটা সোর্স বলতে পারি।’
‘সোর্স বলার বিনিময়ে কী চান আপনি?’
‘কিছু না। একেবারেই ফ্রি সার্ভিস দেবো।’
‘ঠিক আছে বলেন আপনার সোর্স।’
‘কী কী জানা দরকার তা প্রশ্ন করুন।’
‘মেয়েটার নাম কি?’
‘আলিয়া রায়হানা।’
সামনে বসে থাকা বন্ধুর দিকে তাকালো হাসীব। বলল, ‘মেয়েটার নাম জানা গেছে- আলিয়া রায়হানা। লেখ।’
মোবাইল ফোনের নোটপ্যাডে নামটা লিখে রাখলো ঈশান। পুনরায় মেসেঞ্জারে দৃষ্টি ফেরালো হাসীব। আবার লিখলো- আলিয়ার ঠিকানা বলেন।
‘ঠিকানা জানি না, যে অফিসে জব করে সেটা বলতে পারি।’
‘বলেন।’
‘ক্রিস্টাল আই গ্রুপের কর্পোরেট অফিস। আপনার আর কোনো প্রশ্নের জবাব আমি দেবো না। ফ্রি ফ্রি অনেক সার্ভিস দিয়েছি- এবার বাই।’
মনোহরিণী রাজকন্যা সত্যি সত্যিই আর কোনো রিপ্লাই দিলো না। মোবাইল ফোন রেখে দিলো হাসীব। বলল, ‘ক্রিস্টল আই গ্রুপ আর আলিয়া রায়হানা- এছাড়া আর কোনো তথ্য পাওয়া সম্ভব হলো না।’
‘এই তথ্যেই অনেক তথ্য বের করা সম্ভব। চল যাই।’
‘এখন যাওয়া যাবে না।’ বলল হাসীব, ‘অফিস টাইম শেষ, সিকিউরিটি আর নাইট গার্ড ছাড়া অন্য কোনো পার্সোনেলকে অফিসে পাওয়া যাবে না। তাদের সাথে কথা বলতে গেলে আগে ভাগ অনেকে সতর্ক হয়ে যেতে পারে।’
‘কারো সাথে কথা বললাম না, অফিসটার লোকেশন দেখে আসি চল।’ বলল ইশান, ‘গুগলে সার্চ করে অফিসটার এ্যাড্রেস বের কর।’
গুগল সার্চ করে ঠিকানা জানতে গিয়ে, আরও অনেক তথ্য জানতে পারলো হাসীব। বর্তমানে কোম্পানির চেয়ারম্যান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দপ্তরবিহিন একজন মন্ত্রী।
–------------------------------------------------
বি: দ্র: গল্পটি সম্পূর্ণভাবে কল্পনা প্রসূত। বাস্তব কোনো ঘটনা, ব্যাক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের সাথে এই গল্পের কোনো সম্পর্ক নাই। কাউকে অসম্মান কিংবা হেয় প্রতিপন্ন করা এই গল্পের উদ্দেশ্য নয়। সবাইকে ধন্যবাদ।
–------------------------------------------------
মন্ত্রী মহোদয়ের নাতি ইয়াসিন যাহের বর্তমানে কোম্পানির সিইও। গুগল সার্চ থেকে পাওয়া লিংকে ক্লিক করে কোম্পানির ওয়েবসাইটে ঢুকলো হাসীব। সিইও ইয়াসিন যাহেরের ছবি দেখে হাসীব আর ঈশানের সমবয়সীই মনে হলো হাসীবের।
লোকেশন দেখতে এসে ক্রিস্টল আই গ্রুপের কর্পোরেট অফিসের বিপরীতে, গাড়ির ভেতরেই বসে থাকলো হাসীব আর ঈশান। অফিস ভবনের চারপাশে একবার চক্কর দিলো। পরের দিন সকাল সাড়ে এগারোটায় আবার আসলো ওরা। গাড়ি থামালো আগের জায়গাতেই। হাসীব বলল, ‘এখানেই আমরা গাড়ি পার্ক করে রেখে যাবো।’
গাড়ি থেকে নেমে হাসীব আর ঈশান রাস্তা পার হয়ে আসলো। অফিসের ভেতরে ঢুকতে গেলে সিকিউরিটি গার্ড ওদেরকে থামালো। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ওদের পুরো শরীর চেক করলো। ভিজিটর রেজিষ্টারে সই নিয়ে ভেতরে যেতে দিলো। ওরা রিসিপশনে এসে দেখলো ডেস্কের ওপাশে মেকাপে হয়ে উঠা অনিন্দ্য এক সুন্দরী বসে আছে। ওদেরকে দেখে অনিন্দ্য মেকাপ সুন্দরী বলল, ‘বলুন স্যার, কীভাবে আমি আপনাদেরকে সাহায্য করতে পারি?’
‘আলিয়া রায়হানা কোন ফ্লোরে অফিস করেন?’
‘থার্ড ফ্লোর। লিফটের টু।’
‘তিনি কি আজ অফিসে এসেছেন?’
‘বলতে পারবো না স্যার, ম্যাম অফিসে এসে এসে সরাসরি থার্ড ফ্লোরে চলে যান। আমার সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয় না বললেই চলে।’
‘ধন্যবাদ।’ বলে ঈশান হাসীব দুজনেই লিফটের দিকে এগুচ্ছিলো। পেছন থেকে ওদেরকে মেকাপ সুন্দরী ডাকলো, ‘এক্সকিউজ মি স্যার…’ ওরা থেমে ঘুরে দাঁড়ালে সে বলল, ‘অফিস টাইমে আমাদের এখানে কোনো পার্সোনেলের গেস্ট এ্যালাইড না স্যার। আপনাদের পরিচয়?’
‘আমি আলিয়ার কাজিন।’ বলল ঈশান। হাসীবকে দেখালো। বলল, ‘ও আমার বন্ধু- আলিয়ার হাজবেন্ড।’
‘হাজবেন্ড?’ আশ্চর্য হয়ে বলল মেকাপ সুন্দরী, ‘কিন্তু আমরা তো জানি আলিয়া ম্যাম এখনো আনম্যারেড!’
‘একচুয়েলি উড বি হাজবেন্ড।’ বলল ঈশান, ‘এখনো কাউকে জানানো হয়নি- দুই সপ্তাহ পরেই বিয়ে। সবাইকে দাওয়াত করা হবে। ওয়েডিং রিঙ আর নেকলেস বানাতে দিতে হবে, আলিয়ার কাছে তাই আমরা স্যাম্পল নিতে এসেছি।’
এবার হাসীবের দিকে তাকালো মেকাপ সুন্দরী। বলল, ‘কংগ্রাচুলেশনস স্যার, আপনারা গিয়ে ম্যামের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেন।’
অর্থাৎ আলিয়া রায়হানার কোনো খবর এখনো অফিসে আসেনি। কিংবা খবর অফিসে কাউকে জানানো হয়নি।
এই কর্পোরেট অফিসে সব জায়গাতেই সুন্দরীদের ছড়াছড়ি। থার্ড ফ্লোরে এসে আরেকজন সুন্দরী রিসিপশনিস্টের জেরার মুখোমুখি হতে হলো ওদেরকে। এখানেও একই ধরনের কথা বলতে হলো। সব শুনে এখানকার সুন্দরী বলল, ‘আলিয়া রায়হানা ম্যাম আমাদের এ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার। কয়েক দিন ধরে তাঁকে অফিসে আসতে দেখছি না। ছুটিতে আছেন কি না তা ম্যানেজিং ডিরেক্টর স্যার বলতে পারবেন।’
ম্যানেজিং ডিরেক্টর বর্তমানে অফিসে আছে জেনে, অনুমতি নিয়ে তার চেম্বারে আসলো হাসীব আর ঈশান। ম্যানেজিং ডিরেক্টর ওদের চেয়ে পাঁচ বছরের সিনিয়র একজন সুদর্শন যুবক। ডেস্কের উপরে ছোট্ট একটা ন্যামপ্লেটে দেখা গেলো তার নাম- তাহের আজিজ। অনুমতি পেয়ে তার সামনে বসলো ওরা। তাহের আজিজ বলল, ‘এ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া আমি কারো সাথে সাক্ষাৎ করি না। কিন্তু আলিয়ার কাছে এসেছেন বলে সাক্ষাৎ দিচ্ছি। আলিয়া তো দুই সপ্তাহের ছুটিতে আছে- আপনারা তা জানেন না?’
হাসীব আর ঈশান একে অপরের দিকে তাকালো। তাহের আজিজের দিকে ফিরলো হাসীব। বলল, ‘ছুটি কবে শেষ হবে?’
‘এক সপ্তাহ হয়ে গেছে। আগামী সপ্তাহেই জয়েন করবে সে।’ বলল তাহের আজিজ, ‘আমি নিজে তার ছুটি মঞ্জুর করেছি।’
‘আপনাদের অফিসে ছুটি মৌখিকভাবে হয় নাকি এমপ্লয়িদেরকে ছুটির জন্য এ্যাপ্লাই করতে হয়?’
‘অবশ্যই এ্যাপ্লাই করতে হয়। আমার ছুটি মঞ্জুর করেন সিইও স্যার।’ বলল তাহের আজিজ, ‘অন্য এমপ্লয়িদের ছুটি আমি মঞ্জুর করি।’
‘সিইও স্যারের চেম্বার কোন ফ্লোরে?’
‘টপ ফ্লোরে। স্যার শুধু কোম্পানির বোর্ড মিটিংয়ের দিন অফিসে আসেন।’
হাসীবের পায়ের পা দিয়ে চাপ দিলো ঈশান। অর্থাৎ শুরুতেই খুব বেশি গভীরে চলে যাচ্ছে হাসীব। ঈশান ওকে থামালো। বলল, ‘সিইও স্যারের ব্যাপারে জেনে আমরা কী করবো, তাই না? এমডি স্যার, আলিয়া আপুর ফোন নম্বরটা যদি দিতেন স্যার। আপুর সাথে জরুরী কথা বলা দরকার।’
‘আলিয়া আপনার কাজিন, আর ওর নম্বর আপনি জানেন না?’
‘অনেক বছর পর দেশের বাহিরে থেকে এসেছি তো স্যার, আপুর বর্তমান নম্বরটা নাই আমার কাছে।’
তাহের আজিজ ডেস্কের ড্রয়ার থেকে প্রিন্টেড একটা কাগজ বের করলো। আলিয়ার ছুটির আবেদনপত্র। হাত নিয়ে আবার ডেস্কের উপর রাখলো ঈশান। হাসীবের পায়ে আবার একবার চাপ দিলো। ইঙ্গিত বুঝে আবেদনপত্রে আলিয়ার ছুটি কালীন অবস্থানের ঠিকানা পড়ে নিলো হাসীব। নম্বর মোবাইল ফোনে তুলে নিয়ে কল করলো ঈশান। সুইচড অফ পেলো সে। বলল, ‘নম্বর তো বন্ধ পাচ্ছি স্যার, আর কোনো নম্বর আছে।’
‘গ্রামের বাড়ি গেছে। হয়তো নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে সুইচড অফ দেখাচ্ছে।’
‘হতে পারে স্যার। যখন সংযোগ পাবো তখন কথা বলে নেবো। আজ আমরা উঠি স্যার।’
ম্যানেজিং ডিরেক্টরের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওরা অফিস থেকে বের হলো। গাড়ির দিকে যেতে যেতে ঈশান বলল, ‘কোনো জায়গাতেই তো সুন্দরীরা তোর চোখ এড়ায় না। এমডির চেম্বারে যাওয়ার সময়, আর বের হয়ে আসার সময় একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছি।’
‘করেছি, নিজের ডেস্ক থেকে একজন সুন্দরী নারী খুবই সুকৌশলে আমাদেরকে অবজার্ভ করছিল।’ বলল হাসীব, ‘অর্থাৎ এই অফিসের ভেতরে কিছু না কিছু একটা আছে। সেই কিছুর জন্যই হয়তো আলিয়ার হত্যাকাণ্ড।’
‘অথবা হতে পারে এই মেয়েটায় আমাদের মনোহরিণী রাজকন্যা।’
‘সেটাও হতে পারে। তবে এখন তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠ- অফিসের সামনে পিবিআইয়ের গাড়ি এসেছে বলে মনে হচ্ছে।’
তাড়াতাড়ি করেই ওরা গাড়িতে উঠে বসলো। অফিসের দিকে তাকালো। পিবিআইয়ের একটা গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছে অফিসের সামনে। গাড়ি থেকে চার পাঁচ জন অফিসার নানলো। একজনকে দেখে মনে হলো সে টিমের সিনিয়র অফিসার। অফিসার অফিসে ঢোকার আগে বাহিরেই এদিক ওদিক তাকালো। তাকানো শেষে টিম নিয়ে ভেতরে চলে গেলো।
ঈশান বলল, ‘আমাদের মতো একই এ্যাঙ্গেল থেকে তদন্ত করছে পিবিআই- তা কি চিন্তা করেছিস?’
‘করেছি। এবং পিবিআইয়ের আগেই আমাদেরকে আলিয়ার গ্রামের বাড়িতে যেতে।’ বলল হাসীব, ‘গাড়ি ছোটা তাড়াতাড়ি।’
আলিয়া রায়হানার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়ি গাড়ি ছোটালো ঈশান। এদিকে পিবিআইয়ের অফিসারের কাছ থেকে আলিয়া রায়হানার হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে, স্তম্ভিত হয়ে গেলো ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাহের আজিজ। তাকে হাসীব আর আলিয়ার সেলফি দেখালে সে জানালো- এই ছেলেটায় কিছুক্ষণ আগে আলিয়ার ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসেছিল তার অফিসে।
কিছুটা কনফিউশনে পড়ে গেলো তদন্ত টিম লিডার। আলিয়া রায়হানাকে চেনে না বলে দাবি করেছে প্রধান সাসপেক্ট কারীমুদ্দিন হাসীব। তাহলে এই অফিসে সে কীভাবে আসলো? এই অফিসে যে আলিয়া রায়হানা জব করতো সেটা সে কীভাবে জানলো? ব্যাটাকে তো রিমান্ডে নিয়ে আসতে হবে বলে মনে হচ্ছে! (ষষ্ঠ পর্বে চলমান)।