সহযাত্রীনী | থ্রিলার ফিকশন | অষ্টম পর্ব

২৪ জুন ২০২৪

Naoroz Bipul

হাঁটতে হাঁটতে থামলো মিথিলা। অফিস থেকে বের হয়ে ফুটপাত দিয়ে হাঁটছিল সে। সামনের মোড় পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে সে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বাসায় চলে যায়। আজ অফিস থেকে বের হওয়ার ওর মনে হয়েছে, একটা গাড়ি ওকে ফলো করছে। নিশ্চিত হওয়ার জন্য সে দাঁড়ালো। হ্যান্ডব্যাগ থেকে মোবাইল ফোনটা বের করলো। সেলফি ক্যামেরা অন করে সামনে ধরলো। মোবাইল ফোন এদিক ওদিক ঘুরিয়ে দেখলো। হ্যাঁ, প্রায় একশো কিংবা দেড়শো গজ পেছনে গাড়িটা দাঁড়িয়ে পড়েছে। অথচ সে অফিস থেকে বের হওয়ার পর গাড়িটা ওর পিছু পিছুই আসছিল। মোবাইল ফোন সামনে ধরে রেখেই আবার হাঁটতে লাগলো মিথিলিা। গাড়িটাও চলতে শুরু করলো। নিশ্চিত হলো- গাড়িটা আসলে ওকেই ফলো করছে।
মোবাইল ফোন বন্ধ করে ব্যাগের মধ্যে রেখে দিলো মিথিলা। সামনের মোড়ে এসে দাঁড়ালো। কয়েক সেকেন্ড পরে ওর সামনে সেই গাড়িটাও এসে দাঁড়ালো। ড্রাইভারের পাশের সীটের জানালা খুলে গেলো। সেখানে এক সুদর্শন যুবককে দেখা দেখতে পোলো মিথিলা। নাম জানে না, তবে ছেলেটাকে সে আগেও একদিন দেখেছে।  মিথিলার অফিসে একদিন এসেছি। সাথে আরেকটা ছেলে ছিল। নিজ ডেস্কে বসে ছেলে দুটোকে দেখেছে। ওকে ওরা লক্ষ্য করেছে কি না তা অবশ্য জানে না মিথিলা। ওর উদ্দেশ্যে ছেলেটা বলল, ‘হ্যালো মিথিলা…’
চোখ থেকে স্টাইলিষ্ট গ্লাসটা খুললো মিথিলা। প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে যুবকের দিকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো, ‘স্যরি? আপনি আমাকে চিনেন?’
জবাবে যুবক বলল, ‘হ্যাঁ, চিনি।’
‘কীভাবে?’
‘আপনি আলিয়ার বান্ধবী কাম কলিগ- রাইট?’
‘হ্যাঁ, রাইট। আপনি?’
গাড়ি থেকে নেমে আসলো যুবক। বলল, ‘আমি হাসীব। আলিয়ার বয়ফ্রেন্ড।’
‘আলিয়ার বয়ফ্রেন্ড! ওর কোনো বয়ফ্রেন্ড ছিল বলে তো আমার জানা ছিল না।’
‘হাজবেন্ডের কথা নিশ্চয় শুনেছেন?’
‘হ্যাঁ শুনেছি। কথাটা এখন আর অফিসে গোপন নাই।’ বলল মিথিলা, ‘শুনেছি, ওর সেই হাজবেন্ডই নাকি ওকে মেরে ফেলেছে!’
‘আমিই সেই হাজবেন্ড।’ মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলে বলল হাসীব, ‘যেদিন আপনাদের অফিসে গেলাম সেইদিন আপনি, আমাকে আর আমার ফ্রেন্ডকে খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করছিলেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম- আপনি আলিয়ার বান্ধবী। আপনার সাথে তাই আমার একটু কথা বলা দরকার।’ গাড়ির পেছেনের দরজা খুললো হাসীব। বলল, ‘আসুন, উঠুন। যেতে যেতে কথা বলি।’
‘স্যারি, আমি আপনার সাথে যাবো না।’
‘ভয় পাচ্ছেন কেন মিথিলা?’ বলল হাসীব, ‘যেতে যেতে কথাবার্তা সেরে নেবো। শেষে আপনার বাসার সামনে আপনাকে ড্রপ করে দিবো।’
‘আপনাকে আমি চিনিনা জানি না, আপনার সাথে আমি যাবো না।’ বলল মিথিলা, ‘আমি সিএনজিতে করে চলে যেতে পারবো।’
‘চেনার আর জানার জন্যই আমার সাথে যেতে বলছি।’ বলল হাসীব, ‘লক্ষ্য করেছেন কি না জানি না- পিবিআইয়ের সোর্স আপনাকে ফলো করছে। আমি আপনার কোনো সমস্যা করলে, পিবিআইয়ের সোর্স এসে আপনাকে সেইভ করবে। সুতরাং আপনার ভয় পাওয়ার কিছুই নাই।’
আবারও চেহারায় একটা ভয় পাওয়ার ছাপ ফুটিয়ে তুললো মিথিলা। এদিক ওদিক তাকালো। ওকে ফলো করছে তেমন কেউ ওর চোখে পড়লো না। হাসীবের দিকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো, ‘পিবিআইয়ের সোর্স আমাকে কেন ফলো করবে?’
‘সেই কথা এএসপি আব্দুল গফুর বলতে পারবেন।’ বলল হাসীব, ‘তাঁর আগে আপনার সাথে আমার কথা বলা দরকার। প্লিজ আসুন।’
রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপরিচিত কোনো যুবক ছেলের সাথে এভাবে কথা বলা সত্যিই অশোভন দেখায়। মিথিলা আর কোনো কথা বলল না। হাসীবের খুলে ধরা দরজা দিয়ে গাড়ির ভেতর ঢুকে পড়লো। ভেতরের দিকের সিটে চেপে বসলো। পাশের সিটে উঠে বসলো হাসীব। ড্রাইভিং সিটে বসে আছে ঈশান। হাসীব ওকে বলল, ‘চল, বন্ধু।’
মিথিলার দিকে ঈশানও তাকালো একবার। মেয়েটা সত্যিই অনেক সুন্দরী। বন্ধুর কথা ভাবলো- এই ব্যাটা এই মেয়ের সাথেও সেলফি তোলে কি না কে জানে! তুলতে পারলে ভালোই হয়। মেয়েটার সাথে একটা সেলফি ওদের খুব দরকার। ঈশান গাড়ি চালাতে শুরু করলো।
মিথিলার দৃষ্টি আকর্ষণ করলো হাসীব। বলল, ‘মিথিলা, আপনি কি জানেন- বান্ধবীর চেয়েও আপনি বেশি সুন্দরী!’
আড়চোখে একবার হাসীবের দিকে তাকালো মিথিলা। সুন্দরী বললে কোনো মেয়ের যে ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়, মিথিলার মধ্যেও তেমন একটা ভাব ফুটে উঠতে দেখলো হাসীব। সামনের দিকের চুলগুলোর উপর হাত বুলালো মিথিলা। বলল, ‘অফিসে সবাই তেমনটায় বলে। আপনিও বললেন, ধন্যবাদ।’
‘তাহলে আমরা একটা সেলফি তুলে ফেলি, কী বলেন?’
মিথিলা দেখলো, মোবাইল ফোন বের করে ততক্ষণে ক্যামেরাও অন করেছে হাসীব। সেলফি তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাথে সাথে ওড়না টেনে নিজের চেহারা ঢাকলো মিথিলা। বলল, ‘এ্যাই এ্যাই এ্যাই! কী হচ্ছে এইটা? বন্ধ করেন, এক্ষুনি ক্যামেরা বন্ধ করেন!’
ক্যামেরা বন্ধ করলো হাসীব। মোবাইল ফোন যথাস্থানে করে দিলো। বলল, ‘পরিচিত অপরিচিত সবার সাথে সেলফি নেয়া আমার একটা হবি। তবে অনুমতি না পেলে নিই না। এখন বলেন, আপনার অফিসে গেলে আপনি আমাদেরকে ওভাবে কেন দেখছিলেন, আগে থেকে আপনি কি আমাদেরকে চিনতেন?’
‘প্রশ্নই আসে না।’ বলল মিথিলা, ‘প্রথমবার অফিসে দেখে ভেবেছিলাম, আপনারা আমার অফিসের নতুন ক্লায়েন্ট। অফিসে নতুন ক্লায়েন্ট আসলে সব সময় আলিয়া হ্যাণ্ডেল করে। ভেবেছিলাম, ওর অনুপস্থিতিতে আমি ক্লায়েন্ট হ্যাণ্ডেলের দায়িত্ব পাবো। সেই জন্যই অবজার্ভ করছিলাম।’
‘ওর অনুপস্থিতিতে?’ বলল হাসীব, ‘তারমানে আপনি আগে থেকেই জানতেন যে- আলিয়াকে তার হাজবেন্ড মেরে ফেলেছে?’
‘কী সব ননসেন্সের মতো কথা বলছেন, সেটা আমি আগে জানবো কী করে?’ কিছুটা ক্ষেপে গিয়ে বলল মিথিলা, ‘সে দুই সপ্তাহের ছুটিতে ছিল বলে, তার জায়গায় আমি কাজ করছিলাম। কিন্তু আপনি আপনার বউকে মেরে ফেললেন কেন?’
‘আমি আলিয়াকে মারিনি তো!’
‘কিছুক্ষণ আগেই না বললেন, আপনি আলিয়ার হাজবেন্ড ছিলেন?’
‘বলেছিলাম, কারণ আপনি যাতে আমার সাথে আসতে হোন।’ বলল হাসীব, ‘আসলে আমি আলিয়ার হাজবেন্ড না, আর আমি ওকে মেরেও ফেলিনি। ওকে তো আমি আগে থেকে চিনতামও না। আমি আসলে কারো ফাঁদে পড়েছি?’
‘আগে থেকে না চিনলে কেউ ওকে মেরে ফেলে, আপনাকে কেন ফাঁদে ফেলবে?’
‘সেটা জানলে তো আর আপনার সাথে কথা বলতে আসার প্রয়োজন হতো না আমার।’ বলল হাসীব, ‘আলিয়া আর আপনার বন্ধুত্ব কতদিনের ছিল?’
‘ইন্টারমিডিয়েট কলেজে পড়ার সময় থেকে।’ বলল মিথিলা, ‘কলেজ ইউনিভার্সিটি একসাথে পড়ালেখা করেছি। জবও নিয়েছিলাম আমরা একই অফিসে।’
‘কে আগে জব নিয়েছিলেন- আপনি নাকি আলিয়া?’
‘আমি আগে। তারপর আমার চেষ্টাতেই এই অফিসে ওর জব হয়েছিল।’
‘বাহ্, অনেক ভালো বন্ধুত্ব আপনার।’ বলল হাসীব, ‘শুনেছি, আলিয়া এ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিসার হিসেবে জব করছিল। আপনার অফিসে এই পোস্টটার গুরুত্ব কেমন?’
‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা পোস্ট।’ বলল মিথিলা, ‘পিওন থেকে শুরু করে সিইও পর্যন্ত- সবার সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হয়।’
‘আপনাদের সিইও স্যার কি নিয়মিত অফিস করেন?’
‘না, সিইও স্যার শুধু বোর্ড মিটিংয়ের দিন অফিসে আসেন।’
‘উনি নিয়মিত অফিস করেন না কেন?’
‘ক্রিস্টল আই গ্রুপ একটা মাল্টিন্যাশনাল বিজনেস অর্গানাইজেশন।’ বলল মিথিলা, ‘যে যে দেশে কোম্পানির বিজনেস আছে- সিইও স্যার সেইসব দেশে ঘুরে বেড়ান। কখন কোন দেশে যান, আমরা স্টাফরা তা জানি না।’
‘আলিয়া কি জানতো?’
‘এ্যাডমিন অফিসার হিসেবে তার জানা থাকার কথা। আমি ঠিক বলতে পারবো না।’
‘আপনার সিইও স্যার কি বিবাহিত?’
‘হ্যাঁ। সাড়ে চার বছর বয়সী একটা ছেলেও আছে তাঁর।’ বলল মিথিলা, ‘আচ্ছা, আপনি কীভাবে আলিয়ার মার্ডারের মধ্যে ফেঁসে গেলেন?’
কীভাবে ফেঁসে গেলো তা আবার একবার বিস্তারিত বর্ণনা করতে হলো হাসীবকে। সবকিছু শুনে মিথিলা বলল, ‘অতো অল্প সময়ের মধ্যে কাউকে মেরে ফেলা সম্ভব নাকি?’
‘সম্ভব বলেই তো মিথিলা আজ মৃত। খুবই সুদক্ষ কোনো প্রফেশনাল ছিল হয়তো!’
‘এক্সকিউজ মি, মিথিলা নয় নামটা আলিয়া হবে।’
‘ওহ্ স্যরি স্যরি, আসলে আপনার সৌন্দর্য্য আমার চোখে এতটায় লেগে গেছে যে- অন্য মেয়ের নামই আসতে চাইছে না!’
‘ইডিয়ট!’ এক মুহুর্তের জন্য হেসে, প্রায় নিঃশব্দে বলল মিথিলা, ‘আপনার গাড়ির সামনে বা পেছনে, আর কোনো গাড়ি আপনাদেরকে ফলো করছিল কি না তা লক্ষ্য করেননি?’
‘করিনি বলেই তো ফাঁদে আটকে পড়েছি। নিজেকে এখন নির্দোষ প্রমাণ করতে হচ্ছে।’ বলল হাসীব, ‘কপালে একটা ভোগান্তি ছিল বলেই হয়তো, ঐ সময় অতোটা চেপেছিল।’
‘আপনারা পুরুষেরা যেখানে সেখানে ওসব করে বেড়ান বলেই তো, কপালে ভোগান্তিও হয়।’
‘আমরা কিন্তু আপনার বাসার সামনে চলে এসেছি।’
‘আশ্চর্যের ব্যাপার তো!’ আশ্চর্য্য হয়েই বলল মিথিলা, ‘আপনারা আমার বাসাও চিনেন? একেবারে এ্যাপার্টমেন্টের সামনে এসে গাড়ি থামিয়েছেন!’
‘হ্যাঁ, এ্যাপার্টমেন্টের নাইনথ ফ্লোরে- লিফট থেকে বের হয়ে ডান পাশের দ্বিতীয় ফ্ল্যাটে থাকেন আপনি।’ বলল হাসীব, ‘গত দুইদিন ধরে আমরা আপনাকে ফলো করছিলাম। আজকে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। নেমে যাওয়ার আগে আরেকবার ভেবে দেখবেন?’
বাকহত হয়ে যাওয়ার মতো একটা ভাব নিয়ে দুই বন্ধুর দিকে একবার করে তাকালো মিথিলা। কয়েক মুহুর্ত পর, হাসীবের শেষ প্রশ্নের জবাবে সে বলল, ‘নেমে যাওয়ার আগে আরেকবার কী ভেবে দেখবো?’
‘আমার হবিটার ব্যাপারে!’
‘ইউ আর এন ইম্পসিবল পার্সন!’ বলল মিথিলা, ‘নেন!’
‘কী নিবো?’
‘আপনার হবি পূরণ করেন।’
এবার একেবারেই দেরি করলো না হাসীব। মোবাইল ফোন বের করলো। ক্যামেরা অন করে নিজেই মিথিলার দিকে কিছুটা চেপে বসে, পটাপট কয়েকটা সেলফি তুললো। ওদিকে মোবাইল ফোন বের করে শেয়ার ইট এ্যাপ ওপেন করলো মিথিলা। বলল, ‘শেয়ার ইট অন করেছি। সেলফিগুলো এবার পাঠিয়ে দেন।’
সেলফি আদান-প্রদান শেষ হলে, গাড়ি থেকে নেমে গেলো মিথিলা। ওকে নামার সুযোগ দিতে হাসীবকেও গাড়ি থেকে নামতে হলো। মিথিলা একবারও আর পেছনে না তাকিয়ে এ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে চলে গেলো।
বন্ধুর পাশের সিটে উঠে বসলো হাসীব। বলল, ‘কী অভদ্র মেয়েরে ভাই, বাসার কাছে নিয়ে এসেও এককাপ চা খেতেও যেতে বলল না!’
‘সে নিয়ে আসেনি।’ বলল ঈশান, ‘আমরা ওর সাথে এসেছি।’
‘কথাবার্তা শুনে কী বুঝলি?’
‘হাই লেভেলের ধুরন্ধর মাল।’ বলল ঈশান, ‘তুই ওর সাথে কথা বলতে এসেছিলি, কিন্তু উল্টো সে তোকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছে।’
ঈশানের দিকে জানালায় কেউ ঠকঠক শব্দ করলো। গ্লাস নামালো ঈশান। হাত বাড়ালো এক ভিখারিনী। বলল, ‘দে…’
ভিখারিনীকে ভ্রু-কুঁচকালো ঈশান। নিজেদের সম বয়সী মনে হলো মেয়েটাকে। বেশভূষা ভিখারিনীদের মতোই। মেয়েটার কোলে একটা বাচ্চা। ঈশান জানে, বাচ্চাটা মেয়েটার নয়। ভিক্ষা করার সুবিধার জন্য সে বাচ্চাটাকে ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। দশ টাকার একটা নোট বের করলো ঈশান। সেটা দেখে ভিখারিনী বলল, ‘মাত্র দশ টেকা! ঐ ব্যাডা, আমারে কি দশ টেকার ফকিন্নি পাইছোত? একশো টেকা দে, না হইলে তর চুল টাইন্না ছিঁড়া হালামু!’
কথা শেষ করে সত্যি সত্যিই ঈশানের মাথা লক্ষ্য করে হাত চালিয়ে দিয়েছে ভিখারিনী। ঈশান একেবারেই প্রস্তুত ছিল না। ওর চুল ভিখারিনী ঠিক মতোই ধরতে পেরেছে। ঈশান মাথা টেনে নিলো। চুলে টান লাগলো। দুই একটা চুল ছিঁড়ে ভিখারিনীর হাতে গেছে কি না কে জানে?
ঘটনার আকস্মিকতায় হাসীব অট্টহাসি দিলো। বলল, ‘এ তো ডেঞ্জারাস ভিখারিনী! ঝামেলা করিস না বন্ধু, দিয়ে দে।’
একশো টাকার একটা নোট বের করে ভিখারিনীকে দিলো ঈশান। হাসীব আবারও হেসে বলল, ‘চুল ছিঁড়ে নিয়ে ভিখারিনী তোকে জাদু টোনা না করলেই হয়!’
‘শালী তো বিশাল ডেঞ্জারাস! এখানে আর দেরি করা যাবে না। চল যাই।’
ওরা চলে গেলো কিন্তু এক বারের জন্য চিন্তাও করলো না যে- ভিখারিনী আসলে ভিখারিনী নয়। সে আসলে, পিবিআইয়ের এসআই জিহানের একজন মহিলা সোর্স। ভিখারিনী সেজে মিথিলার বাসার দিকে নজর রাখার দায়িত্ব আছে ওর উপর। হাসীব আর ঈশান নিজেদের গাড়িতে করে মিথিলাকে নামিয়ে দিতে এসেছে- তা সাথে সাথেই জিহানকে জানিয়েছে সে। যেকোনভাবে ওকে ঈশানের চুল করতে বলল জিহান। সেই চুল থেকে ঈশানের ডিএনএ টেস্ট করাবে পিবিআই এএসপি আব্দুল গফুর। নির্দেশমতে তাৎক্ষণিক বুদ্ধি খাটিয়ে ঈশানের চুল ছিঁড়ে নিয়েছে ভিখারিনী। (নবম পর্বে চলমান)।